হবিগঞ্জ ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা Logo চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু Logo অসুস্থ সাবেক কৃতি ফুটবলার আকছিরের পাশে চুনারুঘাট উপজেলা ফুটবল একাডেমি  Logo আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo শহীদ মিনারে আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo সীমান্তের ত্রাস গণধর্ষণ মামলার আসামী আবুল গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে  স্ত্রীর যৌতুক মামলায় বিয়ে পাগল স্বামী গ্রেপ্তার Logo নবাগত ইউএনওর সাথে চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের পরিচিত সভা ও মতবিনিময় Logo মাধবপুরে বিএনপির কর্মী সভা Logo ইউএনও’র পরিচিতি সভা বর্জন করলেন চুনারুঘাটে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ

চুনারুঘাটে ফের আয়েশার অপচিকিৎসায় এক প্রসূতীর মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের

আবারও চুনারুঘাটের কথিত চিকিৎসক আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসবকালীন অপচিকিৎসায় এক মাতৃমৃত্যুর অভিযোগ  উঠেছে। অভিযোগ করেন চুনারুঘাট উপজেলার মুমিনপুর গ্রামের মোঃ বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম। আজ (৩১ মার্চ) চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
মিনারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত ১৩ মার্চ মিনারার গর্ভবতী কন্যা রিক্তা আক্তার (২৫) এর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে মুমিনপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর স্ত্রী জোহরা খাতুনের পরামর্শে আয়েশা আক্তারকে ডেকে নেন বােড়িতে । রিক্তার প্রসব যন্ত্রণা বাড়ার সাথে সাথে রিক্তাকে একে একে ১০টি ইনজেকশন পুস করেন কতিথি চিকিৎক আয়েশা। আশপাশের লোকজন রিক্তাকে হাসপাতাল নিতে চাইলে তার প্রয়োজন নেই বলে নিশ্চয়তা দেন । সকাল থেকে চেষ্টার পর বেলা ২টায় রিক্তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। রিক্তা রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। আয়েশা তার চুক্তির ৮ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসেন। রিক্তার রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে বিষয়টি তারা আয়েশাকে জানানোর চেষ্টা করেন। আয়েশা আর তাদের ফোন রিসিভ করেন নি। বেলা ৩টায় তারা রিক্তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে রওয়ানা দেন। রিক্তা ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৪টায় তারা হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রিক্তার মা মিনারা বেগম ও রিক্তার স্বামী কাওছার মিয়া প্রবাসে। মেয়ের মৃত্যুর খবরে রিক্তার মা গত সোমবার দেশে আসেন। বিস্তারিত জানার পর তিনি রিক্তাকে অপচিকিৎসা দিয়ে আয়েশা হত্যা করেছে বলে চুনারুঘাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রসঙ্গ, এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল “আয়েশার অপচিকিৎসায় উপজেলার রাণীগাঁও গ্রামের প্রবাসী আঃ জলিলের স্ত্রী জায়েদা খাতুন ও তার নবজাতকের মৃত্যু” এমন সংবাদ ফেইসবুক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়েশার সকল সনদ জব্দ করা হয়। তখন আয়েশা নিজেকে ডাক্তার ও গাইনী অভিজ্ঞ পরিচয় দিতেন। আয়েশার সকল সনদ যাচাই-বাছাই করেন চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ঐ বছরেরই মে মাসের ৫ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আয়েশাকে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতে নিষেধ করা হয়। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শুধু গাইনী বিষয় নয় যেকোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আয়েশা এর তোয়াক্কা না করে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর উপজেলার মিরাশি গ্রামের মৃত আঃ রশিদের পুত্র পারভেজ মিয়া তার স্ত্রীর প্রসবকালে আয়েশার অপচিকিৎসায় পারভেজ এর নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় আয়েশা বেশ কিছু দিন হাজত বাস করে পরে জামিনে মুক্তি পান। পনারগাও গ্রামের সানু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া খাতুনের প্রসবকালিন মৃত্যু, গনেশপুর গ্রামের পাবেল মিয়ার স্ত্রী মোবিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ষাড়ের কোণা গ্রামের আকছির মিয়ার স্ত্রী সফিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ঘনশ্যামপুর গ্রামের আনোয়ার আলীর মেয়ে স্বপ্না আক্তারে প্রসবকালীন মৃত্যু, গোছাপাড়া গ্রামের শরীফ মিয়ার নবজাতকের প্রসবকালীন মৃত্যু সহ আরো অনেক গর্ভবতী মাতৃ মৃত্যুর চিকিৎসক ও ধাত্রী ছিলেন এই আয়েশা। জানা যায়, উপজেলা জুড়েই আয়েশার দালাল রয়েছে। যারা আয়েশাকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেন। রোগীর যোগান দিয়ে আয়েশার কাছ থেকে পার্সেন্টিজ গ্রহন করেন। আয়েশা চুনারুঘাট উপজেলার জারুলিয়া গ্রামের আঃ আওয়ালের সাবেক স্ত্রী।
এ ব্যাপারে আয়েশা আক্তার এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা

