হবিগঞ্জ ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আগামীকাল শায়েস্তাগঞ্জে খোয়াই এয়ার ট্রাভেলসের হজ্জ প্রশিক্ষণ কর্মশালা Logo চুনারুঘাটে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন Logo মাধবপুরে এনজিও নিশান গ্রাহকের ২শ’ কোটি টাকা নিয়ে ৩ পরিচালক উধাও ! Logo চুনারুঘাটে জোরপূর্বক রাস্তা নিমার্ণের অভিযোগে আদালত ১৪৪ ধারা জারি Logo মাধবপুরে বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বাঙ্গালির সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ Logo মাধবপুরে বর্ণিল আয়োজনে বিএনপি’র বর্ষ বরণ Logo নববর্ষ বরণে চুনারুঘাট সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের থাকছে পিঠা উৎসব সহ নানা আয়োজন Logo চুনারুঘাটে রাজার বাজার সরকারি স্কুলের শিক্ষককে যুবদল নেতার হুমকি, থানায় অভিযোগ Logo শারীরিক শিক্ষাঃ প্রয়োজনীয়তা ও মূল্যায়ন-সিনিয়র শিক্ষক সাইফুর রহমান Logo সহকারি অধ্যাপক ডাঃ হিরন্ময় দাশ লন্ডন থেকে এম,আর,সি,পি ডিগ্রি অর্জন

রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে: প্রতি মিনিটে ১ জন আসে

প্রতি মিনিটে একজন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর’বির হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩৩৮ জন ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন। রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এর আগের দিনগুলোতে ১৪ ঘণ্টায় ৭২৪ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতো। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। হাসপাতালের বাইরে তাঁবুতেও রোগীদের জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। এখন হাসপাতালের বাইরে বড় দুইটি অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোগীদের বেশিরভাগ বয়স্ক ও শিশু। তবে চিকিৎসাসেবা দেয়ার বিষয়ে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।

আইসিডিডিআর’বির বরাত দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্র বলছে, চলতি মাসের ২৯ মার্চ পর্যন্ত আইসিডিডিআর’বির হাসপাতালে মোট ২৭ হাজার ৩৭ জন ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৯টি দেশে প্রতি বছর ২৯ মিলিয়ন মানুষ কলেরার কবলে পড়ে, যাদের মধ্যে বছরে প্রায় ১ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এককালে গ্রামে কলেরার প্রকোপ বেশি থাকলেও এসব কারণে এখন শহর এলাকার মানুষের মধ্যেই ডায়রিয়ার পাশাপাশি কলেরার প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির এক চিকিৎসক জানান, ঘণ্টায় ৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। সারাবছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রোগীর সংখ্যা কিছু বাড়ে। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। জানতে চাইলে আইসিডিডিআর’বির অ্যাসিস্টেন্ট সায়েন্টিস্ট ডা. শোয়েব বিন ইসলাম বলেন, খাবার ও পানির মাধ্যমে ডায়রিয়ার জীবাণু সংক্রমিত হয়। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মোহাম্মদপুর, শনির আখড়া, উত্তরা থেকে বেশি রোগী আসছেন।

এবার ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের তুলনায় প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি আসছেন। ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ পানি ও খাবারের বিকল্প নাই। সবচেয়ে ভালো ঘরে তৈরি করা খাবার ও ফোটানো পানি খেতে হবে। পাশাপাশি বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনকার কাজকর্মে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সবসময় সুপেয় পানি পান করলে ডায়রিয়া রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে খাবার স্যালাইন, আইভি ফ্লুইড স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সরবরাহ রয়েছে।

