মাধবপুরে তেলিয়াপাড়া ‘বন্ধু সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ নামে একটি এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্টরা কৌশলে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গ্রাহক শাহ মোঃ মুরাদ খাঁন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের সুরমা চা-বাগান ৮ নং মসজিদ এলাকার মোঃ আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে মোঃ আবু সাহেদ ৭ বছর আগে তেলিয়াপাড়া ‘নিশান সোসাইটি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন এবং বাগানের শ্রমিকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করতেন।
পরবর্তীতে বিভিন্নরকম সহযোগিতায় মাধবপুর সমবায় অফিস থেকে ‘বন্ধু সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ নামে একটি লাইসেন্স গ্রহণ করেন।
তিনি ব্যাংকের আদলে প্রতি লাখ টাকায় মাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেন। প্রথম দিকে সময়মতো মুনাফা প্রদান করে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেন।
এ বিশ্বাসে চা-বাগান এলাকার শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ কোটি কোটি টাকা এই সোসাইটিতে জমা রাখতে শুরু করে। একপর্যায়ে সু -কৌশলে মুনাফা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নিশান সোসাইটি পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরেই বন্ধু সোসাইটির চেয়ারম্যান মোঃ আবু সাহেদও অফিস বন্ধ রেখে আত্মগোপনে চলে যান। বর্তমানে প্রতিদিনই ভুক্তভোগীরা টাকার জন্য অফিসে এসে তালাবদ্ধ দেখে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।
উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের বাসিন্দা শাহ মোঃ মুরাদ খাঁন জানান, তিনি বন্ধু সোসাইটির লোভনীয় মুনাফার আশায় ৩৮ লাখ টাকা জমা রাখেন। তার দাবি, একটি ৩০০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে সোসাইটি তার কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে। গত ছয় মাস ধরে টাকা ফেরত চাইলে তারা নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে এবং শেষ পর্যন্ত অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো অনেকেই তাদের কাছে কোটি কোটি টাকা জমা রেখে এখন সবাই নিঃস্ব।’
সোসাইটির চেয়ারম্যান আবু সাহেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মাধবপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন তালুকদার রাহী জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর তেলিয়াপাড়ায় বন্ধু সোসাইটির কার্যালয়ে পরিদর্শনে গেলে তা বন্ধ অবস্থায় পান। তাদের নানা অনিয়ম সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গ্রাহক টাকার আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ বিন কাসেম বলেন, ‘বন্ধু সোসাইটির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। সমবায় কর্মকর্তাকে তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’