হবিগঞ্জ ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা Logo চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু Logo অসুস্থ সাবেক কৃতি ফুটবলার আকছিরের পাশে চুনারুঘাট উপজেলা ফুটবল একাডেমি  Logo আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo শহীদ মিনারে আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo সীমান্তের ত্রাস গণধর্ষণ মামলার আসামী আবুল গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে  স্ত্রীর যৌতুক মামলায় বিয়ে পাগল স্বামী গ্রেপ্তার Logo নবাগত ইউএনওর সাথে চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের পরিচিত সভা ও মতবিনিময় Logo মাধবপুরে বিএনপির কর্মী সভা Logo ইউএনও’র পরিচিতি সভা বর্জন করলেন চুনারুঘাটে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ

কেন এত জটিল বাংলাদেশে এনআইডি, পাসপোর্ট এবং জন্ম সনদ সংশোধন করতে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:১৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১৬৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে এনআইডি, পাসপোর্ট এবং জন্ম সনদ সংশোধন করতে অনেক জটিলতা পোহাতে হয়। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌড়ানো, কর্মকর্তাদের কাছে ভুল সংশোধনের ধর্ণা দিয়ে পড়ে থাকা; এ ধরনের হয়রানির চক্করে পড়তে হয় তাদেরকে। তা নাহলে স্রেফ এনআইডি সংশোধনের জন্যও ‘ঠিক মানুষ ধরে’, ঘুষের টাকা পকেটে রেখে মাঠে নামতে হয়। নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অফিসগুলোর অভ্যন্তরীণ অস্বচ্ছ আমলাতন্ত্র ও নির্দেশনার কারণে প্রতিদিন লাখো মানুষকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।

ঢাকার একটি স্থানীয় নির্বাচন কমিশন (ইসি) অফিসে খুব মনোযোগের সঙ্গে একটি বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছেন রেজাউল করিম। বইয়ের ভেতর কয়েক হাজার নাম, তার থেকে নিজের নাম খুঁজে বের করার চেষ্টায় রত তিনি। রেজাউল করিমের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) রয়েছে। কিন্তু, তার এনআইডি নাম্বার অনলাইনে কোনো কাজে ব্যবহার করলে, সেখানে তার বদলে অন্য এক নারীর ছবি দেখা যায়।

একই সমস্যা হয়েছে রেজাউল করিমের স্ত্রীর এনআইডি’র ক্ষেত্রেও।

সমাধানের জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে গেলে- তাকে ভোটারদের পরিচয়ের ওই বড় বইটি ধরিয়ে দেওয়া হয়। অনেকক্ষণ খুঁজেও নিজের নাম পেলেন না রেজাউল। অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে সাহায্য চাইলে- তারা রেজাউলকে আগারগাঁও’র নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে যেতে বললেন। এর বাইরে তাকে আর কিছুই জানালেন না ওই কর্মকর্তারা।

তখন বেলা গড়িয়ে দুপুর, অফিসের কর্মকর্তারা দুপুরের খাবার খেতে প্রস্তুত হচ্ছেন।

হঠাৎ করে অফিসের এক কোণ থেকে হট্টগোল শুরু হলো। জনৈক লোক ঝড়ের বেগে অফিসে ঢুকে চ্যাঁচাতে শুরু করলেন। তার চিৎকারের সারকথা হলো, এ অফিস থেকে কেউ একজন তাকে ফোন করে জানিয়েছে, তার সব কাগজপত্র ভুয়া। সেই লোকই অফিসে এসে- তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছে।

ইসি’র কর্মকর্তারা জানালেন, তারা ওই ব্যক্তিকে ফোন করেননি। রেগে খাপ্পা হয়ে থাকা লোকটি পকেট থেকে ফোন বের করে ওই নাম্বারে কল দিতেই- অফিসের মধ্যেই কল বেজে উঠল।

ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরে কথা বলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদক । সারওয়ার (ছদ্মনাম) বলেন, “আমি দেশের বাইরে কাজ করি। আমার এনআইডি, পাসপোর্ট, আর এসএসসি’র সার্টিফিকেটে নাম ও জন্মতারিখ ভিন্ন ভিন্ন। দেশে ফিরে নির্বাচন কমিশনের অফিসে আসি এগুলো ঠিক করতে। এক কর্মকর্তা বললেন, তাকে ৩৫ হাজার টাকা দিলে তিনি সব কাগজপত্র ঠিক করে দেবেন।”

সাম্প্রতিক অতীতে কেউ এনআইডি ছাড়াই পাসপোর্ট নবায়ন করা বা নতুন পাসপোর্ট তৈরি করতে পারতেন। তবে সব ই-পাসপোর্টের জন্য এনআইডির দরকার হয়। এর আগে সারওয়ার এনআইডি ছাড়াই কাজ চালাতে পারতেন। কিন্তু সম্প্রতি নিজের এনআইডিতে ভুল দেখতে পেয়ে- সেগুলো ঠিক করার মিশনে নামেন তিনি।

“আমি জানতাম এখানে কেউ ঘুষ ছাড়া কাজ করে না। শিক্ষাবোর্ডে আমার একজন পরিচিত ছিল। তাই সরাসরি সেখানে যোগাযোগ করে দুই সপ্তাহের কম সময়ে সার্টিফকেট ঠিক করে ফেলি। যখন স্থানীয় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা জানতে পারল- আমি তাদেরকে এড়িয়ে সার্টিফিকেট ঠিক করে ফেলেছি, তারা আমকে এ পথে হয়রানি করার চেষ্টা করল,” সারওয়ার বলেন।

শিক্ষাবোর্ডে থাকা সারওয়ারের পরিচিত ব্যক্তিটি তাকে নিশ্চিত করেছিলেন- তার কাগজপত্র জাল ছিল না। তিনি নির্বাচন কমিশনের যে কর্মকর্তা এমনটা বলেছিলেন, তাকে খুঁজতে পরামর্শ দেন। সারওয়ার যখন বলেছিলেন- তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ দায়ের করবেন, তখন নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা পিছু হটেছিলেন।

তবে সারওয়ার এখনো তার সংশোধিত এনআইডি কার্ডের অপেক্ষায় আছেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, স্থানীয় অফিসের ওই কর্মকর্তারা একটা শিক্ষা পেয়েছে এবং তারা আর সারওয়ারকে বেশি হয়রানি করবেন না।

সারওয়ারের এ ঘটনা একটি ব্যতিক্রম। তিনি ভাগ্যবান বলেই অল্পতে সমাধান পেয়েছেন। তা নাহলে স্রেফ এনআইডি সংশোধনের জন্যও তাকে ‘ঠিক মানুষ ধরে’, ঘুষের টাকা পকেটে রেখে মাঠে নামতে হতো।

বেশিরভাগক্ষেত্রেই মানুষজনকে রেজাউলের করিমের ভাগ্যবরণ করতে হয়। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌড়ানো, কর্মকর্তাদের কাছে ভুল সংশোধনের ধর্ণা দিয়ে পড়ে থাকা; এ ধরনের হয়রানির চক্করে পড়তে হয় তাদেরকে।

ভোটার তালিকা আপডেট ও ডিজিটাইজ করার প্রথম বছরে– এনআইডিতে ব্যক্তির বানান ও জন্মতারিখ ভুলের মতো ঘটনা অহরহ ঘটেছে।

এ ধরনের সংশোধনের কোনো সমন্বিত সমাধান নেই। কারণ প্রতিটি সমস্যার জন্য ভিন্ন ধরনের কাগজপত্র ও আলাদা আলাদা অফিসে যেতে হয়। যেমন, এনআইডিতে নামের বানানে ভুল হলে- দরকার হবে জন্মসনদের। আবার বয়স ঠিক করতে হলে, দেখাতে হবে অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট।

