মিষ্টি ও জিলাপির কাটুনে ২১০ গ্রাম বাড়তি ওজনের কারণে প্রতিদিনই কেনাকাটায় ঠকছেন ক্রেতারা। মিষ্টি ও জিলাপি কিনতে গেলে ভারী কাটুনের নিচে চাপা পড়ে যায় মিষ্টি ও জিলাপির আসল ওজন।
ঘটনা ঘটে কাটুনের প্রায় সব পণ্যে। বেশি দাম দিয়ে পণ্য ওজনে কম পেতে অনেকটা যেন অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন লোকজন। মাঝে মাঝে বাড়তি ওজনের প্যাকেট নিয়ে বিক্রেতার সঙ্গে ক্রেতার বচসা যে একেবারে হয় না, তা নয়। তবে প্রতিকার পাওয়া যায় না।
তবে এবারের ঘটনায় ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। এমন বাড়তি ওজনের প্যাকেট বা কাটুনের কারণে জরিমানা গুনতে হয়েছে ৪টি মিষ্টির দোকানকে। ওই দোকানগুলোতে মিষ্টি ও জিলাপি বিক্রির ক্ষেত্রে ভারী কাটুন ব্যবহার করা হয় এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ সহ কারচুপি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করেছেন।
অভিযানে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি এবং মিষ্টি ও জিলাপির কার্টুনে ২১০ গ্রাম বেশি থাকার অপরাধে জয় মা” মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের রাজেন্দ্র দেবনাথকে ৩ হাজার টাকা, জিলাপীতে হাইড্রোজেন ব্যবহার করায় বিবাড়ীয়া মিষ্টি ঘরের রাখাল চন্দ্র সরকারকে ৪ হাজার টাকা, মিষ্টি ও জিলাপিতে কেজিতে পরিমাণে কম রাখায় লক্ষী মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের সত্য দেবনাথকে ৩ হাজার টাকা, ওজনে কম ও জিলাপিতে হাইড্রোজেন ব্যবহার করায় শ্রী দুর্গা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের নিরেশ পালকে ৩ হাজার টাকা, আলু কেজিতে বেশি দামে বিক্রি করায় কাঁচা মাল ব্যবসায়ী সিবু পালকে ৫০০টাকা ও মূল্য তালিকা না থাকায় রাব্বি পোলট্রি মুরগি ব্যবসায়ীকে ২ হাজার টাকা এবং ওজন বাড়ানোর জন্য চিংড়ির শরীরে বিষাক্ত রাসায়নিক ও জেলি পুশ করার দায়ে মাছ ব্যবসায়ী আব্বাসকে ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আজ বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে চুনারুঘাট পৌরশহরের কাঁচা বাজার, উত্তর বাজার ও মধ্যে বাজার বিভিন্ন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে অভিযান পরিচালনা করে এসব জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হবিগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাট থানার সহকারী উপপরিদর্শক এএসআই মোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিদপ্তরের হবিগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা বলেন, মিষ্টির ক্রেতাদের সাথে দোকানগুলোতে মিষ্টি ও জিলাপির কাটুনে ২০১০ গ্রাম বেশি।
ওই কাটুনে মিষ্টি নেওয়ার অর্থ, এক কেজি মিষ্টি কিনে ক্রেতা পাবেন ৭৯০ গ্রাম। এছাড়াও জিলাপিতে বিষাক্ত ক্যামিকেল হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয় এমনকি পণ্যের সঠিক মূল্য তালিকা দোকানে প্রদর্শন না করা, এবং ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ দেখাতে না পারায় তাদের সতর্কতামূলক এ জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন ভোক্তা বিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে স্থানীয় উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর দেশের অর্থনীতির সাফল্য নির্ভরশীল। স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফলে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণ রোধে অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া না হলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা বলে মনে করছেন জনসাধারণ। তবে কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী হামিদ মিয়া বলেন, আমরা আড়ৎ থেকে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে জিনিসপত্র ক্রয় করি।
আড়ৎদার যদি কম না রাখে আমরা কিভাবে কমে বিক্রি করবো। মাছ বিক্রেতা সাহাব উদ্দিন বলেন, চিংড়িতে জেলি মেশানো আমার জানা নেই। এখন দেখতে পারছি। মিষ্টি দোকানদার সত্য দেবনাথ বলেন, আমরা কাটুন কিনে আনি আমাদের কিছু করার ছিলনা।