সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মাধ্যমে টিপ কান্ডে ব্যাপক আলোচনা সমালোচা ঝড় বইছে। অনেকে টিপ পড়ে প্রতিবাদও করছেন।
দুই বছর আগেও গান-বাজনা নিয়ে পড়ে থাকতেন সাময়িক বরখাস্তকৃত কনস্টেবল নাজমুল তারেক। কিন্তু টিপ নিয়ে এক শিক্ষিকাকে হেনস্তাকারী ওই কনস্টেবলের মধ্যে গত একবছর ধরেই ‘পরিবর্তন’ লক্ষ করেছেন সহকর্মীরা।দাড়ি বড় রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছিলেন তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগ ও তেজগাঁও বিভাগ যৌথভাবে কাজ করে কনস্টেবল নাজমুল তারেককে শনাক্ত করে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ওই ব্যক্তি নাজমুল তারেক বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
সেই পুলিশ কনস্টেবল সাময়িক বরখাস্ত
ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের কনস্টেবল নাজমুল তারেকের সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ‘১৯৯১ সালে জন্ম নাজমুল তারেকের। যশোরের একটি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১১ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান। আট মাস ধরে ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগে কাজ করছেন।’
তারা আরও জানান, ‘নাজমুল তারেক দুই বছর আগেও গান-বাজনা নিয়ে পড়ে থাকতেন। গত একবছর ধরে তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায়। দাড়ি রাখার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছিলেন। তাকে অনুমতিও দেওয়া হয়। একবছর ধরে তিনি সব ধর্মীয় অনুশাসন ও রীতিনীতি মেনে চলছেন।’
তবে হঠাৎ নাজমুলের মধ্যে এমন পরিবর্তনের কারণ কেউ জানাতে পারেননি।
ঘটনার দিন ফার্মগেটের বাসা থেকে বের হয়ে ডিউটিতে যাচ্ছিলেন নাজমুল। পথে ওই নারী শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা হলে টিপ পরা নিয়ে তাকে হেনস্তা করেন নাজমুল তারেক।
ঘটনাটি তদন্তে ইতোমধ্যে ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগ একটি কমিটি গঠন করেছে। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে নাজমুলকে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। পাশাপাশি ওই শিক্ষকের জিডিরও তদন্ত চলছে।’
জানা গেছে, ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নাজমুলকে শনাক্ত করা হয়।
ফুটেজে মোটরসাইকেলে থাকা ওই ব্যক্তি যে তিনি নিজে সেটা নাজমুল স্বীকার করেছেন জানিয়ে বিপ্লব কুমার বলেন, ‘পুলিশ তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কেন সে এমনটা করলো, সেটাও জানার চেষ্টা চলছে।’
ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোশতাক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা একটি কমিটি করে বিষয়টি তদন্ত করছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। জিডির বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
গত শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের শিকার হন তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। শেরেবাংলা নগর থানায় তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন- ‘টিপ পরছোস কেন’ বলে বাজে গালি দেন তাকে।
ঘটনার প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তার পায়ের ওপর দিয়েই ওই পুলিশ সদস্য বাইক চালিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ করেন ড. লতা।
বাংলা ট্রিবিউন