হবিগঞ্জ ০৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত: আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি Logo চুনারুঘাটে বাড়ি রাস্তার বিরোধ নিয়ে একই পরিবারের বৃদ্ধসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখম Logo চুনারুঘাটে ইউপি সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের উপর মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ওয়ার্ডবাসীর মানববন্ধন Logo মাধবপুরে মাজার ওরসের জেরে সংঘর্ষ, আহত ৪ Logo চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা Logo চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু Logo অসুস্থ সাবেক কৃতি ফুটবলার আকছিরের পাশে চুনারুঘাট উপজেলা ফুটবল একাডেমি  Logo আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo শহীদ মিনারে আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo সীমান্তের ত্রাস গণধর্ষণ মামলার আসামী আবুল গ্রেপ্তার

কিন্ত মাঝ রাতে বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানা বন্ধ থাকে, তাহলে কেন মধ্য রাতে লোডশেডিং হচ্ছে?

বর্তমান দেশে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। কিন্ত মাঝ রাতে বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানা বন্ধ থাকে। মানুষও আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মধ্য রাতে লোডশেডিং হচ্ছে। এবার সেই লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও একটু বেশি। গভীর রাতে কেন এই লোডশেডিং, এমন প্রশ্ন উঠেছে গ্রাহকদের মনে।

সারা দেশে আলো জ্বালানোর জন্য দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইজিবাইক এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে। একটি ইজিবাইক ১২ ভোল্টের ৬টি করে ব্যাটারি ব্যবহার করে। এতে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়।

অনুসন্ধান বলছে, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের কারণে রাতে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা তৈরি হচ্ছে। মানুষ লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়লে গ্যারেজে এসব ব্যাটারিগুলো চার্জে বসানো হয়। সকালের দিকে চালকরা নিয়ে কাজে বের হন। ব্যাটারিতে চার্জ দিতেই প্রয়োজন হচ্ছে অতিরিক্ত বিদ্যুতের। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাধারণ গ্রাহকের বেশিরভাগই ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। তখন গৃহস্থালির আলো জ্বালতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হতো সেটি আর হয় না।

ব্যাটারি-চালিত ইজিবাইক (ছবি: সংগৃহীত) ব্যাটারি-চালিত ইজিবাইক (ছবি: সংগৃহীত) পিজিসিবি বিদ্যুতের ঘণ্টাপ্রতি চাহিদার যে হিসাবে দিয়েছে তাতে দেখা যায়, মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, এরপর ৭টায় ১৫ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট, ৮টায় ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, ৯টায় ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট, ১০টায় ১৫ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট, ১১টায় ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, রাত ১২টায় ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, ১টায় ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট, ২টায় ১৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট, ৩টায় ১৪ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট, ভোর ৪টায় ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, ৫টায় ১৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং ভোর ৬টায় ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।

অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সময়ে বিদ্যুৎ চাহিদা হিসাব করলে দেখা যায়, কোনও ঘণ্টাই চাহিদার খুব একটা পরিবর্তন হচ্ছে না। অর্থাৎ রাতে গৃহস্থালি কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের লোড কমে গেলেও রিকশা গ্যারেজগুলো বিদ্যুৎ নিচ্ছে। একটি ইজিবাইকে একটি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে চাইলেও ইজিবাইককে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া গ্রামীণ জনপদে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইজিবাইক।

একজন ইজিবাইক চালকের পরিবারে গড়ে ৫ জন লোক থাকলে প্রায় দুই কোটি মানুষের নিত্যদিনের জীবনযাপনের অর্থ আসে এখান থেকে। ফলে প্রত্যক্ষভাবে এসব মানুষ ইজিবাইকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ইজিবাইক মেরামত এবং ইজিবাইক শিল্প কারখানা এবং ব্যাটারি শিল্পও বিকশিত হয়েছে ইজিবাইকের মাধ্যমে। ফলে এখানেও বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

এখন গ্রামে বসবাসকারী ৮০ ভাগ মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ইজিবাইক। বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এখন মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের অন্যতম কারণ ইজিবাইক। সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইজিবাইক রয়েছে। আমরা এগুলো বন্ধও করছি না। এগুলোকে বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ দিতে হয়।

প্রতিমন্ত্রী এর আগে রবিবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংকটের এই অবস্থা থেকে যেন বের হয়ে আসা যায়, সেই চেষ্টা করছি।’ মূলত জ্বালানি সংকটের কারণেই বিদ্যুৎ সংকট হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এগুলো গত ২ মাস ধরেই সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। আর্থিক কারণসহ নানা কারণে এখনও সমাধান করা যায়নি।’

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের কমিটি বিলুপ্ত: আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আহবায়ক কমিটি

কিন্ত মাঝ রাতে বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানা বন্ধ থাকে, তাহলে কেন মধ্য রাতে লোডশেডিং হচ্ছে?

