হবিগঞ্জ ১০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দৈনিক আমাদের দেশ পাঠক ফোরামের পক্ষে নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান কে সংবর্ধনা Logo সাংবাদিকতায় যদি সফলতা চান, তাহলে দিন শেষে ভাবেন-সিনিয়র সাংবাদিক আলমগীর হোসেন Logo গণবিপ্লবের মাধ্যমে আমরা মুক্ত হয়েছি- নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান Logo সহকারি শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার মাধবপুর উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত Logo ডাক্তারের ছেলে শ্রেণির ছাত্র জিয়াদ নিখোঁজ Logo একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ও হবিগঞ্জ-৪ এর রাজনৈতিক ঐতিহ্য Logo চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি Logo চুনারুঘাটে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হক কুটি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার Logo ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সময়ে প্রতিটি খুন-গুমের বিচার বাংলার মাটিতে হবে-মামুনুল হক Logo দেশকে অস্থির করার জন্য স্বৈরাচারের দোসরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, সৈয়দ মোঃ শাহজাহান

চুনারুঘাটে ফের আয়েশার অপচিকিৎসায় এক প্রসূতীর মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের

আবারও চুনারুঘাটের কথিত চিকিৎসক আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসবকালীন অপচিকিৎসায় এক মাতৃমৃত্যুর অভিযোগ  উঠেছে। অভিযোগ করেন চুনারুঘাট উপজেলার মুমিনপুর গ্রামের মোঃ বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম। আজ (৩১ মার্চ) চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
মিনারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত ১৩ মার্চ মিনারার গর্ভবতী কন্যা রিক্তা আক্তার (২৫) এর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে মুমিনপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর স্ত্রী জোহরা খাতুনের পরামর্শে আয়েশা আক্তারকে ডেকে নেন বােড়িতে । রিক্তার প্রসব যন্ত্রণা বাড়ার সাথে সাথে রিক্তাকে একে একে ১০টি ইনজেকশন পুস করেন কতিথি চিকিৎক আয়েশা। আশপাশের লোকজন রিক্তাকে হাসপাতাল নিতে চাইলে তার প্রয়োজন নেই বলে নিশ্চয়তা দেন । সকাল থেকে চেষ্টার পর বেলা ২টায় রিক্তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। রিক্তা রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। আয়েশা তার চুক্তির ৮ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসেন। রিক্তার রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে বিষয়টি তারা আয়েশাকে জানানোর চেষ্টা করেন। আয়েশা আর তাদের ফোন রিসিভ করেন নি। বেলা ৩টায় তারা রিক্তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে রওয়ানা দেন। রিক্তা ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৪টায় তারা হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রিক্তার মা মিনারা বেগম ও রিক্তার স্বামী কাওছার মিয়া প্রবাসে। মেয়ের মৃত্যুর খবরে রিক্তার মা গত সোমবার দেশে আসেন। বিস্তারিত জানার পর তিনি রিক্তাকে অপচিকিৎসা দিয়ে আয়েশা হত্যা করেছে বলে চুনারুঘাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রসঙ্গ, এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল “আয়েশার অপচিকিৎসায় উপজেলার রাণীগাঁও গ্রামের প্রবাসী আঃ জলিলের স্ত্রী জায়েদা খাতুন ও তার নবজাতকের মৃত্যু” এমন সংবাদ ফেইসবুক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়েশার সকল সনদ জব্দ করা হয়। তখন আয়েশা নিজেকে ডাক্তার ও গাইনী অভিজ্ঞ পরিচয় দিতেন। আয়েশার সকল সনদ যাচাই-বাছাই করেন চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ঐ বছরেরই মে মাসের ৫ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আয়েশাকে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতে নিষেধ করা হয়। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শুধু গাইনী বিষয় নয় যেকোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আয়েশা এর তোয়াক্কা না করে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর উপজেলার মিরাশি গ্রামের মৃত আঃ রশিদের পুত্র পারভেজ মিয়া তার স্ত্রীর প্রসবকালে আয়েশার অপচিকিৎসায় পারভেজ এর নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় আয়েশা বেশ কিছু দিন হাজত বাস করে পরে জামিনে মুক্তি পান। পনারগাও গ্রামের সানু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া খাতুনের প্রসবকালিন মৃত্যু, গনেশপুর গ্রামের পাবেল মিয়ার স্ত্রী মোবিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ষাড়ের কোণা গ্রামের আকছির মিয়ার স্ত্রী সফিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ঘনশ্যামপুর গ্রামের আনোয়ার আলীর মেয়ে স্বপ্না আক্তারে প্রসবকালীন মৃত্যু, গোছাপাড়া গ্রামের শরীফ মিয়ার নবজাতকের প্রসবকালীন মৃত্যু সহ আরো অনেক গর্ভবতী মাতৃ মৃত্যুর চিকিৎসক ও ধাত্রী ছিলেন এই আয়েশা। জানা যায়, উপজেলা জুড়েই আয়েশার দালাল রয়েছে। যারা আয়েশাকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেন। রোগীর যোগান দিয়ে আয়েশার কাছ থেকে পার্সেন্টিজ গ্রহন করেন। আয়েশা চুনারুঘাট উপজেলার জারুলিয়া গ্রামের আঃ আওয়ালের সাবেক স্ত্রী।
এ ব্যাপারে আয়েশা আক্তার এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

দৈনিক আমাদের দেশ পাঠক ফোরামের পক্ষে নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান কে সংবর্ধনা

চুনারুঘাটে ফের আয়েশার অপচিকিৎসায় এক প্রসূতীর মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের

আপডেট সময় ১১:৪৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
আবারও চুনারুঘাটের কথিত চিকিৎসক আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসবকালীন অপচিকিৎসায় এক মাতৃমৃত্যুর অভিযোগ  উঠেছে। অভিযোগ করেন চুনারুঘাট উপজেলার মুমিনপুর গ্রামের মোঃ বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম। আজ (৩১ মার্চ) চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
মিনারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত ১৩ মার্চ মিনারার গর্ভবতী কন্যা রিক্তা আক্তার (২৫) এর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে মুমিনপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর স্ত্রী জোহরা খাতুনের পরামর্শে আয়েশা আক্তারকে ডেকে নেন বােড়িতে । রিক্তার প্রসব যন্ত্রণা বাড়ার সাথে সাথে রিক্তাকে একে একে ১০টি ইনজেকশন পুস করেন কতিথি চিকিৎক আয়েশা। আশপাশের লোকজন রিক্তাকে হাসপাতাল নিতে চাইলে তার প্রয়োজন নেই বলে নিশ্চয়তা দেন । সকাল থেকে চেষ্টার পর বেলা ২টায় রিক্তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। রিক্তা রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। আয়েশা তার চুক্তির ৮ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসেন। রিক্তার রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে বিষয়টি তারা আয়েশাকে জানানোর চেষ্টা করেন। আয়েশা আর তাদের ফোন রিসিভ করেন নি। বেলা ৩টায় তারা রিক্তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে রওয়ানা দেন। রিক্তা ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৪টায় তারা হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রিক্তার মা মিনারা বেগম ও রিক্তার স্বামী কাওছার মিয়া প্রবাসে। মেয়ের মৃত্যুর খবরে রিক্তার মা গত সোমবার দেশে আসেন। বিস্তারিত জানার পর তিনি রিক্তাকে অপচিকিৎসা দিয়ে আয়েশা হত্যা করেছে বলে চুনারুঘাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রসঙ্গ, এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল “আয়েশার অপচিকিৎসায় উপজেলার রাণীগাঁও গ্রামের প্রবাসী আঃ জলিলের স্ত্রী জায়েদা খাতুন ও তার নবজাতকের মৃত্যু” এমন সংবাদ ফেইসবুক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়েশার সকল সনদ জব্দ করা হয়। তখন আয়েশা নিজেকে ডাক্তার ও গাইনী অভিজ্ঞ পরিচয় দিতেন। আয়েশার সকল সনদ যাচাই-বাছাই করেন চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ঐ বছরেরই মে মাসের ৫ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আয়েশাকে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতে নিষেধ করা হয়। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শুধু গাইনী বিষয় নয় যেকোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আয়েশা এর তোয়াক্কা না করে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর উপজেলার মিরাশি গ্রামের মৃত আঃ রশিদের পুত্র পারভেজ মিয়া তার স্ত্রীর প্রসবকালে আয়েশার অপচিকিৎসায় পারভেজ এর নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় আয়েশা বেশ কিছু দিন হাজত বাস করে পরে জামিনে মুক্তি পান। পনারগাও গ্রামের সানু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া খাতুনের প্রসবকালিন মৃত্যু, গনেশপুর গ্রামের পাবেল মিয়ার স্ত্রী মোবিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ষাড়ের কোণা গ্রামের আকছির মিয়ার স্ত্রী সফিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ঘনশ্যামপুর গ্রামের আনোয়ার আলীর মেয়ে স্বপ্না আক্তারে প্রসবকালীন মৃত্যু, গোছাপাড়া গ্রামের শরীফ মিয়ার নবজাতকের প্রসবকালীন মৃত্যু সহ আরো অনেক গর্ভবতী মাতৃ মৃত্যুর চিকিৎসক ও ধাত্রী ছিলেন এই আয়েশা। জানা যায়, উপজেলা জুড়েই আয়েশার দালাল রয়েছে। যারা আয়েশাকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেন। রোগীর যোগান দিয়ে আয়েশার কাছ থেকে পার্সেন্টিজ গ্রহন করেন। আয়েশা চুনারুঘাট উপজেলার জারুলিয়া গ্রামের আঃ আওয়ালের সাবেক স্ত্রী।
এ ব্যাপারে আয়েশা আক্তার এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।