হবিগঞ্জ ১০:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু Logo অসুস্থ সাবেক কৃতি ফুটবলার আকছিরের পাশে চুনারুঘাট উপজেলা ফুটবল একাডেমি  Logo আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo শহীদ মিনারে আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo সীমান্তের ত্রাস গণধর্ষণ মামলার আসামী আবুল গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে  স্ত্রীর যৌতুক মামলায় বিয়ে পাগল স্বামী গ্রেপ্তার Logo নবাগত ইউএনওর সাথে চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের পরিচিত সভা ও মতবিনিময় Logo মাধবপুরে বিএনপির কর্মী সভা Logo ইউএনও’র পরিচিতি সভা বর্জন করলেন চুনারুঘাটে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ Logo শায়েস্তাগঞ্জে অর্থনৈতিক শুমারির কাজে জনপ্রতিনিধি ও আ’লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মী!

পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৫০০ একর জমির বোরো ধানঃ মাথায় হাত কৃষকের

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এসব পানি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি। আরও কয়েকশ একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। ফলে তড়িঘড়ি করে আধাপাকা ধান কেটে নিতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু দ্রুত ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

যে জমির ধান আগে এক হাজার টাকায় কাটানো যেত, পানি বেড়ে যাওয়ায় সেই জমির ধান এখন তিন হাজার টাকা দিয়ে কাটাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। তবে যেভাবে পানি বাড়ছে, মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনো উপায় দেখছি না।
স্থানীয় কৃষক, হবিগঞ্জ

স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন ধরে হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করেছে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে। দুই দিনে লাখাই উপজেলার স্বজন হাওরে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। আরও কয়েকশ একর জমির ধান রাতের মধ্যেই তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা জমির আধাপাকা ধান তড়িঘড়ি করে কেটে নিতে কাটতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় স্বজন গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত রায় বলেন, আমাদের এলাকায় কোনো বৃষ্টি নেই। হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে আমাদের হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। তবে যেভাবে পানি বাড়ছে, মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনো উপায় দেখছি না।

তিনি বলেন, দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে শ্রমিক জোগাড় করে কোনো রকমে ধান কেটে আনা হচ্ছে। তবে এতে শ্রমিকের মজুরির দামও উঠবে না।

একই গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বস্বান্ত করছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যেত। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পানি আমাদের সব কিছু নিয়ে গেছে। এখন যা আছে তাও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। কী করব বুঝতে পারছি না।

স্থানীয় কৃষক দেবাশীষ দাশ বলেন, লাখাই উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক একর জমির ধান একেবারে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও কোমর সমান পানি উঠে গেছে। তাই পানির নিচ থেকে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না।

একই এলাকার হরিদাশ নামে এক কৃষক জানান, এখনো যে জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়নি, সেগুলো কেটে নিয়ে আসলেও ধান একেবারে কম পাওয়া যাবে। আধাপাকা ধান কেটে আনার পর শ্রমিকের খরচও উঠবে না।
পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বস্বান্ত করছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যেত।
স্থানীয় কৃষক, হবিগঞ্জ

লাখাই উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য জানান, উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রাম, বেজুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে পানিতে নিমজ্জিত। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কাটার জন্য কৃষকদের তাগিদ দিয়েছি। এছাড়া এলাকায় মাইকিং করে দ্রুত ধান কাটার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু

পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৫০০ একর জমির বোরো ধানঃ মাথায় হাত কৃষকের

আপডেট সময় ০৫:৫৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এসব পানি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি। আরও কয়েকশ একর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। ফলে তড়িঘড়ি করে আধাপাকা ধান কেটে নিতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু দ্রুত ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

যে জমির ধান আগে এক হাজার টাকায় কাটানো যেত, পানি বেড়ে যাওয়ায় সেই জমির ধান এখন তিন হাজার টাকা দিয়ে কাটাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। তবে যেভাবে পানি বাড়ছে, মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনো উপায় দেখছি না।
স্থানীয় কৃষক, হবিগঞ্জ

স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন ধরে হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করেছে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে। দুই দিনে লাখাই উপজেলার স্বজন হাওরে অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার বিকেল পর্যন্ত ৫০০ একর জমির ধান তলিয়ে গেছে। আরও কয়েকশ একর জমির ধান রাতের মধ্যেই তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা জমির আধাপাকা ধান তড়িঘড়ি করে কেটে নিতে কাটতে বাধ্য হচ্ছেন।

স্থানীয় স্বজন গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত রায় বলেন, আমাদের এলাকায় কোনো বৃষ্টি নেই। হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে আমাদের হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। তবে যেভাবে পানি বাড়ছে, মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনো উপায় দেখছি না।

তিনি বলেন, দ্বিগুণ মূল্য দিয়ে শ্রমিক জোগাড় করে কোনো রকমে ধান কেটে আনা হচ্ছে। তবে এতে শ্রমিকের মজুরির দামও উঠবে না।

একই গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বস্বান্ত করছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যেত। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পানি আমাদের সব কিছু নিয়ে গেছে। এখন যা আছে তাও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। কী করব বুঝতে পারছি না।

স্থানীয় কৃষক দেবাশীষ দাশ বলেন, লাখাই উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক একর জমির ধান একেবারে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও কোমর সমান পানি উঠে গেছে। তাই পানির নিচ থেকে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না।

একই এলাকার হরিদাশ নামে এক কৃষক জানান, এখনো যে জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়নি, সেগুলো কেটে নিয়ে আসলেও ধান একেবারে কম পাওয়া যাবে। আধাপাকা ধান কেটে আনার পর শ্রমিকের খরচও উঠবে না।
পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বস্বান্ত করছে। আর অল্পদিনের মধ্যেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যেত।
স্থানীয় কৃষক, হবিগঞ্জ

লাখাই উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য জানান, উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রাম, বেজুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে পানিতে নিমজ্জিত। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কাটার জন্য কৃষকদের তাগিদ দিয়েছি। এছাড়া এলাকায় মাইকিং করে দ্রুত ধান কাটার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।