হবিগঞ্জ ১১:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের দামী সেগুন গাছ চুরি Logo চুনারুঘাটে দোকানের কর্মচারীকে মারধর ও লুটপাট: মামলা Logo ইসলামী আন্দোলনের মিরাশী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড শাখার সম্মেলন ও ঈদ পুনর্মিলনী Logo যুবলীগ নেতা ভূমিখেকো নাসিরের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ Logo চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্র জমিয়তের কর্মী সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন Logo ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ, ভিড় বাস-ট্রেন-লঞ্চে Logo শেকড় সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ৩শ’ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ঔষধ বিতরণ Logo হবিগঞ্জে বিআরটিএ অভিযানে ৬ যানবাহন চালকে জরিমানা Logo ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মিরাশী ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে ঈদ পূণর্মিলনী Logo ঈদযাত্রায় মহাসড়কে পুলিশের টহল জোরদার, সিলেটবাসীর নির্বিঘ্ন ঘরে ফেরা

ভাষার সর্বজনীনতা- সুলতানা রাজিয়া

  • আলোকিত ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় ০২:৩৭:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

ভাষার দ্বারা একমাত্র মানুষেরই চিন্তা ও অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে বাস করতে হলে মানুষকে একে অপরের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে হয়। আর ভাব বিনিময়ের জন্য প্রয়োজন ভাষার। ভাষা ভাব প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম।

মানুষের ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া অন্যান্য প্রাণীর ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া থেকে ভিন্ন। মানুষ জন্মগ্রহণের কিছুদিন পর থেকেই ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাষা ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করে।

ভাষার ব্যবহার মানুষকে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে। ভাষার দ্বারা একজন মানুষ তার চিন্তা ও অনুভূতি অপরের কাছে প্রকাশ করতে পারে এবং অপরের চিন্তা ও অনুভূতি বুঝতে পারে।

মানুষ তার ভাষা ব্যবহার করে তার চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণী ভাষা ব্যবহার করে না তা নয়, কিন্তু মানুষের ভাষা ব্যবহারের কৌশল তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অন্য প্রাণীর ভাষা ব্যবহারের তুলনায়

মানুষের ভাষা ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকরী এবং প্রভাবশালী।

মানুষের ভাষায় রচিত হয় বিভিন্ন রকমের গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, কবিতা, গান আরো কত কিছু। এসব রচনা মানুষের মনের আনন্দ ও বেদনার বহিঃপ্রকাশের মাধ্যম। লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও সমাজের কথা উঠে আসে।

সমাজের না বলা কথা যেন বেরিয়ে আসে সাহিত্যের মাধ্যমে। এ কারণেই সাহিত্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। নাটকের মাধ্যমে কোনোদিন বুদ্ধির মাপকাঠিতে অযোগ্যতার তুর্যে ধরা পড়ে যাচ্ছে।

কিন্তু এ নৈতিকতাহীন প্রবণতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মানুষের গান গেয়ে থাকেন। গানের মধ্যে প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা করেন। জীবনের একটি সময় মানুষ গানের মধ্যেই মেতে থাকেন।

গানকে মানুষের অনুভূতির সঙ্গে সৃষ্টি করে অনেকেই নতুন নতুন সৃষ্টি উপস্থাপন করেন। গানের মাধ্যমে দেশপ্রেম প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে মানুষ নতুন উদ্দীপনা লাভ করে।

গানের মধ্যে একধরনের আনন্দ আছে। গানের মধ্যে মন ভালো হয়ে যায়। গান শুনে মানুষ মুগ্ধ হয়। গানের মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে।

মানুষ ছাড়া পৃথিবীতে যাদের ভাষা আছে, তারা তাদের ভাষা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে। পার্থক্য শুধু এই যে, মানুষের ভাষা ধ্বনি ও বাক্য দ্বারা প্রণীত হয়ে থাকে এবং সেই ভাষার ব্যাকরণ থাকে। প্রাণীদের ভাষায় ব্যাকরণ থাকে না। প্রাণীরা নানা রকম শব্দ ব্যবহার করে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে।

ভাষা কেবল শব্দের সাঁকো নয়-এটি মানুষের মনের গহীন গভীরতা থেকে উৎসারিত এক বিস্ময়কর বিস্তার। জাতি, ধর্ম, সীমান্ত, বর্ণ সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ভাষা হয়ে ওঠে সর্বজনীন এক অনুভবের বাহক।

যেখানে অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা, প্রতিবাদ-সবকিছু প্রকাশ পায় ভাষার মাধ্যমে। পৃথিবীতে হাজারো ভাষা, তবু প্রত্যেক ভাষার ভিতরেই আছে এক অভিন্ন আত্মা-মানবতা। একটি শিশু যখন তার মায়ের ভাষায় প্রথম “মা” বলে, কিংবা একজন বৃদ্ধ যখন মৃত্যুর আগে নিজের মাটির ভাষায় কিছু বলতে চায়-সে ভাষা তার কাছে কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, সে তার অস্তিত্বের প্রকাশ।

ভাষার এই শক্তিই তাকে সর্বজনীন করেছে। একটি জাতির ভাষা তার সংস্কৃতিকে ধারণ করে, ইতিহাসকে বয়ে আনে, স্বপ্নকে রূপ দেয়। আর একে অপরের ভাষা জানার চেষ্টা, শেখার ইচ্ছা, সেই সর্বজনীনতাকে আরও গভীর করে তোলে-যেন একেকটি ভাষা একেকটি জানালা, যার ভিতর দিয়ে আমরা দেখতে পাই মানুষের প্রাণ, জাতির হৃদয়।

১৯৫২ সাল-বাংলা জাতির ইতিহাসে এক দীপ্তিময় এবং রক্তস্নাত অধ্যায়। এ বছরই রচিত হয়েছিল ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গের অনন্য কাব্য, যাকে বিশ্বের ইতিহাস চেনে ‘ভাষা আন্দোলন নামে।

তখনকার শাসকগোষ্ঠী চেয়েছিল, আমাদের মুখ থেকে ছিনিয়ে নিতে আমাদের প্রাণের ভাষা-বাংলা। কিন্তু ভাষা তো কেবল মুখের উচ্চারণ নয়, ভাষা হৃদয়ের পরিচয়, আত্মার স্পন্দন।

সেই আত্মার স্বরক্ষায় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার সহ অনেক নাম-না-জানা তরুণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাজপথে-স্রোতের মতো ছুটে আসা গুলির সামনে। তাঁরা বুক পেতে দিয়েছিলেন, যাতে বাংলার পরবর্তী প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বলতে পারে-আমার ভাষা বাংলা।

ভাষার গুরুত্ব শুধু ব্যক্তিগত পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়-এটি একটি জাতির সংস্কৃতি, চেতনা ও স্বকীয়তার বাহক। ভাষাই মানুষকে মানুষের সঙ্গে যুক্ত করে, তৈরি করে ভাবের আদান-প্রদান, গড়ে তোলে জাতীয় পরিচয়। যে জাতি তার ভাষাকে ভালোবাসে না, সে জাতি নিজের

অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে-ভাষার জন্য লড়তে হয়, ভালোবাসতে হয়, এবং তার মর্যাদা রক্ষা করতে হয়। আমরা আজ গর্ব করে বলি, বাংলা আমার ভাষা।

কিন্তু সেই গর্বের পেছনে লুকিয়ে আছে শহীদদের রক্ত, আর এক অমর বার্তা-ভাষা কখনো কোনো শাসকের নির্দেশে গড়ে ওঠে না, ভাষা গড়ে ওঠে মানুষের ভালোবাসায়।

আমরা যখন বলি ‘ভাষা সবার’-তখন বোঝাতে চাই, ভাষার কোনো একচ্ছত্র অধিকার নেই। যে যেমন ভালোবাসে, যে ভাষায় অনুভব করে-তাই তার ভাষা।এই ভালোবাসা সীমান্ত মানে না, বিভেদ মানে না। ভাষার সর্বজনীনতাই আমাদের এক করে, হৃদয়ে হৃদয় মিলায়।