সার্টিফিকেট সংশোধনের ক্ষেত্রে এভিডেভিট, প্রকাশিত বিজ্ঞাপন, ও আবেদনপত্র (এখন অনলাইনে সম্ভব) ইত্যাদি কাগজপত্রের দরকার হয়। অন্যদিকে পাসপোর্ট সংশোধনের প্রক্রিয়াটিও এনআইডি সংশোধন প্রক্রিয়ার মতোই কিছুটা একই।

ধাপে ধাপে এসব প্রক্রিয়া প্রথমে শুনলে জটিল বলে মনে হয় না (এ প্রক্রিয়ায় রয়েছে কিছু কাগজপত্র জমা দেওয়া ও সংশোধনের আবেদন করা)। কিন্তু যেই না কাজ শুরু হয়, বাস্তবতা তখন পুরো ভিন্নরূপে দাঁড়ায়।

‘পুরোনো এনআইডিগুলো ভুলে ভর্তি ছিল। মানুষ ছোটখাটো ভুল নিয়ে মাথা ঘামাত না। যেসব কর্মকর্তা তথ্য সংগ্রহ করতেন, ঠিক-ভুল নিয়ে তারাও খুব একটা মাথা ঘামাতেন না,’ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘ভুল নাম সংশোধনের জন্য আপনার জন্মসনদের প্রয়োজন: প্রক্রিয়াটি শুনতে হয়তো সহজ মনে হয়। কিন্তু, বাস্তবে আপনার আরও অনেক কাগজপত্র ও শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রায়ই মানুষজনের কাছে দরকারি কাগজপত্রগুলো থাকে না’।

‘উদাহরণস্বরূপ, বয়স ঠিক করতে চাওয়া ব্যক্তির যদি শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট না থাকে, তাহলে তাকে অসংখ্য হয়রানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে, কর্মকর্তাদের টাকা দিলে কোনো সমস্যাই আর বড় সমস্যা থাকে না। ঘুষ দিলে সার্টিফিকেট ছাড়াই বয়স ঠিক হয়ে যায়’- ওই কর্মকর্তা বলেন।

‘যে সাধারণ কাজটা শেষ করতে দুই দিনের বেশি লাগার কথা নয়, তার জন্যও মাসের পর মাস লেগে যায়। এ সরকারি কর্মকর্তারা কীরকম রুক্ষ আচরণ করেন- সেটা তো দেখেছেনই। তারা সহায়তা করতে চান না, বিশেষত আমরা সাধারণ মানুষ বলে। আমাদের শিক্ষাদীক্ষা কম, মামা-চাচার জোর নেই,’ হতাশ রেজাউল বলেন। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, কিন্তু তখনো তিনি জানেন না কীভাবে বা কখন তার সমস্যার সমাধান হবে।

নথিপত্রের ভুল সংশোধন বা উত্তোলনের এ সমস্যাগুলো কেবল নির্বাচন কমিশনের অফিসগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়।

রাজবাড়ীর পাসপোর্ট অফিসে লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছেন নিয়ামুল ইসলাম নামক এক তরুণ। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

‘আমি একবার পাংশন উপজেলার এক লোককে পাসপোর্টে নাম ঠিক করার জন্য অফিসের কর্মকর্তাকে বলতে দেখি। ওই কর্মকর্তা তার কাছে ৩ লাখ টাকা চেয়ে বসে। এ অফিস থেকে কেউ খুশি মনে বের হতে পারে না,’ বলেন নিয়ামুল।

সার্টিফিকেট ঠিক করাতে হলেও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় সাধারণ মানুষকে।

