নবীগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতন মামলায় কারাগারে থাকা ঘোলডুবা স্কুলের অফিস সহকারী মাসুম পারভেজ ২১ দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদীন জানান- মাসুম পারভেজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। স্ত্রীর মামলায় তিনি কোর্টে হাজিরা দেন। কোর্ট তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। তার অনুপস্থিতি আমরা কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অবগত করেছি। লিখিত দেইনি। ২১ দিন হলো তিনি কর্মস্থলে ফিরেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন- কাউকে না জানিয়ে তিনি (মাসুম পারভেজ) কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
আমাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিপূর্বেও তিনি মামলা জটিলতায় অনুপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, মাসুম পারভেজ সর্বশেষ ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তার কর্মস্থল স্কুলে কর্মরত ছিলেন। এর পরদিন তিনি আর কর্মস্থলে ফিরেননি।
সেই থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ২১ দিন ধরে কর্মস্থলে তিনি অনুপস্থিত। মাসুম পারভেজ নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কৈলং গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ৭ সেপ্টেম্বর মাসুম পারভেজের সঙ্গে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা গ্রামের কয়রুল মিয়ার মেয়ে আমিনা বেগমের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর ঘোলডুবা এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারীর চাকরি নেন পারভেজ। এ সুবাধে তিনি নবীগঞ্জ উপজেলার গরু বাজার রাস্তায় ব্র্যাক অফিসের পাশে ইলিয়াছ মিয়ার বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন।
তাদের ঘরে ফারিহা জাহান মিথি (১০) ও মুনতাহা জাহান রীতি (৪) নামে দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী মাসুম পারভেজ স্ত্রী আমিনাকে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্বামী মাসুম পারভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন স্ত্রী আমিনা বেগম।
এতে কোনো সমাধান না হওয়ায় আমিনা বেগম ২০২৩ সালের ২১ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪ লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল পারভেজকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সে সময় ১৫দিন কারাভোগ করে আপোষ শর্তে জামিন লাভ করেন। এখানে জামিন পেয়ে আদালতের শর্ত ভঙ্গ করেন মাসুম পারভেজ।
পরবর্তীতে স্ত্রীর পরিবার ও স্বজনদের বিরুদ্ধে তার নিজ জেলা নেত্রকোনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেন। পারভেজের এ বিষয়টি আদালতকে অবগত করা হয়।
পরে তিনি আদালতে হাজির হন। আদালতের বিচারক ছিফাত উল্লাহ তাকে (পারভেজ) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকে ২১ দিন ধরে কারাগারে রয়েছেন তিনি।