হবিগঞ্জ ০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আজমিরীগঞ্জে ইঁদুরের বিষ খেয়ে যুবকের আত্মহত্যা Logo চুনারুঘাটে বিএনপির দুই প্রয়াত নেতা রাজন ও জলিলের করব জিয়ারত করলেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম Logo মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিএনপি’র পতাকা তলে থেকেই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই-সৈয়দ মোঃ ফয়সল Logo সিলেট রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ কোর্ট ইন্সপেক্টর হলেন হবিগঞ্জের শেখ নাজমুল হক Logo চুনারুঘাটে পিতা নিখোঁজ: জীবিত উদ্ধারের দাবিতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন Logo সিলেট রেঞ্জে শ্রেষ্ঠ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান আশিক Logo সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের দামী সেগুন গাছ চুরি Logo চুনারুঘাটে দোকানের কর্মচারীকে মারধর ও লুটপাট: মামলা Logo ইসলামী আন্দোলনের মিরাশী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড শাখার সম্মেলন ও ঈদ পুনর্মিলনী Logo যুবলীগ নেতা ভূমিখেকো নাসিরের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ

হবিগঞ্জে চৈত্র মাসের তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে: সাধারণ মানুষ প্রতিকার চান

  • আবুল কালাম আজাদ:
  • আপডেট সময় ১২:৪২:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২
  • ২৩৭ বার পড়া হয়েছে

কয়েক বছর ধরে চুনারুঘাট উপজেলায় চৈত্র মাসের তীব্র পানি সংকট দেখা দেয়। এই এলাকায় বর্তমানে বোরো মৌসমে ধান চাষাবাদ করার জন অনেকগুলেঅ সেলু মেশিন চালু করা হয়। ফলে চুনারুঘাট উপজেলার ঘরে ঘরে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়। মানুষ পানির জন্য কলসি, ডেক ডেকসি, জগ বোতল নিয়ে গ্রামের সেলু মেশিনের কাছে দৌড়াচ্ছেন। উপজেলার ৭০ শতাংশ অগভীর নলকুপ এখন বন্ধ। বিশুদ্ধ পানি না থাকায় অনেকেই ডোবা পুকুরের পানি পান করে ইতোমধ্যে অসুস্থ্য হতে শুরু করেছেন। এমন খবর উঠে আসছে গ্রামে গ্রামে।
ফাল্গুনের শুরু থেকেই পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার পৌরশহরসহ ১০টি ইউনিয়নের ঘরে ঘরে।

