সুমাইয়া মোসলেম মীম (১৮)। ছোটবেলা থেকেই ভালো ছাত্রী। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় প্রথম হয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ-৫। স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। তবে মায়ের স্বপ্ন ছিল ভিন্ন। মায়ের ইচ্ছা তার মেয়ে একদিন ভালো চিকিৎসক হবেন।
মায়ের স্বপ্নকে প্রাধান্য দিয়ে তিন মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন মীম। নিজের প্রচেষ্টা, মা-বাবার দোয়া ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছেন তিনি।
এ বছর মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছে সুমাইয়া মোসলেম মীম নামে এক শিক্ষার্থী। সরকারী-বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন সুমাইয়া মোসলেম মীম। তিনি খুলনা মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।
সরকারী ও বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী জানান, এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন। আসন সাপেক্ষে তাদের মধ্যে প্রথম ৪ হাজার ৩৫০ জন পরীক্ষার্থী দেশের ৩৭টি সরকারী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
বাকিদের মধ্যে মেধাক্রম অনুযায়ী ৭২টি বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। বেসরকারী মেডিক্যাল কলেজগুলোতে আসন আছে মোট ৬ হাজার ৪৮৯টি। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়েছেন সুমাইয়া মোসলেম মীম নামে এক শিক্ষার্থী। ফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। আমরা কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাইনি। ছেলেদের থেকে মেয়েরা বেশি পাস করেছে। সর্বোচ্চ প্রাপ্ত নম্বর পেয়েছে মেয়ে। বেশি পাস করেছে মেয়ে।
তিনি বলেন, এ বছর ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেন ৭৯ হাজার ৩৩৭ জন। শতকরায় যা ৫৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। শিক্ষার্থীরা আগামী ৭-১২ এপ্রিল পর্যন্ত রিভিউয়ের (পুনর্মূল্যায়ন) আবেদন করতে পারবেন। কীভাবে রিভিউয়ের জন্য আবেদন করতে হবে তা পরবর্তীকালে জানিয়ে দেয়া হবে।
এমবিবিএস (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গত শুক্রবার সকাল ১০টায় শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১১টায়। ১৯টি কেন্দ্রের মোট ৫৭টি ভেন্যুতে এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১৮টি মেডিক্যাল ও একটি ছিল ডেন্টাল কলেজ।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ইতিহাসে এ বছর এক লাখ ৪৩ হাজার ৭৩০ জন অংশ নেন। দেশে সরকারী মেডিক্যাল কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৩৫০টি। এ হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়েছেন ৩৩ জন। ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান।