বাহুবল উপজেলার রূপাইছড়া রাবার বাগানে জায়গা দখল করে গাছ কাটা এবং বালু উত্তোলন বন্ধ করে বাগানটি সংরক্ষণে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জের পরিবেশ আদালত। স্বপ্রণোদিত হয়ে ০১ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ–বিষয়ক একটি আদেশ দেন আদালত।
জায়গা দখল ও বাগানের ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করায় অস্তিত্ব হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে সরকারি মালিকানাধীন রূপাইছড়া রাবারবাগানটি। এই বাগানসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। ইতিমধ্যে রাবারবাগানের প্রায় ১৯ একর ভূমি হাতছাড়া হয়ে গেছে। বাগানটির মোট আয়তন ১ হাজার ৯৬৩ একর। দেশে সরকারি মালিকানাধীন রবারবাগান আছে ১৭টি, এর মধ্যে ৪টির অবস্থান সিলেট বিভাগে। তার মধ্যে অন্যতম হবিগঞ্জের এই রূপাইছড়া বাগান।
এ বিষয়ে গত ১৮ জানুয়ারি প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, বাগানের পশ্চিম ও উত্তর দিকে অবস্থিত দুটি উঁচু টিলা কেটে মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। টিলার গাছগুলো আগেই কেটে ফেলা হয়েছিল। সবুজ বাগানটির আরও কয়েকটি স্থান থেকে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পুটিজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি মুদ্দত আলী বাগানের ভেতরের তিন একর ভূমি নিজের দাবি করে প্রায় ১৯ একর জায়গা দখল করে রেখেছেন। পাশাপাশি বাগানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত শ্মশানছড়া জলধারা থেকেও বালু উত্তোলন করছেন। মুদ্দত ছাড়া আরও কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী জলধারা থেকে যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন।
পরিবেশ আইনের ৪ নম্বর ধারার ‘চ’ উপধারায় বলা হয়েছে, ‘চা–বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হইতে পারে, এই রূপ স্থান হইলে; বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না।’ প্রথম আলোয় এ বিষয়ে প্রতিবেদনটি ছাপার পর একই বিষয়ে অন্য একটি সংবাদমাধ্যমেও একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জ কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ বা মামলা করেনি।
জনস্বার্থে ও পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে হবিগঞ্জের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন স্বপ্রণোদিত হয়ে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি আদেশ দিয়েছেন। এতে রূপাইছড়া রাবারবাগানের জায়গা দখল ও পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অপরাধ উদ্ঘাটন, অভিযুক্তদের চিহ্নিতকরণ এবং অন্য কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, তা বিস্তারিত তদন্ত করতে বলা হয়।
আদেশ আমলে নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালককে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তকালে অপরাধ পাওয়া গেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের হবিগঞ্জের উপপরিচালককে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।