আপডেট সময় ১২:১১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩

বর্তমান দেশে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। কিন্ত মাঝ রাতে বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানা বন্ধ থাকে। মানুষও আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মধ্য রাতে লোডশেডিং হচ্ছে। এবার সেই লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও একটু বেশি। গভীর রাতে কেন এই লোডশেডিং, এমন প্রশ্ন উঠেছে গ্রাহকদের মনে।

সারা দেশে আলো জ্বালানোর জন্য দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইজিবাইক এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে। একটি ইজিবাইক ১২ ভোল্টের ৬টি করে ব্যাটারি ব্যবহার করে। এতে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়।

অনুসন্ধান বলছে, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের কারণে রাতে বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা তৈরি হচ্ছে। মানুষ লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়লে গ্যারেজে এসব ব্যাটারিগুলো চার্জে বসানো হয়। সকালের দিকে চালকরা নিয়ে কাজে বের হন। ব্যাটারিতে চার্জ দিতেই প্রয়োজন হচ্ছে অতিরিক্ত বিদ্যুতের। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাধারণ গ্রাহকের বেশিরভাগই ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। তখন গৃহস্থালির আলো জ্বালতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হতো সেটি আর হয় না।

ব্যাটারি-চালিত ইজিবাইক (ছবি: সংগৃহীত) ব্যাটারি-চালিত ইজিবাইক (ছবি: সংগৃহীত) পিজিসিবি বিদ্যুতের ঘণ্টাপ্রতি চাহিদার যে হিসাবে দিয়েছে তাতে দেখা যায়, মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, এরপর ৭টায় ১৫ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট, ৮টায় ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, ৯টায় ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট, ১০টায় ১৫ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট, ১১টায় ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট, রাত ১২টায় ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট, ১টায় ১৪ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট, ২টায় ১৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট, ৩টায় ১৪ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট, ভোর ৪টায় ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, ৫টায় ১৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং ভোর ৬টায় ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট।

অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সময়ে বিদ্যুৎ চাহিদা হিসাব করলে দেখা যায়, কোনও ঘণ্টাই চাহিদার খুব একটা পরিবর্তন হচ্ছে না। অর্থাৎ রাতে গৃহস্থালি কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারের লোড কমে গেলেও রিকশা গ্যারেজগুলো বিদ্যুৎ নিচ্ছে। একটি ইজিবাইকে একটি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। ফলে চাইলেও ইজিবাইককে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া গ্রামীণ জনপদে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইজিবাইক।

একজন ইজিবাইক চালকের পরিবারে গড়ে ৫ জন লোক থাকলে প্রায় দুই কোটি মানুষের নিত্যদিনের জীবনযাপনের অর্থ আসে এখান থেকে। ফলে প্রত্যক্ষভাবে এসব মানুষ ইজিবাইকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ইজিবাইক মেরামত এবং ইজিবাইক শিল্প কারখানা এবং ব্যাটারি শিল্পও বিকশিত হয়েছে ইজিবাইকের মাধ্যমে। ফলে এখানেও বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

এখন গ্রামে বসবাসকারী ৮০ ভাগ মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ইজিবাইক। বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এখন মধ্যরাতে লোডশেডিংয়ের অন্যতম কারণ ইজিবাইক। সারা দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইজিবাইক রয়েছে। আমরা এগুলো বন্ধও করছি না। এগুলোকে বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ দিতে হয়।

প্রতিমন্ত্রী এর আগে রবিবার (৪ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংকটের এই অবস্থা থেকে যেন বের হয়ে আসা যায়, সেই চেষ্টা করছি।’ মূলত জ্বালানি সংকটের কারণেই বিদ্যুৎ সংকট হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এগুলো গত ২ মাস ধরেই সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে। আর্থিক কারণসহ নানা কারণে এখনও সমাধান করা যায়নি।’