হবিগঞ্জ ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জুলাই ২০২৪, ৫ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়? Logo চুনারুঘাটে ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা পেশার অরবিন্দ দত্তের সমাপ্তি Logo ব্যারিস্টার সুমন এমপিকে সংবর্ধনা দিল চুনারুঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি Logo চুনারুঘাটে ১৭ কেজি গাঁজা সহ কারবারি গ্রেপ্তার Logo ৪র্থ বারের মতো জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন চুনারুঘাট থানার এসআই লিটন রায় Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনাকারী সোহাগ গ্রেফতার Logo ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যা মামলার আসামি জালাল গ্রেপ্তার Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন Logo চুনারুঘাটে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন তৌফিক মিয়া তালুকদার Logo ব্যারিস্টার সুমনের হত্যার পরিকল্পনারকারীদের গ্রেফতারে দাবীতে চুনারুঘাটে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ 

হবিগঞ্জে বিশিষ্ট সাংবাদিক নোমান চৌধুরীর ৬ষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী আজ

হবিগঞ্জের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক প্রভাকর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক নোমান চৌধুরীর ৬ষ্ঠ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

মরহুম নোমান চৌধুরী জেলার একজন সিনিয়র, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

জানা যায়, স্বাধীনতা পূর্বকালে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে পড়াকালীন তিনি সাংবাদিকতার সাথে জড়িত হন। ১৯৬৬ সালে দৈনিক আজাদ এর মহকুমা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭০ সালে বিএ ডিগ্রী লাভ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে লেখাপড়াকালীন সময়ে দৈনিক আজাদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের মুখপত্র সাপ্তাহিক গ্রেনেড নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৭৪ সালে সরকার ৪টি পত্রিকা রেখে দেশের সকল পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা করলে তিনি চাকুরী হারান। ওই সময় সরকার চাকুরিচ্যুত সাংবাদিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান কার্যক্রম নিলে তাকে সাব রেজিস্ট্রার পদে প্রস্তাব দেয়া হয়। এছাড়া সিলেটের একটি চা বাগানের ম্যানেজারের পদের সুযোগ পেয়েও তিনি যোগদান করেননি।

সাংবাদিকতার প্রতি অনুরক্ত থাকায় তিনি সরকারি ও বেসরকারি চাকুরীতে যোগদান না করে হবিগঞ্জে ফিরে আসেন। হবিগঞ্জে এসে স্থানীয় সাংবাদিকতার উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭৪ সালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৭৮ সালে তিনি প্রেসক্লাবের সভাপতি নিবাচিত হন।

ওই বছর হবিগঞ্জ মহকুমার শতবর্ষ পূর্তিতে ‘হবিগঞ্জের মুখ’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে প্রশংসিত হন। ‘আউলিয়ার জনপদ’ হবিগঞ্জ নামে তার লেখা নিবন্ধে সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (র.) এর মাজারসহ জেলার বিভিন্ন আউলিয়ার মাজারের বর্ণনা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। তার এ লেখা তৎকালীন তথ্য অধিদফতর সরকারি খরচে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করে। ১৯৬৯ সালে তিনি ‘অন্ধগলি’ নামে একটি নাটক রচনা করেন যা স্থানীয় টাউন হলে পর পর তিন বার সফলভাবে মঞ্চস্থ হয়। ১৯৮২ সালে তিনি সাপ্তাহিক দৃষ্টিকোণ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে হবিগঞ্জে সংবাদপত্র অঙ্গনের সমৃদ্ধি সাধন করেন।

পরে দৈনিক প্রভাকর নামে অপর একটি পত্রিকা প্রকাশ করে জেলার সংবাদপত্র অঙ্গনকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান। মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত তিনি পত্রিকাটির সম্পাদনা করেন। তার সম্পাদিত পত্রিকায় কাজ করে বর্তমান প্রজন্মের অনেক সংবাদকর্মী হাতেকড়ি নেন। তিনি ছিলেন স্থানীয় অনেক সাংবাদিকদের শিক্ষাগুরু। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি কৃষি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান শাহ এএমএস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী হলে নোমান চৌধুরী গুঙ্গিয়াজুরী হাওর উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গ্রহন করে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেন। ১৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। পরে তা প্রি-একনেকে অনুমোদন পেলেও বর্তমানে প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে আছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়?

হবিগঞ্জে বিশিষ্ট সাংবাদিক নোমান চৌধুরীর ৬ষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী আজ

আপডেট সময় ০৯:১৪:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২

হবিগঞ্জের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও দৈনিক প্রভাকর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক নোমান চৌধুরীর ৬ষ্ঠ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

মরহুম নোমান চৌধুরী জেলার একজন সিনিয়র, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

জানা যায়, স্বাধীনতা পূর্বকালে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে পড়াকালীন তিনি সাংবাদিকতার সাথে জড়িত হন। ১৯৬৬ সালে দৈনিক আজাদ এর মহকুমা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭০ সালে বিএ ডিগ্রী লাভ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে লেখাপড়াকালীন সময়ে দৈনিক আজাদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের মুখপত্র সাপ্তাহিক গ্রেনেড নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৭৪ সালে সরকার ৪টি পত্রিকা রেখে দেশের সকল পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা করলে তিনি চাকুরী হারান। ওই সময় সরকার চাকুরিচ্যুত সাংবাদিকদের বিকল্প কর্মসংস্থান কার্যক্রম নিলে তাকে সাব রেজিস্ট্রার পদে প্রস্তাব দেয়া হয়। এছাড়া সিলেটের একটি চা বাগানের ম্যানেজারের পদের সুযোগ পেয়েও তিনি যোগদান করেননি।

সাংবাদিকতার প্রতি অনুরক্ত থাকায় তিনি সরকারি ও বেসরকারি চাকুরীতে যোগদান না করে হবিগঞ্জে ফিরে আসেন। হবিগঞ্জে এসে স্থানীয় সাংবাদিকতার উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৭৪ সালে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯৭৮ সালে তিনি প্রেসক্লাবের সভাপতি নিবাচিত হন।

ওই বছর হবিগঞ্জ মহকুমার শতবর্ষ পূর্তিতে ‘হবিগঞ্জের মুখ’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে প্রশংসিত হন। ‘আউলিয়ার জনপদ’ হবিগঞ্জ নামে তার লেখা নিবন্ধে সৈয়দ নাসির উদ্দিন সিপাহসালার (র.) এর মাজারসহ জেলার বিভিন্ন আউলিয়ার মাজারের বর্ণনা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। তার এ লেখা তৎকালীন তথ্য অধিদফতর সরকারি খরচে পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করে। ১৯৬৯ সালে তিনি ‘অন্ধগলি’ নামে একটি নাটক রচনা করেন যা স্থানীয় টাউন হলে পর পর তিন বার সফলভাবে মঞ্চস্থ হয়। ১৯৮২ সালে তিনি সাপ্তাহিক দৃষ্টিকোণ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে হবিগঞ্জে সংবাদপত্র অঙ্গনের সমৃদ্ধি সাধন করেন।

পরে দৈনিক প্রভাকর নামে অপর একটি পত্রিকা প্রকাশ করে জেলার সংবাদপত্র অঙ্গনকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান। মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত তিনি পত্রিকাটির সম্পাদনা করেন। তার সম্পাদিত পত্রিকায় কাজ করে বর্তমান প্রজন্মের অনেক সংবাদকর্মী হাতেকড়ি নেন। তিনি ছিলেন স্থানীয় অনেক সাংবাদিকদের শিক্ষাগুরু। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি কৃষি বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান শাহ এএমএস কিবরিয়া অর্থমন্ত্রী হলে নোমান চৌধুরী গুঙ্গিয়াজুরী হাওর উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেন। অর্থমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গ্রহন করে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেন। ১৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। পরে তা প্রি-একনেকে অনুমোদন পেলেও বর্তমানে প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে আছে।