কামিল সার্টিফিকেট হারিয়ে ফেলেছেন- এমন এক মাদ্রাসা শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ শিক্ষক বলেন, ‘কাগজপত্র নিয়ে আমি ঢাকায় শিক্ষাবোর্ডে যাই। সেখানে গেলে আমাকে জানানো হয়, সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না; কারণ তার জন্য আমার কামিল পড়ার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ থেকে আবেদনপত্রের প্রয়োজন হবে’।

‘তারা নির্দেশনাগুলোও ঠিকমতো দেয় না। কিন্তু, আমি যদি ঠিক জায়গায় টাকা ফেলতাম, তাহলে আর এসব ঝামেলা পোহাতে হতো না। বৈধ পথে কাজ করতে যাওয়াটাই কঠিন,’ তিনি বলেন।

নির্বাচন কমিশনের উপসচিব ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আর্জুর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কমিশন সাধারণ সেবাগ্রহীতাদের এ ভোগান্তির বিষয়ে অবগত কিনা।

‘ঘুষ চায় কারা? তারা কি আমাদের কর্মকর্তা- নাকি দালালের দল? আমরা সবাই মনে করি- সরকারি অফিসে কর্মকর্তারা সবসময় ঘুষ খায়। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনে এমনটা হয় না,’ আসাদুজ্জামান বলেন।

‘কমিশন অফিসের সামনে দালাল থাকতে পারে, কিন্তু ভোটাররা যদি অফিস থেকে সাহায্য চায়, তাহলে কর্মকর্তারা সাহায্য করবেন’।

সারওয়ারের কাছে একজন নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্বাস করার মতো না… এটা হতে পারে না’।

‘তার (সারওয়ার) উচিত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা। দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি- যাতে ভোটারেরা হয়রানির শিকার না হন। কিন্তু হ্যাঁ, সব কর্মকর্তা এক না’- আসাদুজ্জামান উত্তর দেন।

বর্তমানে অনলাইনে এনআইডির ভুল সংশোধন করার পথ রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের অনলাইন সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই, অনেকে জানেনও না। পাশাপাশি নাম বা বয়স ঠিক করার মতো সমস্যার চেয়ে জটিল; অন্য কোনো সমস্যা হলে তা অনলাইনে সমাধান করা যায় না।

‘আমরা এখন অনলাইনে যে প্রক্রিয়া তৈরি করেছি- তা খুব দ্রুত ও সহজ। যখন আপনি পরিবর্তনের আবেদন করবেন, তখন আপনি দেখতে পারবেন- কী কী কাগজপত্র আপনাকে দেখাতে হবে। ঘরে বসেই এটা করা সম্ভব। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটা কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন- কেউ যদি তাদের মা-বাবা’র নাম পুরোপুরি বদলাতে চায়, তখন প্রতিটি ধাপে তদন্ত চালাতে হয়। ভোটাররা অনেক সময় এসব প্রক্রিয়ার সব ধাপ অনুসরণ করেন না’- বলেন আসাদুজ্জামান।

‘আমরা কোনো জান্নাতে বাস করছি না, আর আমরা ফেরেশতাও নই। আমাদের কর্মকর্তারা যে শতভাগ নির্ভুল কাজ করেন, তাও নয়। কিছু সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু, পুরো ব্যবস্থাটি খুব ভালো, আর এটি দারুণভাবে কাজও করছে,’ আসাদুজ্জামান আরও বলেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের কাছে এসব সরকারি অফিসে ভুক্তভোগীদের জানানো ঘুষ সংস্কৃতির অভিযোগগুলো এবং কেন এসব অফিস জনসেবাকে পুরোপুরি ডিজিটাইজ করতে পারে না- ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

‘অন্য যেকোনো জনসেবা খাতের মতো, জবাবদিহিতা না থাকায় এনআইডি ও পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ ও অন্যান্য দুর্নীতিকে স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছে’- ইফতেখারুজ্জামান বলেন।

