হবিগঞ্জ ০৬:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়? Logo চুনারুঘাটে ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা পেশার অরবিন্দ দত্তের সমাপ্তি Logo ব্যারিস্টার সুমন এমপিকে সংবর্ধনা দিল চুনারুঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি Logo চুনারুঘাটে ১৭ কেজি গাঁজা সহ কারবারি গ্রেপ্তার Logo ৪র্থ বারের মতো জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন চুনারুঘাট থানার এসআই লিটন রায় Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনাকারী সোহাগ গ্রেফতার Logo ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যা মামলার আসামি জালাল গ্রেপ্তার Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন Logo চুনারুঘাটে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন তৌফিক মিয়া তালুকদার Logo ব্যারিস্টার সুমনের হত্যার পরিকল্পনারকারীদের গ্রেফতারে দাবীতে চুনারুঘাটে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ 

জাতীয় স্বার্থে নদী রক্ষা করতেই হবে : ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী

  • এসএম মিজানঃ
  • আপডেট সময় ০৭:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২
  • ১৭১ বার পড়া হয়েছে

ইলিশ সম্পদ রক্ষা, নদীর জীব বৈচিত্র্য রক্ষা, নদীর ভাঙ্গন রোধে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত নৌ-যান গুলোকে জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। সেই সঙ্গে অপকার্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হিসেবে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২ পদ্মা-মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে সরেজমিন পরিদর্শন কালে নির্দেশ দেন তিনি।

ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, দেশের নদীগুলোতে ইলিশের যে অভয়ারণ্য রয়েছে তার মধ্যে একটি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকা। এর মধ্যে চাঁদপুরের নদী এলাকা রয়েছে ৭০ কিলোমিটার। এটি হচ্ছে ইলিশের সবচেয়ে বড় অভয়ারণ্য। মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন- এই এলাকায় অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ইলিশের উৎপাদন কমে গেছে। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যগুলো শুনে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত এবং আর্থসামাজিক ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণের সুপারিশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

তিনি আরও বলেন, ইলিশ যদি একাবারে দিক পরিবর্তন করে ফেলে তাহলে আমরা ইলিশ থেকে বঞ্চিত হতে হবে এটি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যার এ ধরনের অবৈধ কাজ করতে সহযোগিতা করে তারা জাতির শত্রু। অবিলম্বে নদী থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ সহ সবার সহযোগিতা নিয়ে বালু ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বাল্কহেড জব্দ করতে হবে। বালুর সঙ্গে সম্পৃক্ত সেসব নৌযান রয়েছে সেগুলো সব জব্দ করার জন্য আমি জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছি। তাদের লাইসেন্স আছে কি না সেগুলো পরীক্ষা করতে হবে। তারা অবৈধভাবে বালু তুলছিল না তাই তাদেরকে আইনানুয়ায়ী গ্রেপ্তার করার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ কে অ্যাকশন নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখানে যেহেতু পরিবেশ বিঘিœত হয়েছিল তাই অধিদপ্তরকে পরিবেশ আদালত চালু করার নির্দেশ দিয়েছি। এটি করার জন্য তাদেরকে কোন অনুমতি নিতে হবে না। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের অব্যাহত অভিযানের ফলে অবৈধ বালু খেকো ড্রেজারের হাত হতে এ অঞ্চল মুক্ত হয়েছে।

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল ইসলাম বলেন যে, পদ্মা-মেঘনা নদীতে পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য পদ্মা-মেঘনা ইলিশের গরমৎধঃরড়হ ংঢ়ধহিরহম, নৎববফরহম ক্ষেত্রে প্রায় ১০০কিমি জুড়ে বিস্তৃত। এরা প্লাংক্টন খেয়ে বেঁচে থাকে। এতে অসংখ্য ড্রেজারের মাঝে ইলিশ মাইগ্রেট করতে পারে না। নদীতে প্লাংক্টন লেভেল অভিলম্বে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত এবং আর্থসমাজিক ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রতিবেশগত এবং আর্থসামাজিক ক্ষতির জন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠিদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা দায়ের করবে। তফসিল এলাকার বাইরে বালু তোলা ও পরিবহন কার্যে নিয়োজিত ড্রেজার ও কার্গো জব্দ করতে হবে। পরিবেশ বিঘœ/নষ্ট করার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭ অনুযায়ী মামলা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আপরাধীদের আটক, কারাদন্ড, জরিমানা ইত্যাদি দন্ড প্রদান করতে হবে। নৌ-পথ ক্ষতি করা, নৌচলাচলে বিঘœ ঘটানো ইত্যাদি অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়া সরেজমিন পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন চাদপুরের জেলা প্রশাসক,ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল ইসলাম, প্রাণি বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি জনাব খান হাবিবুর রহমান। পরিদর্শন কালে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ, জেলা পুলিশ, চাঁদপুর উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য গত ২২ মার্চ ২০২২ কমিশনের নির্দেশনায় নদীতে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের অব্যাহত অভিযানের ফলে অবৈধ বালু খেকো ড্রেজারের হাত হতে এ অঞ্চল মুক্ত হয়েছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়?

