বাহুবলে কিশোরী স্কুল ছাত্রীকে ২ আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষন করেছে দুই লম্পট। কিশোরীর মায়ের মামলায় কুখ্যাত ডাকাত ও ধর্ষণকারী শাহাব উদ্দিনকে প্রায় ৪শত পিচ ইয়াবা সহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত শনিবার দিবাগত রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমন্দা এলাকায় তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,বাহুবল উপজেলার ৩নং সাতকাপন ইউনিয়নের নারকেলতলা গ্রামের লকুছ মিয়ার ছেলে আজমান আলী(৩০) ঘরে স্ত্রী সন্তান থাকার পরও প্রতিবেশী গ্রামের কিশোরী স্কুল ছাত্রীর উপর কুদৃষ্টি দেয়।
আজমান আলী প্রায়ই ওই স্কুল ছাত্রীর বাড়ির পাশ দিয়ে আসা-যাওয়া করত:বিষয়টি টের পেয়ে এক পর্যায়ে ওই স্কুল ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ করে দেয় পরিবারের লোকজন। এ খবর পাওয়ার পর আজমান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এরপর থেকে সে বিভিন্নভাবে সুযোগ খুজতে থাকে।
একপর্যায়ে গত ৫ আগস্ট রাতে আজমান আলী তার বন্ধু কুখ্যাত ডাকাত শাহাব উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
আজমান আলী ওই ১২ বছর বয়সী স্কুল ছাত্রী কিশোরীকে তার বন্ধুর সহায়তায় অপহরণ করে উপজেলার ২নং পুটিজুরী ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে ইদ্রিস মিয়ার ছেলে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু কুখ্যাত ডাকাত শাহাব উদ্দিনের বাড়িতে নিয়ে যায়, সেখানে ২ দিন ওই স্কুল ছাত্রী কিশোরীকে আটকে রেখে আজমান আলী ও তার বন্ধু শাহাব উদ্দিন মিলে তাকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পরিবারের লোকজন ওই স্কুল ছাত্রী কিশোরীকে বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করতে থাকেন, এমতাবস্থায় গত ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্কুল ছাত্রীর মা ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ ওয়াহিদ মিয়া আখঞ্জীকে সাথে নিয়ে ভবানীপুর গ্রামের ডাকাত শাহাব উদ্দিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে বাহুবল মডেল থানায় নিয়ে আসেন।
পরে এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে আজমান আলী(৩০) ও তার বন্ধু শাহাব উদ্দিন(৩৫)কে আসামী করে বাহুবল মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন(২০০০) সংশোধিত(২০২০) এর (০৭/৯(১) ৩০ ধারায় বাহুবল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা হওয়ার পর থেকে আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়, পুলিশ বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করেও তাদের কোন সন্ধান পায়নি। গত শনিবার রাতে আজমানের বন্ধু কুখ্যাত ডাকাত শাহাব উদ্দিন মৌলভীবাজার এলাকা থেকে মরণ নেশা প্রায় ৪শত পিচ ইয়াবা নিয়ে আসার পথে নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩ পানিউমন্দা ইউনিয়নের পাশে তাকে আটক করা হয়। পরে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ শাহাব উদ্দিনকে মাদক মামলায় বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাহুবল মডেল থানার এস আই এখলাছুর রহমান ও এস আই আশীষ তালুকদার জানান, শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে ডাকাতি, চুরি, ধর্ষণ, গর্ভপাত ঘটানো সহ একাধিক মামলা রয়েছে। শাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন যাবত পাহাড়ি এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। শনিবার রাতে প্রায় ৪শত পিচ ইয়াবা সহ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে গ্রামের সচেতন নাগরিকরা জানান, ভিকটিমের মায়ের মা দীর্ঘদিন যাবত তার মেয়েদেরকে নিয়ে রাতদিন অবাধে চলাফেরা করে আসছে। এ ধর্ষণের ঘটনাটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসা করতে স্থানীয় বিষ্ণুপুর গ্রামের হিরা মিয়ার নেতৃত্বে ভিকটিমের বাড়িতে এক গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াগাও গ্রামের আব্দুল হামিদ মাস্টার,আব্দুল ছাত্তার,নারকেলতলা গ্রামের ধর্ষক আজমান আলীর বাবা লকুছ মিয়া, বিষ্ণুপুর গ্রামের মহিদ মিয়া, রুহেল মিয়া, দক্ষিণ মুগকান্দী গ্রামের তাহির মিয়া সহ বিশিষ্টজনরা।