‘এসব সেবাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাইজ করার ব্যর্থতা- কিছুটা প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও সম্পদের অভাবে। কিন্তু এর আরেকটি বড় কারণ হলো, যাদের এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা- তারাও এসব দুর্নীতির সুবিধাভোগী’- যোগ করেন ইফতেখারুজ্জামান।

সূত্র: দি বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাড।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা

কেন এত জটিল বাংলাদেশে এনআইডি, পাসপোর্ট এবং জন্ম সনদ সংশোধন করতে

আপডেট সময় ১২:১৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
বাংলাদেশে এনআইডি, পাসপোর্ট এবং জন্ম সনদ সংশোধন করতে অনেক জটিলতা পোহাতে হয়। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌড়ানো, কর্মকর্তাদের কাছে ভুল সংশোধনের ধর্ণা দিয়ে পড়ে থাকা; এ ধরনের হয়রানির চক্করে পড়তে হয় তাদেরকে। তা নাহলে স্রেফ এনআইডি সংশোধনের জন্যও ‘ঠিক মানুষ ধরে’, ঘুষের টাকা পকেটে রেখে মাঠে নামতে হয়। নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অফিসগুলোর অভ্যন্তরীণ অস্বচ্ছ আমলাতন্ত্র ও নির্দেশনার কারণে প্রতিদিন লাখো মানুষকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।

ঢাকার একটি স্থানীয় নির্বাচন কমিশন (ইসি) অফিসে খুব মনোযোগের সঙ্গে একটি বইয়ের পাতা ওল্টাচ্ছেন রেজাউল করিম। বইয়ের ভেতর কয়েক হাজার নাম, তার থেকে নিজের নাম খুঁজে বের করার চেষ্টায় রত তিনি। রেজাউল করিমের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) রয়েছে। কিন্তু, তার এনআইডি নাম্বার অনলাইনে কোনো কাজে ব্যবহার করলে, সেখানে তার বদলে অন্য এক নারীর ছবি দেখা যায়।

একই সমস্যা হয়েছে রেজাউল করিমের স্ত্রীর এনআইডি’র ক্ষেত্রেও।

সমাধানের জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে গেলে- তাকে ভোটারদের পরিচয়ের ওই বড় বইটি ধরিয়ে দেওয়া হয়। অনেকক্ষণ খুঁজেও নিজের নাম পেলেন না রেজাউল। অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে সাহায্য চাইলে- তারা রেজাউলকে আগারগাঁও’র নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে যেতে বললেন। এর বাইরে তাকে আর কিছুই জানালেন না ওই কর্মকর্তারা।

তখন বেলা গড়িয়ে দুপুর, অফিসের কর্মকর্তারা দুপুরের খাবার খেতে প্রস্তুত হচ্ছেন।

হঠাৎ করে অফিসের এক কোণ থেকে হট্টগোল শুরু হলো। জনৈক লোক ঝড়ের বেগে অফিসে ঢুকে চ্যাঁচাতে শুরু করলেন। তার চিৎকারের সারকথা হলো, এ অফিস থেকে কেউ একজন তাকে ফোন করে জানিয়েছে, তার সব কাগজপত্র ভুয়া। সেই লোকই অফিসে এসে- তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছে।

ইসি’র কর্মকর্তারা জানালেন, তারা ওই ব্যক্তিকে ফোন করেননি। রেগে খাপ্পা হয়ে থাকা লোকটি পকেট থেকে ফোন বের করে ওই নাম্বারে কল দিতেই- অফিসের মধ্যেই কল বেজে উঠল।

ওই ব্যক্তির সঙ্গে পরে কথা বলেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদক । সারওয়ার (ছদ্মনাম) বলেন, “আমি দেশের বাইরে কাজ করি। আমার এনআইডি, পাসপোর্ট, আর এসএসসি’র সার্টিফিকেটে নাম ও জন্মতারিখ ভিন্ন ভিন্ন। দেশে ফিরে নির্বাচন কমিশনের অফিসে আসি এগুলো ঠিক করতে। এক কর্মকর্তা বললেন, তাকে ৩৫ হাজার টাকা দিলে তিনি সব কাগজপত্র ঠিক করে দেবেন।”

