মাধবপুরে এক তরুণীর ওপর নৃশংস হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১-এর স্কোয়ার্ড কমান্ডার মনিরুল আলম।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে হবিগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জানা যায়, নিজ বাড়িতে গেল মঙ্গলবার ভোররাতে হামলার শিকার হন ১৯ বছরের ওই তরুণী। সেহেরির সময় ঘরের বাইরে বের হলে তাকে জাপটে ধরে কোপায় স্থানীয় যুবক সুমন মিয়া ও তার সঙ্গীরা। মেয়েটির চিৎকারে পরিবার ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রথমে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে সোমবার বাড়িতে নেয়া হয়েছে মেয়েটিকে।
হামলার ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন তরুণীর বাবা। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হয়।
তরুণীর বাবা হবিগঞ্জ গ্যাসফিল্ড এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। মা নোয়াপাড়ার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক।
তিন ভাইবোনের মধ্যে মেয়েটি সবার বড়। লেখাপড়া করেছেন ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত। এর পর থেকে ভাইবোনদের দেখাশোনা আর পরিবারের কাজে ব্যস্ত সময় কাটত তার।
আক্রমণের শিকার তরুণী হবিগঞ্জের খবর কে বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সে (সুমন) আমাকে বিরক্ত করত। প্রথমে সে নাম-পরিচয় না দিয়া আমার দরজার সামনে চিঠি রাখত। পরে সে তার ফোন নাম্বার দিয়ে চিঠি রাখত।
আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি না। কয়েক দিন পর আমাকে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমি তাকে না করে দিই। তখন সে আমাকে বলে আমার জীবন নষ্ট করে দেবে। কিন্তু লজ্জায় আমি কাউকে কিছু বলি না।’
তিনি বলেন, ‘১৯ তারিখভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে ঘরের পাশেই টিউবওয়েলে হাতমুখ ধুতে যাই। মুখ ধুয়ে আসার সময় টিউবওয়েলের কাছেই আমার ওপর হামলা চালায় সুমন। এ সময় তার সঙ্গে নাইম ছিল। আমার পিঠে ও বুকে কোপ দেয়ার পর আমি চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ঘরে ঢুকতে চাই।
‘কিন্তু দেখি ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। সম্ভবত হামলার আগে তারা সেটি বন্ধ করে দেয়। দরজা খোলার চেষ্টা করার সময় সুমন আমাকে আরও কয়েকটি কোপ দেয়। পরে বাবা ঘর থেকে বের এলে সুমন ও নাইম দৌড়ে পালিয়ে যায়।’
মামলার পর থেকেই পলাতক ছিলেন সুমন। তাকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছিল পুলিশ।