একদিকে খরা, অন্যদিকে বোরো মওসুমে হাজার হাজার সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের কারণে পানির স্তর ৪০/৪৫ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় বাসা বাড়িতে লোকজন পানির জন্য হাহাকার করছেন। উপজেলার প্রায় ৭০ শতাংশ বাসা বাড়িই এখন বিশুদ্ধ পানির হাহাকার চলছে। এছাড়া চা বাগানের ঘরে ঘরে এখন পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বোরো মওসুমে উপজেলায় এক হাজার ৯’শ ৮৫টি ছোট বড় সেলু মেশিন ও গভীর নলকুপ দ্বারা বোরোতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় মানুষের বাসা বাড়িতে পানি উঠছে না। এ অবস্থায় মানুষকে পানির জন্য আগামী বৈশাখ পর্যন্ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে খবর আসছে মানুষ বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে পুকুর কিংবা ডোবার পানি পান করছেন। তার উপর অধিকাংশ পুকুর এখন শুকনো। তাই মানুষ পানির জন্য সকাল থেকেই ছুটে চলেছেন গ্রামের সেলু মেশিন কিংবা গভীর নলকুপে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অপরিকল্পিত ভাবে কৃষিতে পানি সেচের গভীর নলকুপ বসানোর কারণেই এবার বাড়ি বাড়ি নলকুপের পানি উঠছে না। গ্রামের কৃষকরা যে যেভাবে পারছে, সেভাবেই সেচ মেশিন চালু করেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের মতে চলতি বোরো মওসুমে উপজেলার ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসলে দিনরাত পানি তুলছে ছোট বড় ১ হাজার ৯শ ৮৫টি সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল। এছাড়া শুস্ক মওসুমের কারণে পানির স্তর ৪০ থেকে ৪৫ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় গ্রামে গ্রামে দেড়শ থেকে ৪শ ফুট পর্যন্ত স্থাপিত নলকুপে পানি উঠছে না। চুনারুঘাট পৌর শহরের অধিকাংশ বাসা বাড়িতে এখন তাদের নলকুপে পানি না উঠায় তারা দোকান পাঠ থেকে পানি কিনে পান করছেন। কিন্তু গোসলসহ নানা কাজে ব্যবহৃত পানির কষ্টে তাদের দিন কাটছে। পানির চরম হাহাকার চলছে চা বাগানের লাইনে লাইনে। বাগান এলাকা উচু এবং পাহাড়ী হওয়ার কারণে এমনিতেই তারা সারা বছর পানি সংকটে থাকে। এর মধ্যে শুস্ক মওসুমে তাদের ঘরে ঘরে এখন পানির হাহাকার চলছে।
উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের জাকের হোসেন জানান, তার নলকুপে পানি উঠছে না এক মাস ধরে। পাসের সেলু মেশিন থেকে পানি আনতে গেলেও তারা বাধা দিচ্ছে। এ অবস্থায় তার পরিবার পানির চরম কষ্টে আছে। একই অবস্থা উপজেলার প্রতিটি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে। গাজীপুর গ্রামের আবুল হাসিম বলেন, ঘরে পানি নাই, পুকুরে পানি নাই, গোসলের জন্য যেতে হচ্ছে পাশের খোয়াই নদীতে। চা শ্রমিক নেতা স্বপন সাওতাল বলেন, চা বাগানে পানির জন্য মানুষ ৩দিনেও গোসল করতে পারছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, শুস্ক ও বোরো মওসুমে উপজেলার খোয়াই, করাঙ্গী ও সুতাং নদী থেকে পাওয়ার পাম্প দিয়ে ও পল্টন পদ্ধতিতে পানি উত্তোলন করে এ পানি সংকট দুর করা সম্ভব। বোরো মওসুমে সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল চালু রেখে কৃষিতে সেচ দিলে পানির স্তর নিচে নেমে যায় এবং মানুষের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব নয়। তিনি নদী থেকে পানি নেওয়া এবং পল্টন পদ্ধতি প্রকল্প চালু করে কৃষিতে পানিসেচ দেওয়ার কথা জানান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

আজমিরীগঞ্জে ইঁদুরের বিষ খেয়ে যুবকের আত্মহত্যা

হবিগঞ্জে চৈত্র মাসের তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে: সাধারণ মানুষ প্রতিকার চান

আপডেট সময় ১২:৪২:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২

কয়েক বছর ধরে চুনারুঘাট উপজেলায় চৈত্র মাসের তীব্র পানি সংকট দেখা দেয়। এই এলাকায় বর্তমানে বোরো মৌসমে ধান চাষাবাদ করার জন অনেকগুলেঅ সেলু মেশিন চালু করা হয়। ফলে চুনারুঘাট উপজেলার ঘরে ঘরে পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়। মানুষ পানির জন্য কলসি, ডেক ডেকসি, জগ বোতল নিয়ে গ্রামের সেলু মেশিনের কাছে দৌড়াচ্ছেন। উপজেলার ৭০ শতাংশ অগভীর নলকুপ এখন বন্ধ। বিশুদ্ধ পানি না থাকায় অনেকেই ডোবা পুকুরের পানি পান করে ইতোমধ্যে অসুস্থ্য হতে শুরু করেছেন। এমন খবর উঠে আসছে গ্রামে গ্রামে।
ফাল্গুনের শুরু থেকেই পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার পৌরশহরসহ ১০টি ইউনিয়নের ঘরে ঘরে।

