হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারের তালিকা করা হয়েছে জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে। শুধু তাই নয়, উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়কের নামও রয়েছে।
এই কাজে শিক্ষিত বেকারদের অর্ন্তভূক্ত না করে জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাদের মাধ্যমে অর্থনৈতিক শুমারির কাজ করার তালিকা করায় জনমনে শুরু হয়েছে নানামুখী আলোচনা।
সূত্র জানায়, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় অর্থনৈতিক শুমারির জন্য ৯ জন সুপারভাইজার, ২৯ জন তথ্যসংগ্রহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে।
তন্মধ্যে সুপারভাইজার হিসেবে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ এলআর মাসুক (মাসক ভান্ডারী), তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মামলার আসামী ও জনপ্রতিনিধি, ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোমেনা খাতুন, ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আজমান, নুরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সুহানুর রহমান, শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সন্তোষ পাল।
তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান তরফদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আররাব আহমেদ নাহুল, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক সাবাজ মিয়া।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ফজলুল করিম বলেন, অন্তবর্তীকালিন সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ ও তাদের সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হবে কি না সন্দেহ আছে।
পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফাহিন হোসেন বলেন, অর্থনৈতিক শুমারিতে মাঠ পর্যায়ে যাদেরকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে তারা অধিকাংশ পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী লোক।
তাদের দ্বারা এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সঠিক ভাবে হবে আশা করা যায় না। এই তালিকা বাতিল করে শিক্ষিত বেকার ছাত্র, যুবক-যুবতীকে সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাশ বলেন, এ তালিকা পূর্বের ইউএনও করে গেছেন।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সাবেক কর্মকর্তা নন্দিনী দেব বলেন, আমি বদলী হয়ে মৌলভীবাজারে রয়েছি।
এ তালিকার ব্যাপারে বর্তমান কর্মকর্তা বলতে পারবেন।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের পরিসংখ্যান তদন্তকারী মো. ছিদ্দিক আলী বলেন, শিক্ষিত বেকাররা তথ্য সংগ্রহকারী হিসেবে থাকার কথা।
এখানে জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীর থাকার কথা নয়। এ তালিকার ব্যাপারে উপজেলা অফিসের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সঠিকভাবে বলতে পারবেন।
জেলা পরিসংখ্য অফিসের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ বাদল মিয়া বলেন, আমি দুই মাস হয়েছিল যোগদান করেছি। তালিকাটি দেখার সুযোগ হয়নি। তবে ২০২২ সালে জনশুমারিতে যারা কাজ করেছে তাদেরকে অর্থনৈতিক শুমারীতে নিয়োগ করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো।