হবিগঞ্জ ১১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে ন্যাশনাল ট্রাভেলস্ ও আশরাফ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের উদ্যোগে পবিত্র হজ্ব সেমিনার Logo চুনারুঘাটে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ও হাসনাত আব্দুল্লাহ’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo মাধবপুরে কৃষকের ধান কেটে দিলেন আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা Logo মাওলানা রইসের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে চুনারুঘাটে ছাত্রসেনার প্রতিবাদ সভা ও ভিক্ষোভ মিছিল Logo মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী আতিক চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাট প্রেসক্লাবে লন্ডন ক্যামডেনের মেয়র সমতা খাতুনকে সংবর্ধনা Logo চুনারুঘাটে মেধাবী শিক্ষার্থী ও লন্ডনের মেয়র সমতা খাতুনকে নাগরিক সংবর্ধনা Logo চুনারুঘাটে বিচার শালিসে প্রতিপক্ষের হামলায় বিচারকসহ আহত ৫ Logo লাভ অ্যান্ড গান্স মাফিয়া টেলস”-এ বাংলাদেশি সংগীতশিল্পী লিটন শেখ Logo চুনারুঘাটের আমকান্দি গ্রামে সরকারি রাস্তা দখলের অভিযোগ

তৌহিদীর জনতার নামে তাবলীগের মুসল্লীদের ‘কাফের’ ঘোষণা দিয়ে মসজিদে হামলা

বাহুবলের কাশিপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে একদল উগ্রবাদী ব্যক্তির হামলার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাবলীগ জামাতের মুসল্লীদের উপর হামলা চালানো হয় এবং তাদের “কাফির” বলে ঘোষণা দিয়ে মসজিদ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লী ও গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত এবং এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গত ২৭ই ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টায় এ ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার সূত্রপাত হয় তাবলীগ জামাতের মুসল্লীরা দাওয়াতের কাজ করার সময়। অভিযোগ রয়েছে যে, সুজন মিয়া, রফিক উল্লাহ, রাজিব মিয়া ও শফিক উল্লাহসহ একদল ব্যক্তি মুসল্লীদের কুটুক্তি ও গালাগালি করেন।মুসল্লীরা সেখান থেকে ফেরত গিয়ে বিষয়টি ঐ গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী মানিক মিয়াকে জানান, এবং তা জানার পর অভিযুক্তরা পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করে ফেলেন। এরপর পরই অভিযুক্তরা মসজিদে অস্ত্র সমেত হামলা চালান এবং মুসল্লীদের উপর শারীরিক ও মানসিক আক্রমণ শুরু করেন।

অভিযুক্তরা স্থানীয় অনেক লোককে সমাবেশ ঘটিয়ে তাবলীগের মুসল্লীদের “কাফির” বলে ঘোষণা দেন এবং তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মুসল্লীরা প্রতিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় মসজিদের ভেতরে ও বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসল্লীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

ঘটনার প্রায় শেষ পর্যায়ে বাহুবল প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। স্থানীয়দের সহায়তা এবং প্রশাসনে হস্তক্ষেপে মুসল্লীদের নিরাপদে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মুরুব্বী মানিক মিয়া। তিনি আলোকিত হবিগঞ্জের প্রতিনিধিকে জানান, “একটি বিশেষ গ্রুপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমাজে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করতে চায়। তারা মসজিদকে ব্যবহার করে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি সেদিন মুসল্লীদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখনও গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাবলীগের লোকেরা এলাকায় আসতে ভয় পাচ্ছেন।” তিনি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দারা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান এবং এ ধরনের হামলা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। স্থানীয়রা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদন করেছেন যেন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার সুষ্ট পরিবেশ বজায় এবং পরবর্তীতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি, হামলার কারণে স্থানীয় প্রতিনিধি থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়ায় আগাচ্ছেন।

কাশিপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে সংঘটিত এ ঘটনা সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্বকে আরও সামনে এনেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য সামাজিক সচেতনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

চুনারুঘাটে ন্যাশনাল ট্রাভেলস্ ও আশরাফ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের উদ্যোগে পবিত্র হজ্ব সেমিনার

তৌহিদীর জনতার নামে তাবলীগের মুসল্লীদের ‘কাফের’ ঘোষণা দিয়ে মসজিদে হামলা

আপডেট সময় ০১:৫২:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

বাহুবলের কাশিপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে একদল উগ্রবাদী ব্যক্তির হামলার ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাবলীগ জামাতের মুসল্লীদের উপর হামলা চালানো হয় এবং তাদের “কাফির” বলে ঘোষণা দিয়ে মসজিদ থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লী ও গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত এবং এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গত ২৭ই ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টায় এ ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার সূত্রপাত হয় তাবলীগ জামাতের মুসল্লীরা দাওয়াতের কাজ করার সময়। অভিযোগ রয়েছে যে, সুজন মিয়া, রফিক উল্লাহ, রাজিব মিয়া ও শফিক উল্লাহসহ একদল ব্যক্তি মুসল্লীদের কুটুক্তি ও গালাগালি করেন।মুসল্লীরা সেখান থেকে ফেরত গিয়ে বিষয়টি ঐ গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী মানিক মিয়াকে জানান, এবং তা জানার পর অভিযুক্তরা পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করে ফেলেন। এরপর পরই অভিযুক্তরা মসজিদে অস্ত্র সমেত হামলা চালান এবং মুসল্লীদের উপর শারীরিক ও মানসিক আক্রমণ শুরু করেন।

অভিযুক্তরা স্থানীয় অনেক লোককে সমাবেশ ঘটিয়ে তাবলীগের মুসল্লীদের “কাফির” বলে ঘোষণা দেন এবং তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মুসল্লীরা প্রতিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় মসজিদের ভেতরে ও বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসল্লীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

ঘটনার প্রায় শেষ পর্যায়ে বাহুবল প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। স্থানীয়দের সহায়তা এবং প্রশাসনে হস্তক্ষেপে মুসল্লীদের নিরাপদে মসজিদ থেকে উদ্ধার করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মুরুব্বী মানিক মিয়া। তিনি আলোকিত হবিগঞ্জের প্রতিনিধিকে জানান, “একটি বিশেষ গ্রুপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমাজে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করতে চায়। তারা মসজিদকে ব্যবহার করে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি সেদিন মুসল্লীদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখনও গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাবলীগের লোকেরা এলাকায় আসতে ভয় পাচ্ছেন।” তিনি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দারা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান এবং এ ধরনের হামলা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। স্থানীয়রা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদন করেছেন যেন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার সুষ্ট পরিবেশ বজায় এবং পরবর্তীতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি, হামলার কারণে স্থানীয় প্রতিনিধি থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়ায় আগাচ্ছেন।

কাশিপুর উত্তরপাড়া জামে মসজিদে সংঘটিত এ ঘটনা সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্বকে আরও সামনে এনেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সে জন্য সামাজিক সচেতনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।