জাতীয় স্বার্থে নদী রক্ষা করতেই হবে : ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী

আপডেট সময় ০৭:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ এপ্রিল ২০২২

ইলিশ সম্পদ রক্ষা, নদীর জীব বৈচিত্র্য রক্ষা, নদীর ভাঙ্গন রোধে চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত নৌ-যান গুলোকে জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। সেই সঙ্গে অপকার্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হিসেবে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২ পদ্মা-মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে সরেজমিন পরিদর্শন কালে নির্দেশ দেন তিনি।

ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, দেশের নদীগুলোতে ইলিশের যে অভয়ারণ্য রয়েছে তার মধ্যে একটি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকা। এর মধ্যে চাঁদপুরের নদী এলাকা রয়েছে ৭০ কিলোমিটার। এটি হচ্ছে ইলিশের সবচেয়ে বড় অভয়ারণ্য। মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন- এই এলাকায় অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে ইলিশের উৎপাদন কমে গেছে। সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যগুলো শুনে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত এবং আর্থসামাজিক ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণের সুপারিশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

তিনি আরও বলেন, ইলিশ যদি একাবারে দিক পরিবর্তন করে ফেলে তাহলে আমরা ইলিশ থেকে বঞ্চিত হতে হবে এটি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যার এ ধরনের অবৈধ কাজ করতে সহযোগিতা করে তারা জাতির শত্রু। অবিলম্বে নদী থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ সহ সবার সহযোগিতা নিয়ে বালু ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বাল্কহেড জব্দ করতে হবে। বালুর সঙ্গে সম্পৃক্ত সেসব নৌযান রয়েছে সেগুলো সব জব্দ করার জন্য আমি জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছি। তাদের লাইসেন্স আছে কি না সেগুলো পরীক্ষা করতে হবে। তারা অবৈধভাবে বালু তুলছিল না তাই তাদেরকে আইনানুয়ায়ী গ্রেপ্তার করার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ কে অ্যাকশন নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখানে যেহেতু পরিবেশ বিঘিœত হয়েছিল তাই অধিদপ্তরকে পরিবেশ আদালত চালু করার নির্দেশ দিয়েছি। এটি করার জন্য তাদেরকে কোন অনুমতি নিতে হবে না। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের অব্যাহত অভিযানের ফলে অবৈধ বালু খেকো ড্রেজারের হাত হতে এ অঞ্চল মুক্ত হয়েছে।

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল ইসলাম বলেন যে, পদ্মা-মেঘনা নদীতে পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য পদ্মা-মেঘনা ইলিশের গরমৎধঃরড়হ ংঢ়ধহিরহম, নৎববফরহম ক্ষেত্রে প্রায় ১০০কিমি জুড়ে বিস্তৃত। এরা প্লাংক্টন খেয়ে বেঁচে থাকে। এতে অসংখ্য ড্রেজারের মাঝে ইলিশ মাইগ্রেট করতে পারে না। নদীতে প্লাংক্টন লেভেল অভিলম্বে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত এবং আর্থসমাজিক ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রতিবেশগত এবং আর্থসামাজিক ক্ষতির জন্য ব্যক্তি বা গোষ্ঠিদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা দায়ের করবে। তফসিল এলাকার বাইরে বালু তোলা ও পরিবহন কার্যে নিয়োজিত ড্রেজার ও কার্গো জব্দ করতে হবে। পরিবেশ বিঘœ/নষ্ট করার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭ অনুযায়ী মামলা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আপরাধীদের আটক, কারাদন্ড, জরিমানা ইত্যাদি দন্ড প্রদান করতে হবে। নৌ-পথ ক্ষতি করা, নৌচলাচলে বিঘœ ঘটানো ইত্যাদি অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়া সরেজমিন পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন চাদপুরের জেলা প্রশাসক,ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল ইসলাম, প্রাণি বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি জনাব খান হাবিবুর রহমান। পরিদর্শন কালে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ, জেলা পুলিশ, চাঁদপুর উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন জেলা প্রশাসন, চাঁদপুর ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য গত ২২ মার্চ ২০২২ কমিশনের নির্দেশনায় নদীতে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের অব্যাহত অভিযানের ফলে অবৈধ বালু খেকো ড্রেজারের হাত হতে এ অঞ্চল মুক্ত হয়েছে।