মাধবপুরে ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস পালিত হয়েছে। আজ (৪ঠা এপ্রিল) সোমবার সকালে পতাকা উত্তোলন ও মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে এ দিবসটি পালিত হয়। দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের পূনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন-হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইতরাত জাহান। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈনুল ইসলাম মঈনুলের সভাপতিত্বেন ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশরাফ আলীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টন (অবঃ) কাজী কবির উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান, মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, বীরমুক্তিযোদ্ধা গৌড় প্রসাদ রায়, ফুল মিয়া, শফিকুর রহমান, আব্দুর শহিদ, আব্দুস সামাদ, আব্দুল মালেক মধু প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের স্মৃতিসৌধ সংরক্ষন করা হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নতুন প্রজন্ম আরো বেশী করে জানতে পারবে। ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল জেনারেল আতাউল গনি উসমানির নেতৃত্বে ২৭ সেনা কর্মকর্তা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ভারতীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তেলিয়াপাড়া চা বাগান ডাক বাংলোতে বসে এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস লিখতে হলে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের কথা চলে আসে সর্বাগ্রে। এখান থেকে রণনীতি রণ কৌশল ঠিক করে সারাদেশকে প্রথম ৫টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক এ স্থানটির স্মৃতি রক্ষার্থে একটি জাদুঘর রূপান্তর করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধের সর্বাধীনায়ক জাতির পিতার রেসকোর্স ময়দানে ৭ ই মার্চের কালজয়ী ভাষনের পর মুক্তিপাগল বাঙ্গালী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল এই দিনে মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলোতে স্বাধীনতা যুদ্ধের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের কলাকৌশল ঠিক করার জন্য। ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উর্ধ্বতন ২৭ সেনা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে দেশকে স্বাধীন করার শপথ এবং যুদ্ধের রণকৌশল গ্রহণ করা হয়। ভাগ করা হয় ৪ সেক্টর। ৪ সেনা কর্মকর্তাকে এসব সেক্টরের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তী ৪ সেক্টরের কাজের সুবিধার্থে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। ওই বৈঠক শেষে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনি ওসমানী নিজের পিস্তল থেকে ফাকা গুলি করে আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সদর দপ্তর ৪ টা এপ্রিল ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গনের পুনর্মিলনী
প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক জনাব ইসরাত জাহান।
আয়োজনে জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জ, ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হবিগঞ্জ।