হবিগঞ্জ ০১:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে পানিতে ডুবে ভাইবোনের এক সাথে মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে তহশিলদার মইনুল ইসলামে সততার ঈর্ষান্বিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ Logo চুনারুঘাটে ফের ২২ বাংলাদেশীকে পুশইন করেছে বিএসএফ Logo মাধবপুরে ৪টি লাইসেন্স বিহীন করাতকল উচ্ছেদ অভিযান” Logo চুনারুঘাটের কালেঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের পুশ-ইন: নারী শিশুসহ ১৯ বাংলাদেশী Logo মাধবপুরে রমীজ খাঁন আলিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার মান ও মাদ্রাসার উন্নয়নে আলোচনা ‎ Logo চুনারুঘাটে খেলাফত মজলিসের কর্মী ও সুধী সমাবেশ Logo মাধবপুরের হাট বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার, আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই Logo মাধবপুরে ৪৭টি অবৈধ স’মিল, বৈধ মাত্র ১১টি, হুমকিতে বন ও পরিবেশ Logo হবিগঞ্জে নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যৌথ অভিযানে মালিক ও কর্মচারীর কারাদণ্ড
আমার বাবার খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চুনারুঘাট বাসী দেখতে চায়, বকুল

আকল মিয়া হত্যার ৫ বছর পর ফের জনতার মানববন্ধন, রঞ্জন সহ জড়িতদের ফাঁসি দাবী

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির (ব্যকস) ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সভাপতি আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যা মামলায় জড়িত সকল আসামির ফাঁসির দাবিতে ফের ৫ বছর পর মানববন্ধন করেছে চুনারুঘাট স্বর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।

সম্প্রতি মামলার প্রধান আসামী রঞ্জন পাল হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ৫ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

এইর প্রেক্ষিতে গতকাল (২ অক্টোবর) সোমবার বিকেলে চুনারুঘাট সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে পৌর মানববন্ধন ও প্রতিবাত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক হাজার লোকজন অংশ নেয়। এ সময় মানুষের ভিড়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মানববন্ধন থেকে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি রঞ্জন পালসহ জড়িত সবার ফাঁসি ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

রঞ্জন চন্দ্র পাল চুনারুঘাট পৌর শহরের বাল্লা রোডের রবীন চন্দ্র পালের ছেলে। নিহত আবুল হোসেন একই এলাকার বাসিন্দা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান, চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দীন সামসু, রানীগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা আলী মোজাহিদ চৌধুরী, ব্যাকস সভাপতি মো. সালাম তালুকদার, সহ-সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান মাসুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দাশ, পৌর আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোক্তাদির কৃষাণ চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিল্লুল কাদির লস্কর রিমন, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সুহেল আরমান, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল, তাঁতী লীগের সভাপতি খন্দকার কবির, ব্যবসায়ী নেতা সাজিদুল ইসলাম সহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।

বক্তারা বলেন, রঞ্জন পালের নেতৃত্বেই আকল মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। আকল মিয়াকে হত্যা করে তার পরিবারকে দূর্বল করার উদ্দেশেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মসজিদে যাওয়ার পথে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আমরা গ্রেপ্তার আসামির ফাঁসিসহ অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

নিহত ব্যবসায়ী নেতা আবুল হোসেন আকল মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলাম বকুল বলেন, আমার বাবা সব সময় নির্যাতিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। বাজারের ব্যবসায়ীদের সুখ, দুঃখে তাদে পাশে থেকে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে লড়ে গেছেন। তাই ব্যবসায়ী সহ সর্বমহলের মানুষ আজও আমার বাবাকে হৃদয়ে রয়েছেন। আজকের এই মানববন্ধন এটাই তার প্রমাণ।

তিনি আরো বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর ৫ বছর পরও মানুষ ভুলে নাই। ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ আজকের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় হাজির হয়েছেন।আমি চুনারুঘাটবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আপনার আমাদের পরিবারের দুর্সময়ে পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। বাবার খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানাই।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ মার্চ ভোরে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা আকল মিয়ার ওপর হামলা করে। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে নাজমুল ইসলাম বকুল রঞ্জন চন্দ্র পালকে প্রধান আসামি এবং ৪ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।