চুনারুঘাটে ফের আয়েশার অপচিকিৎসায় এক প্রসূতীর মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের

আপডেট সময় ১১:৪৭:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
আবারও চুনারুঘাটের কথিত চিকিৎসক আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে প্রসবকালীন অপচিকিৎসায় এক মাতৃমৃত্যুর অভিযোগ  উঠেছে। অভিযোগ করেন চুনারুঘাট উপজেলার মুমিনপুর গ্রামের মোঃ বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম। আজ (৩১ মার্চ) চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
মিনারা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত ১৩ মার্চ মিনারার গর্ভবতী কন্যা রিক্তা আক্তার (২৫) এর প্রসব ব্যাথা শুরু হলে মুমিনপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর স্ত্রী জোহরা খাতুনের পরামর্শে আয়েশা আক্তারকে ডেকে নেন বােড়িতে । রিক্তার প্রসব যন্ত্রণা বাড়ার সাথে সাথে রিক্তাকে একে একে ১০টি ইনজেকশন পুস করেন কতিথি চিকিৎক আয়েশা। আশপাশের লোকজন রিক্তাকে হাসপাতাল নিতে চাইলে তার প্রয়োজন নেই বলে নিশ্চয়তা দেন । সকাল থেকে চেষ্টার পর বেলা ২টায় রিক্তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। রিক্তা রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। আয়েশা তার চুক্তির ৮ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসেন। রিক্তার রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকলে বিষয়টি তারা আয়েশাকে জানানোর চেষ্টা করেন। আয়েশা আর তাদের ফোন রিসিভ করেন নি। বেলা ৩টায় তারা রিক্তাকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে রওয়ানা দেন। রিক্তা ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়েন। বিকাল ৪টায় তারা হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন রিক্তার মা মিনারা বেগম ও রিক্তার স্বামী কাওছার মিয়া প্রবাসে। মেয়ের মৃত্যুর খবরে রিক্তার মা গত সোমবার দেশে আসেন। বিস্তারিত জানার পর তিনি রিক্তাকে অপচিকিৎসা দিয়ে আয়েশা হত্যা করেছে বলে চুনারুঘাট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
প্রসঙ্গ, এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল “আয়েশার অপচিকিৎসায় উপজেলার রাণীগাঁও গ্রামের প্রবাসী আঃ জলিলের স্ত্রী জায়েদা খাতুন ও তার নবজাতকের মৃত্যু” এমন সংবাদ ফেইসবুক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আয়েশার সকল সনদ জব্দ করা হয়। তখন আয়েশা নিজেকে ডাক্তার ও গাইনী অভিজ্ঞ পরিচয় দিতেন। আয়েশার সকল সনদ যাচাই-বাছাই করেন চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ঐ বছরেরই মে মাসের ৫ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আয়েশাকে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতে নিষেধ করা হয়। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শুধু গাইনী বিষয় নয় যেকোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। আয়েশা এর তোয়াক্কা না করে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর উপজেলার মিরাশি গ্রামের মৃত আঃ রশিদের পুত্র পারভেজ মিয়া তার স্ত্রীর প্রসবকালে আয়েশার অপচিকিৎসায় পারভেজ এর নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় আয়েশা বেশ কিছু দিন হাজত বাস করে পরে জামিনে মুক্তি পান। পনারগাও গ্রামের সানু মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া খাতুনের প্রসবকালিন মৃত্যু, গনেশপুর গ্রামের পাবেল মিয়ার স্ত্রী মোবিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ষাড়ের কোণা গ্রামের আকছির মিয়ার স্ত্রী সফিনা খাতুনের প্রসবকালীন মৃত্যু, ঘনশ্যামপুর গ্রামের আনোয়ার আলীর মেয়ে স্বপ্না আক্তারে প্রসবকালীন মৃত্যু, গোছাপাড়া গ্রামের শরীফ মিয়ার নবজাতকের প্রসবকালীন মৃত্যু সহ আরো অনেক গর্ভবতী মাতৃ মৃত্যুর চিকিৎসক ও ধাত্রী ছিলেন এই আয়েশা। জানা যায়, উপজেলা জুড়েই আয়েশার দালাল রয়েছে। যারা আয়েশাকে বড় ডাক্তার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোকা দেন। রোগীর যোগান দিয়ে আয়েশার কাছ থেকে পার্সেন্টিজ গ্রহন করেন। আয়েশা চুনারুঘাট উপজেলার জারুলিয়া গ্রামের আঃ আওয়ালের সাবেক স্ত্রী।
এ ব্যাপারে আয়েশা আক্তার এর সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।