চুনারুঘাটে যৌতুকের দাবীতে ৬ মাসের গর্ভবতী গৃহবধু মোছাঃ রিমা আক্তার (২২) কে ৫ দিন যাবৎ অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী-সতীনসহ পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। গত (৩ এপ্রিল) বুধবার গভীর রাতে চুনারুঘাট থানার এসআই ছদরুল আমিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার শানখলা ইউনিয়নের ডেওয়াতলী গ্রাম থেকে আহত অবস্থায় ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করেন।
পরিবার সূত্রে জানাযায়, চুনারুঘাট উপজেলার দ্বি-মাগুরুন্ডা গ্রামের মোঃ আলফু মিয়ার মেয়ে রিমা আক্তারের সাথে একই উপেজেলা শানখলা ইউনিয়নের ডেওয়াতলী গ্রামের নবির হোসেন সানুর ছেলে সুলতান হোসেনের সাথে পারিবারিকভাবে দুজনের বিয়ে হয়। বিয়ের মাস তিন এক যেতে না যেতেই রিমার উপর শুরু হয় যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন।
এছাড়াও রিমা স্বামী সুলতানসহ শ্বশুর-শাশুড়ি নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিয়ের ৪ মাস পর সুলতান ফের বিয়ে করে বাড়িতে নতুন বউ নিয়ে আসে। সে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন আরে বাড়তে থাকে। এতো দিন শুধু সুলতানসহ তার বাবা-মা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করত। কিন্তু সে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর তার বউকে নিয়ে রিমার উপর নির্যাতন চালাত।
সর্বশেষ গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ির একটি রুমে বন্ধ রেখে নির্যাতন করে স্বামী সুলতান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী। শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে প্রাণে বাচার জন্য রিমা ৯৯৯ কল করে চুনারুঘাট থানায়। পরে থানার এসআই ছদরুল আমিন ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় রিমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে ওই গৃহবধু তার চাচার জিম্মায় দেয়া হয়।
পরবর্তীতে রিমা অবস্থা অবনতি হওয়ায় পরিবারের লোকজন চুনারুঘাট হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসক রিমাকে আল্টাসুনোগ্রাম সহ কয়েকটি টেস্ট করাতে পরামর্শ দেন। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার জানিয়েছেন তার গর্ভের সন্তানের অবস্থা খুবই আশঙ্ককাজনক অবস্থায় রয়েছে।
আহত রিমা আক্তার জানান-আমার স্বামী, শাশুড়ী ও সতীনও আমাকে বিভিন্ন সময় মারপিট করত। আমার গরীব পিতা তাদের যৌতুকের চাহিদা পূরণ করতে না পাড়ায় প্রায় সময়ই আমার স্বামী আমার গায়ে হাত তুলত।
সর্বশেষ ৫দিন যাবৎ পরিবার সবাই মিলে আমার শরীরের এমন কোন স্থান নাই তারা আঘাত করেনি। আমার শাশুড়ি গরম পানি দিয়ে আমার শরিরের ঢেলে দিয়ে নির্যাতন করেছে।
আমার স্বামী আমার পেটে অনেকগুলো লাতি মেরেছে। যা এখনো আমি পেট ব্যাথায় চটপট করছি। এমনকি আমার গর্ভের সন্তান তাদের হাত থেকে রা পায় নি। ডাক্তার বলেছেন এখনো আমার গর্ভের সন্তান আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। আমি যৌতুক লোভী পাষাণদের বিচার চাই।