হবিগঞ্জ ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি Logo চুনারুঘাটে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হক কুটি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার Logo ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সময়ে প্রতিটি খুন-গুমের বিচার বাংলার মাটিতে হবে-মামুনুল হক Logo দেশকে অস্থির করার জন্য স্বৈরাচারের দোসরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, সৈয়দ মোঃ শাহজাহান Logo চুনারুঘাটে টিসিবির পন্য বিক্রি না করে মজুদ: ২ ডিলারের মালিক আটক Logo মাধবপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo চুনারুঘাটে পৃথক স্থান থেকে নারী সহ ৩ মরদেহ উদ্ধার Logo ফ্যাসিবাদ আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে! মোহাম্মদ সুমন Logo চুনারুঘাটে বেপরোয়া মোটরসাইকেলের চালকের ধাক্কায় অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট গুরুত : আহত ঢাকায় সিএমএইচে ভর্তি Logo চুনারুঘাটে ৭ বছর পর প্রশসানের সহযোগিতায় সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত

বুয়েটের ছাত্র ফারদিন হতাশা ও টাকার জন্য আত্মহত্যা করেন : ডিবির হারুন

  • আলোকিত ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় ১২:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ফারদিন নূর পরশ হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আজ বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান ।

তিনি বলেন, ফারদিন নূর পরশ অন্তর্মুখী ছিলেন। সবার সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করতে পারতেন না। তার রেজাল্ট ক্রমান্বয়ে খারাপ হচ্ছিল। প্রথম সেমিস্টারে সিজিপিএ ৩.১৫ আসে, তারপর কমতে কমতে ২.৬৭, যেটা বাসার লোকজন বা আত্মীয়স্বজন কেউ জানতেন না। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে স্পেন যাওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল তার, যেটা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। বন্ধুরা তাকে ৪০ হাজার টাকা দেন। পরে এক প্রকার মানসিক চাপে পড়েই আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি বলেন, ফারদিন চারটা টিউশনি করতেন। সব টাকা দিয়ে নিজের ও ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। নিজের জন্য কিছু করতেন না। তারপরও বাড়ি ফেরার চাপ ছিল পরিবার থেকে। হলে থাকতে দেবে না। এ নিয়ে এক ধরনের চাপের মধ্যে ছিলেন, যা তিনি মানতে পারেননি।

ঘটনার দিন ফারদিন নূর পরশের গতিবিধির বিষয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, তার দুটি নাম্বারে ‘বি-পার্টি’ ছিল সর্বমোট ৫২২টি। ওইদিন রাতে তিনি যেখানে যেখানে ঘুরেছেন, তার সেলফোনে কোনো বি-পার্টি আমরা সার্চ করে পাইনি একই অবস্থানে। তিনি যেভাবে উন্মাদের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন তাতে প্রতীয়মান হয়, মানসিকভাবে ফারদিন ডিস্টার্ব ছিলেন। কারও সঙ্গে ওইদিন রাতে দেখা করেননি। তিনি বাবুবাজার ব্রিজ টার্গেট করেন। রাত ১০টা ৫৩ মিনিট থেকে ১১টা ৯ মিনিট- এই সময় বাবুবাজার ব্রিজ অনেক ব্যস্ত থাকায় সম্ভবত তিনি ওখান থেকে পিছপা হন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলে সময় নেন। এরপর আবার নিজের বাসা অতিক্রম করে ডেমরা সেতুতে যান। সর্বশেষ তার গ্রামীণ নাম্বারের আইপিডিআর-এ তার অবস্থান সেতুর ওপর অনুমান করা হয়।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফারদিন চনপাড়া বস্তিতে যাননি। কেউ তাকে ধরে নিয়ে গেছে- এ ধরনের তথ্যও আমরা পাইনি। তার গ্রামীণ নাম্বারের ৪-জি সেল ১৩.৩২.৩৩ তার লোকেশন, যেটা লেগুনা ড্রাইভার যেখান নামিয়েছিলেন বলে বলেছেন, তার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। বিশেষ করে ৩২ সেলটা ঠিক ব্রিজের ওপর দেখায়। নদীর এপার বা ওপার গেলে ৩২ সেল পাওয়া যায় না। এটাতে বোঝা যায়, সর্বশেষ সেতুর ঠিক মাঝখানে তার অবস্থান ছিল।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আত্মহত্যার আগে সারারাত ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে একা একা ঘুরে বেড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ফারদিন একা একা ঘুরে বেড়িয়েছেন উদ্দেশ্যহীনভাবে। বুশরাকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে নামানোর পর উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং কারও সঙ্গে দেখা করেননি। তার গত ১ বছরের সিডিআর পর্যালোচনা করলে পূর্বে কখনো এমন দেখা যায়নি।

ফারদিনের বান্ধবী ইফাত জাহান মুমুর কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ডিবি প্রধান বলেন, ফারদিনের বান্ধবী ইফাত জাহান মুমুর সঙ্গে মেসেঞ্জার এবং টেলিগ্রামে অনেক কথোপকথন রয়েছে, যেখানে ফারদিন তার হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন বহুবার। মুমুর ভাষ্যমতে ফারদিন হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে মনে করেন মুমু। ফারদিন সাঁতার জানতেন না বলেও জানান তিনি।

ফারদিনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, ময়নাতদন্তের আগে গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, যেসব চিকিৎসক ময়নাতদন্ত করেছেন তাদের সঙ্গে আমরা অনেকবার যোগাযোগ করি। ভিসেরা রিপোর্ট এখনো আসেনি। আসলে পূর্ণাঙ্গ মতামত তারা দেবেন। প্রাথমিকভাবে যেটা দিয়েছেন সেখানে মাথায় আঘাতের কথা বলা আছে। কিন্তু খুবই সামান্য আঘাত, যেটাতে নিশ্চিত (মৃত্যু) হবে না বলে মৌখিকভাবে জানান। এই আঘাতে সর্বোচ্চ অজ্ঞান হতে পারে মর্মে জানান। যদিও মিডিয়ার সামনে বলে ফেলেছেন মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন থাকলে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে উঠে আসতো। সুরতহাল রিপোর্টে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার কাপড়েও কোনো ছেঁড়া চিহ্ন ছিল না।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি

বুয়েটের ছাত্র ফারদিন হতাশা ও টাকার জন্য আত্মহত্যা করেন : ডিবির হারুন

আপডেট সময় ১২:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ফারদিন নূর পরশ হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। আজ বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান ।

তিনি বলেন, ফারদিন নূর পরশ অন্তর্মুখী ছিলেন। সবার সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করতে পারতেন না। তার রেজাল্ট ক্রমান্বয়ে খারাপ হচ্ছিল। প্রথম সেমিস্টারে সিজিপিএ ৩.১৫ আসে, তারপর কমতে কমতে ২.৬৭, যেটা বাসার লোকজন বা আত্মীয়স্বজন কেউ জানতেন না। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে স্পেন যাওয়ার জন্য ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল তার, যেটা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। বন্ধুরা তাকে ৪০ হাজার টাকা দেন। পরে এক প্রকার মানসিক চাপে পড়েই আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি বলেন, ফারদিন চারটা টিউশনি করতেন। সব টাকা দিয়ে নিজের ও ছোট দুই ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতেন। নিজের জন্য কিছু করতেন না। তারপরও বাড়ি ফেরার চাপ ছিল পরিবার থেকে। হলে থাকতে দেবে না। এ নিয়ে এক ধরনের চাপের মধ্যে ছিলেন, যা তিনি মানতে পারেননি।

ঘটনার দিন ফারদিন নূর পরশের গতিবিধির বিষয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, তার দুটি নাম্বারে ‘বি-পার্টি’ ছিল সর্বমোট ৫২২টি। ওইদিন রাতে তিনি যেখানে যেখানে ঘুরেছেন, তার সেলফোনে কোনো বি-পার্টি আমরা সার্চ করে পাইনি একই অবস্থানে। তিনি যেভাবে উন্মাদের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন তাতে প্রতীয়মান হয়, মানসিকভাবে ফারদিন ডিস্টার্ব ছিলেন। কারও সঙ্গে ওইদিন রাতে দেখা করেননি। তিনি বাবুবাজার ব্রিজ টার্গেট করেন। রাত ১০টা ৫৩ মিনিট থেকে ১১টা ৯ মিনিট- এই সময় বাবুবাজার ব্রিজ অনেক ব্যস্ত থাকায় সম্ভবত তিনি ওখান থেকে পিছপা হন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলে সময় নেন। এরপর আবার নিজের বাসা অতিক্রম করে ডেমরা সেতুতে যান। সর্বশেষ তার গ্রামীণ নাম্বারের আইপিডিআর-এ তার অবস্থান সেতুর ওপর অনুমান করা হয়।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফারদিন চনপাড়া বস্তিতে যাননি। কেউ তাকে ধরে নিয়ে গেছে- এ ধরনের তথ্যও আমরা পাইনি। তার গ্রামীণ নাম্বারের ৪-জি সেল ১৩.৩২.৩৩ তার লোকেশন, যেটা লেগুনা ড্রাইভার যেখান নামিয়েছিলেন বলে বলেছেন, তার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। বিশেষ করে ৩২ সেলটা ঠিক ব্রিজের ওপর দেখায়। নদীর এপার বা ওপার গেলে ৩২ সেল পাওয়া যায় না। এটাতে বোঝা যায়, সর্বশেষ সেতুর ঠিক মাঝখানে তার অবস্থান ছিল।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আত্মহত্যার আগে সারারাত ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে একা একা ঘুরে বেড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ফারদিন একা একা ঘুরে বেড়িয়েছেন উদ্দেশ্যহীনভাবে। বুশরাকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে নামানোর পর উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং কারও সঙ্গে দেখা করেননি। তার গত ১ বছরের সিডিআর পর্যালোচনা করলে পূর্বে কখনো এমন দেখা যায়নি।

ফারদিনের বান্ধবী ইফাত জাহান মুমুর কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ডিবি প্রধান বলেন, ফারদিনের বান্ধবী ইফাত জাহান মুমুর সঙ্গে মেসেঞ্জার এবং টেলিগ্রামে অনেক কথোপকথন রয়েছে, যেখানে ফারদিন তার হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন বহুবার। মুমুর ভাষ্যমতে ফারদিন হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে মনে করেন মুমু। ফারদিন সাঁতার জানতেন না বলেও জানান তিনি।

ফারদিনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, ময়নাতদন্তের আগে গণমাধ্যমের এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, যেসব চিকিৎসক ময়নাতদন্ত করেছেন তাদের সঙ্গে আমরা অনেকবার যোগাযোগ করি। ভিসেরা রিপোর্ট এখনো আসেনি। আসলে পূর্ণাঙ্গ মতামত তারা দেবেন। প্রাথমিকভাবে যেটা দিয়েছেন সেখানে মাথায় আঘাতের কথা বলা আছে। কিন্তু খুবই সামান্য আঘাত, যেটাতে নিশ্চিত (মৃত্যু) হবে না বলে মৌখিকভাবে জানান। এই আঘাতে সর্বোচ্চ অজ্ঞান হতে পারে মর্মে জানান। যদিও মিডিয়ার সামনে বলে ফেলেছেন মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন থাকলে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে উঠে আসতো। সুরতহাল রিপোর্টে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার কাপড়েও কোনো ছেঁড়া চিহ্ন ছিল না।