প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। প্রসঙ্গত, গত ১৬ মার্চ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ১ হাজার ৫৭ জন। এর পর যথাক্রমে ১৭ মার্চ ১ হাজার ১৪১ জন, ১৮ মার্চ ১ হাজার ১৭৪, ১৯ মার্চ ১ হাজার ১৩৫, ২০ মার্চ ১ হাজার ১৫৭ এবং ২১ মার্চ ১ হাজার ২১৬ জন, ২৩ মার্চ ১ হাজার ২৩৩ জন, ২৪ মার্চ ১ হাজার ১৭৬ জন, ২৬ মার্চ ১ হাজার ৪০১ জন। এর আগে গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এরকমই একটি প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যা একেবারে মহামারির রূপ ধারণ করে। সেটি স্থায়ী হয়েছিল মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

আগামীকাল শায়েস্তাগঞ্জে খোয়াই এয়ার ট্রাভেলসের হজ্জ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে: প্রতি মিনিটে ১ জন আসে

আপডেট সময় ০৩:৫৪:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২

প্রতি মিনিটে একজন করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর’বির হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩৩৮ জন ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগী হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছেন। রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এর আগের দিনগুলোতে ১৪ ঘণ্টায় ৭২৪ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতো। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। হাসপাতালের বাইরে তাঁবুতেও রোগীদের জায়গা দেয়া যাচ্ছে না। এখন হাসপাতালের বাইরে বড় দুইটি অস্থায়ী তাঁবু স্থাপন করে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোগীদের বেশিরভাগ বয়স্ক ও শিশু। তবে চিকিৎসাসেবা দেয়ার বিষয়ে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই।

আইসিডিডিআর’বির বরাত দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্র বলছে, চলতি মাসের ২৯ মার্চ পর্যন্ত আইসিডিডিআর’বির হাসপাতালে মোট ২৭ হাজার ৩৭ জন ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৯টি দেশে প্রতি বছর ২৯ মিলিয়ন মানুষ কলেরার কবলে পড়ে, যাদের মধ্যে বছরে প্রায় ১ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এককালে গ্রামে কলেরার প্রকোপ বেশি থাকলেও এসব কারণে এখন শহর এলাকার মানুষের মধ্যেই ডায়রিয়ার পাশাপাশি কলেরার প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির এক চিকিৎসক জানান, ঘণ্টায় ৫০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। সারাবছর দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ ডায়রিয়া রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রোগীর সংখ্যা কিছু বাড়ে। সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। জানতে চাইলে আইসিডিডিআর’বির অ্যাসিস্টেন্ট সায়েন্টিস্ট ডা. শোয়েব বিন ইসলাম বলেন, খাবার ও পানির মাধ্যমে ডায়রিয়ার জীবাণু সংক্রমিত হয়। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মোহাম্মদপুর, শনির আখড়া, উত্তরা থেকে বেশি রোগী আসছেন।

এবার ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের তুলনায় প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি আসছেন। ডায়রিয়া থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ পানি ও খাবারের বিকল্প নাই। সবচেয়ে ভালো ঘরে তৈরি করা খাবার ও ফোটানো পানি খেতে হবে। পাশাপাশি বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনকার কাজকর্মে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করলে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সবসময় সুপেয় পানি পান করলে ডায়রিয়া রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সরকারি হাসপাতালগুলোতে খাবার স্যালাইন, আইভি ফ্লুইড স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সরবরাহ রয়েছে।

প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। প্রসঙ্গত, গত ১৬ মার্চ হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ১ হাজার ৫৭ জন। এর পর যথাক্রমে ১৭ মার্চ ১ হাজার ১৪১ জন, ১৮ মার্চ ১ হাজার ১৭৪, ১৯ মার্চ ১ হাজার ১৩৫, ২০ মার্চ ১ হাজার ১৫৭ এবং ২১ মার্চ ১ হাজার ২১৬ জন, ২৩ মার্চ ১ হাজার ২৩৩ জন, ২৪ মার্চ ১ হাজার ১৭৬ জন, ২৬ মার্চ ১ হাজার ৪০১ জন। এর আগে গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এরকমই একটি প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যা একেবারে মহামারির রূপ ধারণ করে। সেটি স্থায়ী হয়েছিল মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত।