একজন ‘মানবিক ইউএনও’ হিসেবে পরিচিতি নিয়েই হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে রবিবার(১০-ডিসেম্বর) বিদায় নিলেন মনজুর আহসান। যোগদানের কিছু দিনের মধ্যেই নিজ গুণে সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। উপজেলাবাসী একজন সজ্জন, কর্মঠ, জনবান্ধব ও দক্ষ অফিসারকে হারিয়ে আজ বেদনাবিধুর।
গত ১২ মাস ১৪দিন মাধবপুর উপজেলার মানুষকে সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এ সময়ে তিনি সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে জনগণের সেবা দিয়েছেন। জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ওপর ছিল তার সজাগ দৃষ্টি।
তার প্রশাসনিক এলাকায় জনস্বার্থবিরোধী কোন ঘটনা তার নজরে এলে কালবিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক সরেজমিনে গিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে তা দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করেছেন। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যে মূলধর্ম কাজের মধ্যদিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করা, তা তিনি করতে সক্ষম হয়েছেন।
মাধবপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাসগুপ্ত বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিসমূহে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বা তরুণ শক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
মাধবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক জনকণ্ঠ প্রতিনিধি শংকর পাল চৌধুরী বলেন, উপজেলাবাসী একজন সজ্জন, জনবান্ধব ও মানবিক কর্মকর্তাকে হারালো।
দৈনিক দেশরুপান্তর প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন লস্কর বলেন, আমি সরকারি প্রোগ্রামগুলো কভারেজ করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি, উনি খুব স্থির ও ধৈর্যশীল মানুষ। মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। বিরক্ত, অবহেলা বা ব্যস্ততা দেখাতেন না কাউকে।
মাধবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি মোঃএরশাদ আলী বলেন, তিনি জনবান্ধব মানুষ ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে উপজেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মন জয় করেছিলেন।
নিম্নশ্রেণি থেকে উচ্চপদস্থ লোক খুব সহজে তার কাছে যেত পারত। কোন ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে যেতেন।একজন মানবিক কর্মকর্তা হিসেবে তার জুড়ি নেই
বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, তিনি একজন সৃজনশীল ও মানবিক ইউএনও। তিনি কোন কল্যাণকর কাজ থেকে পিছুপা হননি।
ধর্মঘর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ পারুল বলেন, তিনি খুবই ভালো মানুষ। পরিশ্রমী, দক্ষ ও সৎ ব্যক্তি ছিলেন।
মাধবপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান সুফিয়া আক্তার হেলেন বলেন, তার সততা ও ন্যায়পরায়ণতায় আমরা মুগ্ধ হয়েছি। তিনি অত্যন্ত উদার মনের মানুষ।
উপজেল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আন্দিউড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতিকুর রহমান আতিক বলেন, মানবিক, সৎ ও সাহসী মানুষ মন্জুর আহ্সান। তিনি সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট মাহবুব আলী এমপি বলেন,অর্থের জন্য নয়, তিনি মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য দৌঁড়াতেন। তার কর্মের কথা আমার উপজেলাবাসী মনে রাখবে।
প্রত্যেকটি মানুষের কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন ও সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতেন। প্রায় সময়ই উপজেলার উন্নয়ন নিয়ে আমার সাথে ফোনে বা দেখা হলে কথা বলতেন,উপজেলাবাসীর উন্নয়ন নিয়ে ভাবতেন। তিনি সৎ, উদ্যামী ও কর্মঠ ছিলেন।