সাম্প্রতিক অতীতে কেউ এনআইডি ছাড়াই পাসপোর্ট নবায়ন করা বা নতুন পাসপোর্ট তৈরি করতে পারতেন। তবে সব ই-পাসপোর্টের জন্য এনআইডির দরকার হয়। এর আগে সারওয়ার এনআইডি ছাড়াই কাজ চালাতে পারতেন। কিন্তু সম্প্রতি নিজের এনআইডিতে ভুল দেখতে পেয়ে- সেগুলো ঠিক করার মিশনে নামেন তিনি।

“আমি জানতাম এখানে কেউ ঘুষ ছাড়া কাজ করে না। শিক্ষাবোর্ডে আমার একজন পরিচিত ছিল। তাই সরাসরি সেখানে যোগাযোগ করে দুই সপ্তাহের কম সময়ে সার্টিফকেট ঠিক করে ফেলি। যখন স্থানীয় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা জানতে পারল- আমি তাদেরকে এড়িয়ে সার্টিফিকেট ঠিক করে ফেলেছি, তারা আমকে এ পথে হয়রানি করার চেষ্টা করল,” সারওয়ার বলেন।

শিক্ষাবোর্ডে থাকা সারওয়ারের পরিচিত ব্যক্তিটি তাকে নিশ্চিত করেছিলেন- তার কাগজপত্র জাল ছিল না। তিনি নির্বাচন কমিশনের যে কর্মকর্তা এমনটা বলেছিলেন, তাকে খুঁজতে পরামর্শ দেন। সারওয়ার যখন বলেছিলেন- তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ দায়ের করবেন, তখন নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা পিছু হটেছিলেন।

তবে সারওয়ার এখনো তার সংশোধিত এনআইডি কার্ডের অপেক্ষায় আছেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, স্থানীয় অফিসের ওই কর্মকর্তারা একটা শিক্ষা পেয়েছে এবং তারা আর সারওয়ারকে বেশি হয়রানি করবেন না।

সারওয়ারের এ ঘটনা একটি ব্যতিক্রম। তিনি ভাগ্যবান বলেই অল্পতে সমাধান পেয়েছেন। তা নাহলে স্রেফ এনআইডি সংশোধনের জন্যও তাকে ‘ঠিক মানুষ ধরে’, ঘুষের টাকা পকেটে রেখে মাঠে নামতে হতো।

বেশিরভাগক্ষেত্রেই মানুষজনকে রেজাউলের করিমের ভাগ্যবরণ করতে হয়। এক অফিস থেকে অন্য অফিসে দৌড়ানো, কর্মকর্তাদের কাছে ভুল সংশোধনের ধর্ণা দিয়ে পড়ে থাকা; এ ধরনের হয়রানির চক্করে পড়তে হয় তাদেরকে।

ভোটার তালিকা আপডেট ও ডিজিটাইজ করার প্রথম বছরে– এনআইডিতে ব্যক্তির বানান ও জন্মতারিখ ভুলের মতো ঘটনা অহরহ ঘটেছে।

এ ধরনের সংশোধনের কোনো সমন্বিত সমাধান নেই। কারণ প্রতিটি সমস্যার জন্য ভিন্ন ধরনের কাগজপত্র ও আলাদা আলাদা অফিসে যেতে হয়। যেমন, এনআইডিতে নামের বানানে ভুল হলে- দরকার হবে জন্মসনদের। আবার বয়স ঠিক করতে হলে, দেখাতে হবে অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট।

