হবিগঞ্জের শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের গত একবছর আগে অগ্নিকাণ্ডে তিনটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয় । এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে জেলার বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। যার উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ মেগাওয়াট।ফলে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ভুগছেন পুরো জেলাবাসী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সংস্কারে দরকার মাত্র ১০০ কোটি টাকা। শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালু হয় ৩৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এর উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ১ মার্চ।
গ্যাস থেকে এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। রয়েছে দুটি গ্যাস টারবাইন ও একটি স্টিম টারবাইন। দুটি গ্যাস টারবাইনের সাহায্যে ১১০ মেগাওয়াট করে উৎপাদন হয় ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বাকি ১১০ মেগাওয়াট স্টিম টারবাইনের মাধ্যমে উৎপাদন হয়। বিজ্ঞাপন ২০২২ সালের ২৯ মে আগুন লেগে এর তিনটি ট্রান্সফরমারই পুড়ে যায়।
এরপর থেকেই এটি বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো সংস্কার করে পুনরায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে ৮০-১০০ কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ স্থানীয় ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান টিপু বলেন, ‘আমরা ঠিকই বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছি কিন্তু বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।
প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে। ব্যবসা করতে পারছি না। সন্তানরাও পড়তে পারছে না।’ ইজিবাইক চালক সজিব মিয়া বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে রাতে ঠিকমতো ইজিবাইক চার্জ দিতে পারি না। ফলে দিনে বেশিক্ষণ গাড়ি চালানো যায় না। এতে আয়ও হচ্ছে না ঠিকমতো।’
কামাল আহমেদ নামের আরেকজন বলেন, ‘জেলায় বিদ্যুতের অবস্থা ভয়াবহ। লোডশেডিংয়ের কারণে শিশু ও বয়স্কদের খুব সমস্যা হচ্ছে। আমার আম্মা বৃদ্ধ মানুষ। লোডশেডিং আর গরমের কারণে তাকে নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকি। বারবার বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার কারণে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে।’
সংস্কারে প্রয়োজন শতকোটি টাকা, খরচ উঠবে কয়েক মাসেই ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাওয়ার কারণে ব্যবসা করতে পারছি না। কাস্টমারকে ঠিকমতো ডেলিভারি দেওয়া যাচ্ছে না।’ আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত শেষ করার সুপারিশ কথা হয় হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামীম বলেন, ‘জেলার সরকারি সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় বিকল হয়ে এক বছর পড়ে আছে।
অথচ এ জেলা শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত। এটি বিকল থাকায় বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। ব্যবসা- বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি সূত্র জানায়, এটি সংস্কার করতে ৮০-১০০ কেটি টাকার মতো ব্যয় হবে, যা সরকারের জন্য খুব বেশি নয়। চালু হলে ১-২ মাসের মধ্যেই এ টাকা উঠে আসবে।
এ বিষয়ে শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী শফিউদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সংস্কার কাজ প্রক্রিয়াধীন। আশা করা যায় খুব শিগগির এটি চালু করা সম্ভব হবে।