হবিগঞ্জ জেলা সদর ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধুকে দালাল চক্র স্বল্প খরচে উন্নতমাতের চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন।
এই ঘটনায় ওই গৃহবধুর ভাতিজা রহমত আলী গতকাল (২৩ অক্টোবর) সোমবার হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন এর আদালতে ডাক্তার ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে মামলাটি এফআইআর গন্যে রুজু করার জন্য হবিগঞ্জ সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের রহিমা আক্তার টিউমার এর চিকিৎসা নিতে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে আসেন।
এ সময় ওই গৃহবধুকে স্বল্প খরচে উন্নতমানের চিকিৎসার কথা বলে ভুল বুঝিয়ে দালালরা সরকারী হাসপাতাল থেকে হবিগঞ্জ শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে ভর্তি করানোর পর ওই দিন রাত ১১টা ৫০ মিনিটে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের সাবেক গাইনী চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ রহিমা বেগমের পেটের টিউমারের অপারেশন করেন।
১২ সেপ্টেম্বর রোগীকে জোরকরে ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেয়া হয়। বাড়ীতে আসার পর রহিমা বেগমের অবস্থার অবনতি ঘটলে ১ অক্টোবর পুনরায় এস কে ঘোষকে দেখানো হয়।
এরপরও তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ২ অক্টোবর রহিমা বেগমকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সেখানে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, হবিগঞ্জে চিকিৎসা করার সময় রহিমা বেগমের খাদ্য নালী, জরায়ু এবং বামপাশের কিডনী কেটে ফেলা হয়েছে। পেটে থাকা টিউমারও যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ অক্টোবর রহিমা বেগম মারা যায়।
এ ব্যাপারে রহিমা বেগমের ভাতিজা বহুলা গ্রামের মৃত ইউনুছ মিয়ার ছেলে রহমত আলী সোমবার ডা. এস কে ঘোষ, হসপিটালটির পরিচালক আরিফুল ইসলাম ও তাবির হোসাইন এবং জনি আহমেদকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুল হাই বলেন, অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে মামলাটি একটি মাইলফলক। এই মামলার মাধ্যমে সাধারন মানুষের চিকিৎসা সেবা নিয়ে যে হয়রানী সেটি বন্ধ হতে পারে। হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।