লেখক: সুলতানা রাজিয়া
সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা)
দক্ষিণ চরণ উচ্চ বিদ্যালয়,চুনারুঘাট।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের দামী সেগুন গাছ চুরি

ভাষার সর্বজনীনতা- সুলতানা রাজিয়া

আপডেট সময় ০২:৩৭:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

ভাষার দ্বারা একমাত্র মানুষেরই চিন্তা ও অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে বাস করতে হলে মানুষকে একে অপরের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে হয়। আর ভাব বিনিময়ের জন্য প্রয়োজন ভাষার। ভাষা ভাব প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম।

মানুষের ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া অন্যান্য প্রাণীর ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া থেকে ভিন্ন। মানুষ জন্মগ্রহণের কিছুদিন পর থেকেই ভাষা অর্জনের প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাষা ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করে।

ভাষার ব্যবহার মানুষকে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা করেছে। ভাষার দ্বারা একজন মানুষ তার চিন্তা ও অনুভূতি অপরের কাছে প্রকাশ করতে পারে এবং অপরের চিন্তা ও অনুভূতি বুঝতে পারে।

মানুষ তার ভাষা ব্যবহার করে তার চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণী ভাষা ব্যবহার করে না তা নয়, কিন্তু মানুষের ভাষা ব্যবহারের কৌশল তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অন্য প্রাণীর ভাষা ব্যবহারের তুলনায়

মানুষের ভাষা ব্যবহার অনেক বেশি কার্যকরী এবং প্রভাবশালী।

মানুষের ভাষায় রচিত হয় বিভিন্ন রকমের গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, কবিতা, গান আরো কত কিছু। এসব রচনা মানুষের মনের আনন্দ ও বেদনার বহিঃপ্রকাশের মাধ্যম। লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও সমাজের কথা উঠে আসে।

সমাজের না বলা কথা যেন বেরিয়ে আসে সাহিত্যের মাধ্যমে। এ কারণেই সাহিত্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। নাটকের মাধ্যমে কোনোদিন বুদ্ধির মাপকাঠিতে অযোগ্যতার তুর্যে ধরা পড়ে যাচ্ছে।

কিন্তু এ নৈতিকতাহীন প্রবণতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। মানুষের গান গেয়ে থাকেন। গানের মধ্যে প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা করেন। জীবনের একটি সময় মানুষ গানের মধ্যেই মেতে থাকেন।

গানকে মানুষের অনুভূতির সঙ্গে সৃষ্টি করে অনেকেই নতুন নতুন সৃষ্টি উপস্থাপন করেন। গানের মাধ্যমে দেশপ্রেম প্রকাশ পায়। গানের মাধ্যমে মানুষ নতুন উদ্দীপনা লাভ করে।

গানের মধ্যে একধরনের আনন্দ আছে। গানের মধ্যে মন ভালো হয়ে যায়। গান শুনে মানুষ মুগ্ধ হয়। গানের মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করে।

মানুষ ছাড়া পৃথিবীতে যাদের ভাষা আছে, তারা তাদের ভাষা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে। পার্থক্য শুধু এই যে, মানুষের ভাষা ধ্বনি ও বাক্য দ্বারা প্রণীত হয়ে থাকে এবং সেই ভাষার ব্যাকরণ থাকে। প্রাণীদের ভাষায় ব্যাকরণ থাকে না। প্রাণীরা নানা রকম শব্দ ব্যবহার করে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে।

ভাষা কেবল শব্দের সাঁকো নয়-এটি মানুষের মনের গহীন গভীরতা থেকে উৎসারিত এক বিস্ময়কর বিস্তার। জাতি, ধর্ম, সীমান্ত, বর্ণ সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে ভাষা হয়ে ওঠে সর্বজনীন এক অনুভবের বাহক।

যেখানে অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা, প্রতিবাদ-সবকিছু প্রকাশ পায় ভাষার মাধ্যমে। পৃথিবীতে হাজারো ভাষা, তবু প্রত্যেক ভাষার ভিতরেই আছে এক অভিন্ন আত্মা-মানবতা। একটি শিশু যখন তার মায়ের ভাষায় প্রথম “মা” বলে, কিংবা একজন বৃদ্ধ যখন মৃত্যুর আগে নিজের মাটির ভাষায় কিছু বলতে চায়-সে ভাষা তার কাছে কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, সে তার অস্তিত্বের প্রকাশ।

ভাষার এই শক্তিই তাকে সর্বজনীন করেছে। একটি জাতির ভাষা তার সংস্কৃতিকে ধারণ করে, ইতিহাসকে বয়ে আনে, স্বপ্নকে রূপ দেয়। আর একে অপরের ভাষা জানার চেষ্টা, শেখার ইচ্ছা, সেই সর্বজনীনতাকে আরও গভীর করে তোলে-যেন একেকটি ভাষা একেকটি জানালা, যার ভিতর দিয়ে আমরা দেখতে পাই মানুষের প্রাণ, জাতির হৃদয়।

১৯৫২ সাল-বাংলা জাতির ইতিহাসে এক দীপ্তিময় এবং রক্তস্নাত অধ্যায়। এ বছরই রচিত হয়েছিল ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গের অনন্য কাব্য, যাকে বিশ্বের ইতিহাস চেনে ‘ভাষা আন্দোলন নামে।

তখনকার শাসকগোষ্ঠী চেয়েছিল, আমাদের মুখ থেকে ছিনিয়ে নিতে আমাদের প্রাণের ভাষা-বাংলা। কিন্তু ভাষা তো কেবল মুখের উচ্চারণ নয়, ভাষা হৃদয়ের পরিচয়, আত্মার স্পন্দন।

সেই আত্মার স্বরক্ষায় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার সহ অনেক নাম-না-জানা তরুণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাজপথে-স্রোতের মতো ছুটে আসা গুলির সামনে। তাঁরা বুক পেতে দিয়েছিলেন, যাতে বাংলার পরবর্তী প্রজন্ম মাথা উঁচু করে বলতে পারে-আমার ভাষা বাংলা।

ভাষার গুরুত্ব শুধু ব্যক্তিগত পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়-এটি একটি জাতির সংস্কৃতি, চেতনা ও স্বকীয়তার বাহক। ভাষাই মানুষকে মানুষের সঙ্গে যুক্ত করে, তৈরি করে ভাবের আদান-প্রদান, গড়ে তোলে জাতীয় পরিচয়। যে জাতি তার ভাষাকে ভালোবাসে না, সে জাতি নিজের

অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে-ভাষার জন্য লড়তে হয়, ভালোবাসতে হয়, এবং তার মর্যাদা রক্ষা করতে হয়। আমরা আজ গর্ব করে বলি, বাংলা আমার ভাষা।

কিন্তু সেই গর্বের পেছনে লুকিয়ে আছে শহীদদের রক্ত, আর এক অমর বার্তা-ভাষা কখনো কোনো শাসকের নির্দেশে গড়ে ওঠে না, ভাষা গড়ে ওঠে মানুষের ভালোবাসায়।

আমরা যখন বলি ‘ভাষা সবার’-তখন বোঝাতে চাই, ভাষার কোনো একচ্ছত্র অধিকার নেই। যে যেমন ভালোবাসে, যে ভাষায় অনুভব করে-তাই তার ভাষা।এই ভালোবাসা সীমান্ত মানে না, বিভেদ মানে না। ভাষার সর্বজনীনতাই আমাদের এক করে, হৃদয়ে হৃদয় মিলায়।

লেখক: সুলতানা রাজিয়া
সিনিয়র শিক্ষক (বাংলা)
দক্ষিণ চরণ উচ্চ বিদ্যালয়,চুনারুঘাট।