সার্টিফিকেট সংশোধনের ক্ষেত্রে এভিডেভিট, প্রকাশিত বিজ্ঞাপন, ও আবেদনপত্র (এখন অনলাইনে সম্ভব) ইত্যাদি কাগজপত্রের দরকার হয়। অন্যদিকে পাসপোর্ট সংশোধনের প্রক্রিয়াটিও এনআইডি সংশোধন প্রক্রিয়ার মতোই কিছুটা একই।

ধাপে ধাপে এসব প্রক্রিয়া প্রথমে শুনলে জটিল বলে মনে হয় না (এ প্রক্রিয়ায় রয়েছে কিছু কাগজপত্র জমা দেওয়া ও সংশোধনের আবেদন করা)। কিন্তু যেই না কাজ শুরু হয়, বাস্তবতা তখন পুরো ভিন্নরূপে দাঁড়ায়।

‘পুরোনো এনআইডিগুলো ভুলে ভর্তি ছিল। মানুষ ছোটখাটো ভুল নিয়ে মাথা ঘামাত না। যেসব কর্মকর্তা তথ্য সংগ্রহ করতেন, ঠিক-ভুল নিয়ে তারাও খুব একটা মাথা ঘামাতেন না,’ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘ভুল নাম সংশোধনের জন্য আপনার জন্মসনদের প্রয়োজন: প্রক্রিয়াটি শুনতে হয়তো সহজ মনে হয়। কিন্তু, বাস্তবে আপনার আরও অনেক কাগজপত্র ও শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রায়ই মানুষজনের কাছে দরকারি কাগজপত্রগুলো থাকে না’।

‘উদাহরণস্বরূপ, বয়স ঠিক করতে চাওয়া ব্যক্তির যদি শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট না থাকে, তাহলে তাকে অসংখ্য হয়রানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে, কর্মকর্তাদের টাকা দিলে কোনো সমস্যাই আর বড় সমস্যা থাকে না। ঘুষ দিলে সার্টিফিকেট ছাড়াই বয়স ঠিক হয়ে যায়’- ওই কর্মকর্তা বলেন।

‘যে সাধারণ কাজটা শেষ করতে দুই দিনের বেশি লাগার কথা নয়, তার জন্যও মাসের পর মাস লেগে যায়। এ সরকারি কর্মকর্তারা কীরকম রুক্ষ আচরণ করেন- সেটা তো দেখেছেনই। তারা সহায়তা করতে চান না, বিশেষত আমরা সাধারণ মানুষ বলে। আমাদের শিক্ষাদীক্ষা কম, মামা-চাচার জোর নেই,’ হতাশ রেজাউল বলেন। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, কিন্তু তখনো তিনি জানেন না কীভাবে বা কখন তার সমস্যার সমাধান হবে।

নথিপত্রের ভুল সংশোধন বা উত্তোলনের এ সমস্যাগুলো কেবল নির্বাচন কমিশনের অফিসগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়।

রাজবাড়ীর পাসপোর্ট অফিসে লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছেন নিয়ামুল ইসলাম নামক এক তরুণ। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

‘আমি একবার পাংশন উপজেলার এক লোককে পাসপোর্টে নাম ঠিক করার জন্য অফিসের কর্মকর্তাকে বলতে দেখি। ওই কর্মকর্তা তার কাছে ৩ লাখ টাকা চেয়ে বসে। এ অফিস থেকে কেউ খুশি মনে বের হতে পারে না,’ বলেন নিয়ামুল।

সার্টিফিকেট ঠিক করাতে হলেও অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় সাধারণ মানুষকে।

কামিল সার্টিফিকেট হারিয়ে ফেলেছেন- এমন এক মাদ্রাসা শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ শিক্ষক বলেন, ‘কাগজপত্র নিয়ে আমি ঢাকায় শিক্ষাবোর্ডে যাই। সেখানে গেলে আমাকে জানানো হয়, সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না; কারণ তার জন্য আমার কামিল পড়ার মাদ্রাসার অধ্যক্ষ থেকে আবেদনপত্রের প্রয়োজন হবে’।