একদিকে খরা, অন্যদিকে বোরো মওসুমে হাজার হাজার সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের কারণে পানির স্তর ৪০/৪৫ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় বাসা বাড়িতে লোকজন পানির জন্য হাহাকার করছেন। উপজেলার প্রায় ৭০ শতাংশ বাসা বাড়িই এখন বিশুদ্ধ পানির হাহাকার চলছে। এছাড়া চা বাগানের ঘরে ঘরে এখন পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বোরো মওসুমে উপজেলায় এক হাজার ৯’শ ৮৫টি ছোট বড় সেলু মেশিন ও গভীর নলকুপ দ্বারা বোরোতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় মানুষের বাসা বাড়িতে পানি উঠছে না। এ অবস্থায় মানুষকে পানির জন্য আগামী বৈশাখ পর্যন্ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে খবর আসছে মানুষ বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে পুকুর কিংবা ডোবার পানি পান করছেন। তার উপর অধিকাংশ পুকুর এখন শুকনো। তাই মানুষ পানির জন্য সকাল থেকেই ছুটে চলেছেন গ্রামের সেলু মেশিন কিংবা গভীর নলকুপে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অপরিকল্পিত ভাবে কৃষিতে পানি সেচের গভীর নলকুপ বসানোর কারণেই এবার বাড়ি বাড়ি নলকুপের পানি উঠছে না। গ্রামের কৃষকরা যে যেভাবে পারছে, সেভাবেই সেচ মেশিন চালু করেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের মতে চলতি বোরো মওসুমে উপজেলার ১৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসলে দিনরাত পানি তুলছে ছোট বড় ১ হাজার ৯শ ৮৫টি সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল। এছাড়া শুস্ক মওসুমের কারণে পানির স্তর ৪০ থেকে ৪৫ ফুট নিচে নেমে যাওয়ায় গ্রামে গ্রামে দেড়শ থেকে ৪শ ফুট পর্যন্ত স্থাপিত নলকুপে পানি উঠছে না। চুনারুঘাট পৌর শহরের অধিকাংশ বাসা বাড়িতে এখন তাদের নলকুপে পানি না উঠায় তারা দোকান পাঠ থেকে পানি কিনে পান করছেন। কিন্তু গোসলসহ নানা কাজে ব্যবহৃত পানির কষ্টে তাদের দিন কাটছে। পানির চরম হাহাকার চলছে চা বাগানের লাইনে লাইনে। বাগান এলাকা উচু এবং পাহাড়ী হওয়ার কারণে এমনিতেই তারা সারা বছর পানি সংকটে থাকে। এর মধ্যে শুস্ক মওসুমে তাদের ঘরে ঘরে এখন পানির হাহাকার চলছে।
উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের জাকের হোসেন জানান, তার নলকুপে পানি উঠছে না এক মাস ধরে। পাসের সেলু মেশিন থেকে পানি আনতে গেলেও তারা বাধা দিচ্ছে। এ অবস্থায় তার পরিবার পানির চরম কষ্টে আছে। একই অবস্থা উপজেলার প্রতিটি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে। গাজীপুর গ্রামের আবুল হাসিম বলেন, ঘরে পানি নাই, পুকুরে পানি নাই, গোসলের জন্য যেতে হচ্ছে পাশের খোয়াই নদীতে। চা শ্রমিক নেতা স্বপন সাওতাল বলেন, চা বাগানে পানির জন্য মানুষ ৩দিনেও গোসল করতে পারছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, শুস্ক ও বোরো মওসুমে উপজেলার খোয়াই, করাঙ্গী ও সুতাং নদী থেকে পাওয়ার পাম্প দিয়ে ও পল্টন পদ্ধতিতে পানি উত্তোলন করে এ পানি সংকট দুর করা সম্ভব। বোরো মওসুমে সেলু ও ডিপ টিউবওয়েল চালু রেখে কৃষিতে সেচ দিলে পানির স্তর নিচে নেমে যায় এবং মানুষের দুর্ভোগ কমানো সম্ভব নয়। তিনি নদী থেকে পানি নেওয়া এবং পল্টন পদ্ধতি প্রকল্প চালু করে কৃষিতে পানিসেচ দেওয়ার কথা জানান।