আজ মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে তাজপুর স্কুল রোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
পুলিশ ও প্রবাসীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্ব-পরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন ধিরারাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম। অসুস্থ ছেলে সাদিকুল ইসলামকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য গত ১২ জুলাই স্বপরিবারে দেশে ফিরে এক সপ্তাহ ঢাকায় থাকেন। চিকিৎসা শেষে গত ১৮ জুলাই উপজেলার তাজপুর স্কুল রোড এলাকার তাজপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অরুনোধয় পাল ঝলকের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নেন।
সোমবার রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিক মিয়া তার স্ত্রী সন্তানসহ একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।
মঙ্গলবার সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে কক্ষের দরজা ভেঙে রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী হুছনারা বেগম, ছেলে মাইকুল ইসলাম. সাদিকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিয়া ইসলামকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তার রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি তিনজনকে আইসিইউতে প্রেরণ করেন। বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে ডাক্তারের বরাৎ দিয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত রফিক মিয়ার শশুর আনফর আলী, শাশুড়ী বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী শোভা বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম, ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা। এছাড়া পিবিআই ও সিআইডির দুটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, যে বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে সেই বাসায় ৩টি শয়ন কক্ষ, ১টি রান্নাঘর, ১টি খাবার কক্ষ রয়েছে। যে কক্ষে প্রবাসী পরিবারের ৫জন ঘুমিয়েছিলেন কক্ষটির আসববাপত্র এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে।
প্রবাসী হুছনারা বেগমের চাচাতো ভাই গোলাম হোসেন একাত্তরের কথা’কে বলেন, খবর পেয়ে আমরা এসেছি। কে বা কারা কিভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা জানি না। আমার বোনের পরিবারের সাথে কারো শত্রুতা নেই।
নিহত রফিকুল ইসলামের ভায়রা ভাই সাজ্জাদ আহমদ একাত্তরের কথা’কে জানান, ভায়রা রফিকুল ইসলামের বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসা দিতে গত ১২ জুলাই দেশে ফিরেছেন। ঢাকা থেকে ফেরার পর শশুড়-শাশুড়িসহ অন্যান্যদের দিয়ে ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন। তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের খবর পেয়ে এসেছেন বলে জানান।
সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম একাত্তরের কথা’কে বলেন, বিষক্রিয়ার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিভাতে বিষক্রিয়া ঘটেছে তা তদন্তের আগে বলা সম্ভব নয়।যেসকল নিকট আত্মীয় বাসায় ছিলেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।