‘তারা নির্দেশনাগুলোও ঠিকমতো দেয় না। কিন্তু, আমি যদি ঠিক জায়গায় টাকা ফেলতাম, তাহলে আর এসব ঝামেলা পোহাতে হতো না। বৈধ পথে কাজ করতে যাওয়াটাই কঠিন,’ তিনি বলেন।

নির্বাচন কমিশনের উপসচিব ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আর্জুর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কমিশন সাধারণ সেবাগ্রহীতাদের এ ভোগান্তির বিষয়ে অবগত কিনা।

‘ঘুষ চায় কারা? তারা কি আমাদের কর্মকর্তা- নাকি দালালের দল? আমরা সবাই মনে করি- সরকারি অফিসে কর্মকর্তারা সবসময় ঘুষ খায়। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনে এমনটা হয় না,’ আসাদুজ্জামান বলেন।

‘কমিশন অফিসের সামনে দালাল থাকতে পারে, কিন্তু ভোটাররা যদি অফিস থেকে সাহায্য চায়, তাহলে কর্মকর্তারা সাহায্য করবেন’।

সারওয়ারের কাছে একজন নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্বাস করার মতো না… এটা হতে পারে না’।

‘তার (সারওয়ার) উচিত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা। দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি- যাতে ভোটারেরা হয়রানির শিকার না হন। কিন্তু হ্যাঁ, সব কর্মকর্তা এক না’- আসাদুজ্জামান উত্তর দেন।

বর্তমানে অনলাইনে এনআইডির ভুল সংশোধন করার পথ রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের অনলাইন সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই, অনেকে জানেনও না। পাশাপাশি নাম বা বয়স ঠিক করার মতো সমস্যার চেয়ে জটিল; অন্য কোনো সমস্যা হলে তা অনলাইনে সমাধান করা যায় না।

‘আমরা এখন অনলাইনে যে প্রক্রিয়া তৈরি করেছি- তা খুব দ্রুত ও সহজ। যখন আপনি পরিবর্তনের আবেদন করবেন, তখন আপনি দেখতে পারবেন- কী কী কাগজপত্র আপনাকে দেখাতে হবে। ঘরে বসেই এটা করা সম্ভব। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটা কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন- কেউ যদি তাদের মা-বাবা’র নাম পুরোপুরি বদলাতে চায়, তখন প্রতিটি ধাপে তদন্ত চালাতে হয়। ভোটাররা অনেক সময় এসব প্রক্রিয়ার সব ধাপ অনুসরণ করেন না’- বলেন আসাদুজ্জামান।

‘আমরা কোনো জান্নাতে বাস করছি না, আর আমরা ফেরেশতাও নই। আমাদের কর্মকর্তারা যে শতভাগ নির্ভুল কাজ করেন, তাও নয়। কিছু সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু, পুরো ব্যবস্থাটি খুব ভালো, আর এটি দারুণভাবে কাজও করছে,’ আসাদুজ্জামান আরও বলেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের কাছে এসব সরকারি অফিসে ভুক্তভোগীদের জানানো ঘুষ সংস্কৃতির অভিযোগগুলো এবং কেন এসব অফিস জনসেবাকে পুরোপুরি ডিজিটাইজ করতে পারে না- ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

‘অন্য যেকোনো জনসেবা খাতের মতো, জবাবদিহিতা না থাকায় এনআইডি ও পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ ও অন্যান্য দুর্নীতিকে স্বাভাবিক করে ফেলা হয়েছে’- ইফতেখারুজ্জামান বলেন।

‘এসব সেবাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাইজ করার ব্যর্থতা- কিছুটা প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও সম্পদের অভাবে। কিন্তু এর আরেকটি বড় কারণ হলো, যাদের এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা- তারাও এসব দুর্নীতির সুবিধাভোগী’- যোগ করেন ইফতেখারুজ্জামান।

সূত্র: দি বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাড।