গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার প্রতিবাদ ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং খুনিদের ফাঁসির দাবিতে হবিগঞ্জে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচিকে তারা ‘হবিগঞ্জ ব্লকেড’ নামে অভিহিত করেছে।
আজ (১৩) বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত শহরের পৌর টাউন হলের সামনে প্রধান সড়ক অবরোধ করে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, হবিগঞ্জে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের হত্যাকারীদের এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে কোনো দৃশ্যমান অভিযান পরিচালিত হচ্ছে না।
তারা বলেন, “হবিগঞ্জে ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ সেই হামলায় জড়িতরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা নেই। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করা না হলে হবিগঞ্জের ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”
এ সময় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা—মাহদি হাসান, আশরাফুল ইসলাম সুজন, আরিফুল ইসলাম, রাসেল আহমেদ, আরিফ তালুকদার, স্বর্ণা কানু পূর্ণতা, মিনহাজ উল মাহবুব রাফী, তাসলিমা ইসলাম, শামীম আহমেদ, তানজিলা ইসলাম প্রমুখ।
গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সদস্যকে ‘প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহীদ’ আখ্যা দিয়ে বক্তারা বলেন, “আজ বিপ্লবের মাধ্যমে এই সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভুলে গেছে যে, আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে তারা ক্ষমতায় এসেছে। তারা ঘুমিয়ে গেছে, ভুলে গেছে। এখন তারা দোসরদের নিয়ে কাজ করছে। আমরা জানতে চাই—কাদের ইন্ধনে হবিগঞ্জে এত শহীদ হওয়ার পরও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের এসি ঘরে ঘুমানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে? ছাত্র আন্দোলনের সময় আমরা কেউ ঘরে নিরাপদে ঘুমাতে পারিনি।”
তারা আরও বলেন, “সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের পূর্বসূরীরা রক্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে শেখ হাসিনা পাকিস্তানি কায়দায় আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে। তখন কিছু সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা চোখে কাঠের চশমা পরে ছিলেন।”
“৫ আগস্টের পর আমরা ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিদায় করলেও, তাদের দোসররা এখনো বাংলার মাটিতে রয়ে গেছে। তাদের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ আবারও পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। কিন্তু ছাত্রসমাজ স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চায়—তাদের অস্তিত্ব বাংলার মাটিতে থাকবে না।”
বেলা ১টার দিকে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আশ্বাস দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হবিগঞ্জ জেলা শাখা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।