হবিগঞ্জ ০৮:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo দৈনিক আমাদের দেশ পাঠক ফোরামের পক্ষে নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান কে সংবর্ধনা Logo সাংবাদিকতায় যদি সফলতা চান, তাহলে দিন শেষে ভাবেন-সিনিয়র সাংবাদিক আলমগীর হোসেন Logo গণবিপ্লবের মাধ্যমে আমরা মুক্ত হয়েছি- নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান Logo সহকারি শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার মাধবপুর উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত Logo ডাক্তারের ছেলে শ্রেণির ছাত্র জিয়াদ নিখোঁজ Logo একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ও হবিগঞ্জ-৪ এর রাজনৈতিক ঐতিহ্য Logo চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি Logo চুনারুঘাটে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হক কুটি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার Logo ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সময়ে প্রতিটি খুন-গুমের বিচার বাংলার মাটিতে হবে-মামুনুল হক Logo দেশকে অস্থির করার জন্য স্বৈরাচারের দোসরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, সৈয়দ মোঃ শাহজাহান
বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হচ্ছে

চা-বাগানের কর্তৃপক্ষের আগুনে বনের জীবজন্তু পুড়ে মরছে

দেশের অপার সৌন্দর্যের লীলা ভুমি হচ্ছে রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য। আর সেই বন থেকে প্রতিদিনই অবাধে গাছ কাটা হচ্ছে। গাছ পাচারের কারনে বনের ভিতরে পশু পাখি, জীবজন্তুর বাস করা এখন হুমকির মুখে।

এদিকে দেশের বৃহত্তর রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়রাণ্যের পাশে প্রায় তিন হেক্টর জায়গার বনজ ফলদ ও ভেষজ গাছ কেটে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বনের অনেক জাতের জীবজন্তু আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। এ ঘটনা হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রশিদপুর বন বিটের আওতাধীন গির্জাঘর এলাকায় ঘটে। হনুমান ও বিরল প্রজাতির কাঠবিড়ালিসহ কয়েকটি প্রাণী সেখানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, হাতিমারা চা বাগানের মালিকপক্ষ গত কয়েক দিনে গির্জাঘর এলাকা থেকে অন্তত ১৪০টি গাছ কেটে নেয়। তারা প্রায় তিন হেক্টর জায়গাজুড়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। চা গাছ রোপণের জন্য টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে। কেটে নেওয়া গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, তেঁতুল, বট, আমলকী, বহেরা, আউলা ইত্যাদি।
পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী রবি কাস্তে বলেন, ‘হাতিমারা চা বাগান মায়া হরিণের পছন্দের জায়গা। এখানে থাকা আউলা নামে একটি গাছের ফল মায়া হরিণ খায়। এ প্রজাতির গাছগুলোও কেটে ফেলা হয়েছে। ১৪৫টি গাছ কেটে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় কয়েক প্রজাতির বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ও শুকরসহ নানা প্রজাতির হাজার হাজার প্রাণী আশ্রয় হারিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রাণী মারা গেছে।

গির্জাঘর এলাকার বাসিন্দা মর্গেট কাস্তা বলেন, ‘কেটে নেওয়া গাছগুলো অর্ধশত ও শত বছরের পুরোনো। এ গাছগুলোর ফল প্রাণীদের খাদ্য। গাছ কেটে বনে আগুন দেওয়ায় বন্যপ্রাণীরা ছোটাছুটি করছে। লোকালয়ে এসে হামলা করছে বানরের দল’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন এক কর্মকর্তা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়রাণ্যের পাশে অবস্থিত গির্জাঘর এলাকাটি বনপ্রাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক প্রজাতির বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ও শুকরসহ নানাপ্রজাতির অনেক প্রজাতির জীবজন্তুর প্রধান আশ্রয়স্থল এটি। গাছ কাটা ও আগুন দেওয়ায় বন্যপ্রাণীরা মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে এসব গাছ কাটা হচ্ছে। সিলেট বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে হাতিমারা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মঈন উদ্দিন ফোনকল রিসিভ করেন। তবে গাছ কাটা ও বনে আগুন দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে তিনি লাইন কেটে দেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

দৈনিক আমাদের দেশ পাঠক ফোরামের পক্ষে নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান কে সংবর্ধনা

বন বিভাগের অনুমতি ছাড়াই গাছ কাটা হচ্ছে

চা-বাগানের কর্তৃপক্ষের আগুনে বনের জীবজন্তু পুড়ে মরছে

আপডেট সময় ০৫:১৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

দেশের অপার সৌন্দর্যের লীলা ভুমি হচ্ছে রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য। আর সেই বন থেকে প্রতিদিনই অবাধে গাছ কাটা হচ্ছে। গাছ পাচারের কারনে বনের ভিতরে পশু পাখি, জীবজন্তুর বাস করা এখন হুমকির মুখে।

এদিকে দেশের বৃহত্তর রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়রাণ্যের পাশে প্রায় তিন হেক্টর জায়গার বনজ ফলদ ও ভেষজ গাছ কেটে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বনের অনেক জাতের জীবজন্তু আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে। এ ঘটনা হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রশিদপুর বন বিটের আওতাধীন গির্জাঘর এলাকায় ঘটে। হনুমান ও বিরল প্রজাতির কাঠবিড়ালিসহ কয়েকটি প্রাণী সেখানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, হাতিমারা চা বাগানের মালিকপক্ষ গত কয়েক দিনে গির্জাঘর এলাকা থেকে অন্তত ১৪০টি গাছ কেটে নেয়। তারা প্রায় তিন হেক্টর জায়গাজুড়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। চা গাছ রোপণের জন্য টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে। কেটে নেওয়া গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, তেঁতুল, বট, আমলকী, বহেরা, আউলা ইত্যাদি।
পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী রবি কাস্তে বলেন, ‘হাতিমারা চা বাগান মায়া হরিণের পছন্দের জায়গা। এখানে থাকা আউলা নামে একটি গাছের ফল মায়া হরিণ খায়। এ প্রজাতির গাছগুলোও কেটে ফেলা হয়েছে। ১৪৫টি গাছ কেটে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় কয়েক প্রজাতির বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ও শুকরসহ নানা প্রজাতির হাজার হাজার প্রাণী আশ্রয় হারিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রাণী মারা গেছে।

গির্জাঘর এলাকার বাসিন্দা মর্গেট কাস্তা বলেন, ‘কেটে নেওয়া গাছগুলো অর্ধশত ও শত বছরের পুরোনো। এ গাছগুলোর ফল প্রাণীদের খাদ্য। গাছ কেটে বনে আগুন দেওয়ায় বন্যপ্রাণীরা ছোটাছুটি করছে। লোকালয়ে এসে হামলা করছে বানরের দল’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন এক কর্মকর্তা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়রাণ্যের পাশে অবস্থিত গির্জাঘর এলাকাটি বনপ্রাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক প্রজাতির বানর, হনুমান, মায়া হরিণ ও শুকরসহ নানাপ্রজাতির অনেক প্রজাতির জীবজন্তুর প্রধান আশ্রয়স্থল এটি। গাছ কাটা ও আগুন দেওয়ায় বন্যপ্রাণীরা মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বন বিভাগের অনুমতি না নিয়ে এসব গাছ কাটা হচ্ছে। সিলেট বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে হাতিমারা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. মঈন উদ্দিন ফোনকল রিসিভ করেন। তবে গাছ কাটা ও বনে আগুন দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠলে তিনি লাইন কেটে দেন।