হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে গাছ কাটা ও অস্বাভাবিক লোডশেডিং এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হবিগঞ্জবাসীর ব্যানারের কোর্ট মসজিদের সামনে সড়ক অবরোধ করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ একাত্মতা পোষণ করেন। অবরোধ চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এ সময় গাছ কাটা বন্ধ ও লোডশেডিং এর প্রতিবাদে শ্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। পরে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতির আশ্বাস দিলে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
ঘণ্টাব্যাপী চলা সড়ক অবরোধে একাত্মতা পোষণ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, আমরা এখানে গাছ রক্ষার জন্য কথা বলছি। আমরা হবিগঞ্জের বিদ্যুতের দুরাবস্থার কথা বলছি।
আমরা গাছের জন্য হবিগঞ্জে বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না। এরপরও গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। গাছ যেন কাটা না হয় সেজন্য আইন রয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগের ব্যাপারে তারা অবিবেচক হয়ে গাছগুলো কেটে ফেলছে।
হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কে গাছগুলো না কাটার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ছোট গাছগুলোর আড়ালে শতবর্ষ পুরনো গাছগুলোও কাটা হচ্ছে।
আন্দোলনরত মাহমুদা খা বলেন, হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাইকপাড়া থেকে পুরাণ বাজার পর্যন্ত সামাজিক বনায়নের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে।
বর্তমানে যে তাপদাহের সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য গাছ রোপন করার পাশাপাশি বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে হবে। গাছ কাটার পাশাপাশি অসহ্য বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে হবিগঞ্জবাসীর খুবই কষ্ট হচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রণব কুমার দেব বলেন, আমরা ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ রোড়ে নির্বিচারে গাছ কাটার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছি। আজ তার ধারাবাহিকতায় সড়ক অবরোধ করছি।
গাছ কাটা মানুষ হত্যার মতো। গাছ না থাকলে মানুষ বাঁচবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের জানিয়েছে রাস্তা উন্নয়নের জন্য এই গাছ কাটা হচ্ছে। কিন্তু গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন হয় না। শুধু কিছু লোকের পকেট ভারী হবে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হবিগঞ্জের ভয়াবহ লোডশেডিং সমস্যা এক সপ্তাহের মধ্যে নিরসন করার প্রতিশ্রুতি দেন হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন কার্যালয়ের উপ-সহকারী রাকিবুল ইসলাম।
তিনি বলেন, হবিগঞ্জে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন ১৯ মেগাওয়াট। সেখানে আমরা পাচ্ছি মাত্র ৭ মেগাওয়াট। ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, সামাজিক বনায়নের কথা বলে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাইকপাড়া থেকে পুরাণ বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে হাজার খানেক গাছ কাটা হয়েছে।