একই বছরের ৩০ মার্চ মামলার অন্যতম আসামি জসিম উদ্দিন ওরফে শামীমকে ঢাকার তেজকুনিপাড়ার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার দ্বিতীয় আসামি চুনারুঘাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুতুব আলীকারাগারে মারা যান।

এদিকে ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামি রঞ্জন চন্দ্র পাল পলাতক ছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে পানিতে ডুবে ভাইবোনের এক সাথে মৃত্যু

আমার বাবার খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চুনারুঘাট বাসী দেখতে চায়, বকুল

আকল মিয়া হত্যার ৫ বছর পর ফের জনতার মানববন্ধন, রঞ্জন সহ জড়িতদের ফাঁসি দাবী

আপডেট সময় ০১:৩৪:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর ২০২৩

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির (ব্যকস) ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সভাপতি আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যা মামলায় জড়িত সকল আসামির ফাঁসির দাবিতে ফের ৫ বছর পর মানববন্ধন করেছে চুনারুঘাট স্বর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।

সম্প্রতি মামলার প্রধান আসামী রঞ্জন পাল হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ৫ বছর পর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

এইর প্রেক্ষিতে গতকাল (২ অক্টোবর) সোমবার বিকেলে চুনারুঘাট সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে পৌর মানববন্ধন ও প্রতিবাত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক হাজার লোকজন অংশ নেয়। এ সময় মানুষের ভিড়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মানববন্ধন থেকে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি রঞ্জন পালসহ জড়িত সবার ফাঁসি ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

রঞ্জন চন্দ্র পাল চুনারুঘাট পৌর শহরের বাল্লা রোডের রবীন চন্দ্র পালের ছেলে। নিহত আবুল হোসেন একই এলাকার বাসিন্দা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান, চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দীন সামসু, রানীগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা আলী মোজাহিদ চৌধুরী, ব্যাকস সভাপতি মো. সালাম তালুকদার, সহ-সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান মাসুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দাশ, পৌর আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোক্তাদির কৃষাণ চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিল্লুল কাদির লস্কর রিমন, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সুহেল আরমান, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল, তাঁতী লীগের সভাপতি খন্দকার কবির, ব্যবসায়ী নেতা সাজিদুল ইসলাম সহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।

বক্তারা বলেন, রঞ্জন পালের নেতৃত্বেই আকল মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। আকল মিয়াকে হত্যা করে তার পরিবারকে দূর্বল করার উদ্দেশেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মসজিদে যাওয়ার পথে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আমরা গ্রেপ্তার আসামির ফাঁসিসহ অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

নিহত ব্যবসায়ী নেতা আবুল হোসেন আকল মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলাম বকুল বলেন, আমার বাবা সব সময় নির্যাতিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। বাজারের ব্যবসায়ীদের সুখ, দুঃখে তাদে পাশে থেকে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে লড়ে গেছেন। তাই ব্যবসায়ী সহ সর্বমহলের মানুষ আজও আমার বাবাকে হৃদয়ে রয়েছেন। আজকের এই মানববন্ধন এটাই তার প্রমাণ।

তিনি আরো বলেন, আমার বাবার মৃত্যুর ৫ বছর পরও মানুষ ভুলে নাই। ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ আজকের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় হাজির হয়েছেন।আমি চুনারুঘাটবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আপনার আমাদের পরিবারের দুর্সময়ে পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। বাবার খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানাই।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১ মার্চ ভোরে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা আকল মিয়ার ওপর হামলা করে। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে নাজমুল ইসলাম বকুল রঞ্জন চন্দ্র পালকে প্রধান আসামি এবং ৪ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।

একই বছরের ৩০ মার্চ মামলার অন্যতম আসামি জসিম উদ্দিন ওরফে শামীমকে ঢাকার তেজকুনিপাড়ার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার দ্বিতীয় আসামি চুনারুঘাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুতুব আলীকারাগারে মারা যান।

এদিকে ঘটনার পর থেকে মামলার প্রধান আসামি রঞ্জন চন্দ্র পাল পলাতক ছিলেন। দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।