হবিগঞ্জ ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা Logo চুনারুঘাটে ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী পর্যটকের মৃত্যু Logo অসুস্থ সাবেক কৃতি ফুটবলার আকছিরের পাশে চুনারুঘাট উপজেলা ফুটবল একাডেমি  Logo আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন Logo শহীদ মিনারে আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের শ্রদ্ধা নিবেদন Logo সীমান্তের ত্রাস গণধর্ষণ মামলার আসামী আবুল গ্রেপ্তার Logo চুনারুঘাটে  স্ত্রীর যৌতুক মামলায় বিয়ে পাগল স্বামী গ্রেপ্তার Logo নবাগত ইউএনওর সাথে চুনারুঘাট প্রেসক্লাবের পরিচিত সভা ও মতবিনিময় Logo মাধবপুরে বিএনপির কর্মী সভা Logo ইউএনও’র পরিচিতি সভা বর্জন করলেন চুনারুঘাটে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ

বানিয়াচংয়ে মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণকারীরা ফেইসবুকে পতিতা পোস্ট

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০২২
  • ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

বানিয়াচংয়ে গণধর্ষনের পর ধর্ষিতা তরুনীকে পতিতা আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে।গণ ধর্ষনের ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার গভীর রাতে বানিয়াচং উপজেলার ৫ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়নের তেলঘড়ি গ্রামে। গত ২২ (এপ্রিল)মামলা দায়ের হলেও অভিযুক্তরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তরুনীকে মানসিকভাবে দূর্বল করতে প্রথমেই জোরপূর্ব্বক দেহ ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ধর্ষনকারীরা।তরুণীকে ধর্ষন করার রাতেই গণধর্ষনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয় এমএ মোমেন নামের এক ব্যাক্তির ফেসবুক আইডি থেকে।
নির্যাতিত তরুনী ক্ষোভে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে উদ্ধারকারী লোকজন তাঁকে থামিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
এলাকাবাসী ও মামলার বিবরণে জানা যায়,হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর গ্রামের দরিদ্র তরুনী বানিয়াচং উপজেলার তেলঘড়ি গ্রামের কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মালিকানাধীন পাশ্ববর্তী মার্কুলীবাজারের একটি বিউটি পার্লারে মাসিক বেতনভূক্ত হিসেবে কাজ করতেন।
ওই একই পার্লারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মেয়ে কেয়া বৈষ্ণবও কাজ করেন।
কাজ শেষে তরুনী পার্লার মালিক কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের বাড়িতে ফিরে এসে নিজের জন্য আলাদা পাক করে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে একই রুমে ঘুমান।
ঘটনার রাতে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে ঘুমালে রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বাইরে বের হওয়া মাত্রই আগে থেকে ওতপেতে থাকা সংঘবদ্ধ দূর্বৃত্তের দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বসত বাড়ি থেকে দূরের নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে। ধর্ষনের দায়ে অভিযুক্তরা হলেন তেলঘড়ি গ্রামের অমৃত বৈষ্ণব,সচীন্দ্র বৈষ্ণব,নান্টু বৈষ্ণব,নেপাল বৈষ্ণব।
পরবর্তীতে তেলঘড়ি প্রাইমারী বিদ্যালয়ের বারান্দায় নিয়ে পুনরায় ধর্ষন করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং পতিতা হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে অভিযুক্তরা।
এদিকে কেয়া বৈষ্ণব ঘুম থেকে জেগে পাশে ওই তরুনীকে দেখতে না পেয়ে তার বাবা কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকে জানালে তারা অনেক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে তরুনীর সন্ধান পেয়ে উদ্ধার করতে যান।
এ সময় কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকেও দূর্বৃত্তরা বেঁধে ফেলে এবং নির্যাতিতা তরুনী ও তাকে মারপিট করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণধন বৈষ্ণব ও তরুনী এক পর্যায়ে কৌশলে পালিয়ে আসলেও গণধর্ষনের শিকার তরুনী বেশি অসুস্থ হওয়ায় ও ধর্ষকদের ভয়ে তরুনীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
কিছুটা সুস্থ হয়ে নির্যাতিত তরুনী এক আত্মীয়র সহযোগিতায় ২১ এপ্রিল বানিয়াচং থানায় অভিযোগ দায়ের করতে এসে বানিয়াচং থানার কর্মরত ওইদিনের ডিউটি অফিসারের অসহযোগিতার কারনে ওইদিন থানা থেকে ফেরত যেতে হয়।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)এমরান হোসেন বিষয়টি অবগত হয়ে ২২ এপ্রিল তরুনীকে খবর দিয়ে থানায় এনে অভিযোগ আমলে নেন।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণব জানান,মেয়েটি আমার পার্লারে কাজ করতো।
বিভিন্ন সময়ে ওই বখাটেরা মেয়েটিকে উত্যক্ত করার বিরোধীতা করায় আমাকে ও মেয়েটিকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়েছিলো।
আমি মেয়েটিকে উদ্ধার ও মামলার স্বাক্ষী হওয়ার কারনে আমি বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এছাড়া আমার পরিবারকে গ্রামের মধ্যে একঘরে করে রাখা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমারের নির্দেশে।
এ ব্যাপারে মেয়েটির এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধর্ষন হইল,নির্যাতিত হইল। এখন আবার উল্টা চরিত্র নিয়া দোষ দিচ্ছে। গরীব বলে কি এরা বিচার পাবেনা! আসামীরা বিভিন্নভাবে ভয় দেখাচ্ছে সাক্ষীদেরকে।
আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।অপরাধী যেই হোক না কেন এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

চুনারুঘাটে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা নব অভিযাত্রা উপলক্ষে পাঠক ফোরামের আলোচনা সভা

বানিয়াচংয়ে মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ধর্ষণকারীরা ফেইসবুকে পতিতা পোস্ট

আপডেট সময় ০৩:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০২২

বানিয়াচংয়ে গণধর্ষনের পর ধর্ষিতা তরুনীকে পতিতা আখ্যায়িত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে।গণ ধর্ষনের ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার গভীর রাতে বানিয়াচং উপজেলার ৫ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়নের তেলঘড়ি গ্রামে। গত ২২ (এপ্রিল)মামলা দায়ের হলেও অভিযুক্তরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তরুনীকে মানসিকভাবে দূর্বল করতে প্রথমেই জোরপূর্ব্বক দেহ ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে ধর্ষনকারীরা।তরুণীকে ধর্ষন করার রাতেই গণধর্ষনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয় এমএ মোমেন নামের এক ব্যাক্তির ফেসবুক আইডি থেকে।
নির্যাতিত তরুনী ক্ষোভে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে উদ্ধারকারী লোকজন তাঁকে থামিয়ে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
এলাকাবাসী ও মামলার বিবরণে জানা যায়,হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর গ্রামের দরিদ্র তরুনী বানিয়াচং উপজেলার তেলঘড়ি গ্রামের কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মালিকানাধীন পাশ্ববর্তী মার্কুলীবাজারের একটি বিউটি পার্লারে মাসিক বেতনভূক্ত হিসেবে কাজ করতেন।
ওই একই পার্লারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের মেয়ে কেয়া বৈষ্ণবও কাজ করেন।
কাজ শেষে তরুনী পার্লার মালিক কৃষ্ণধন বৈষ্ণবের বাড়িতে ফিরে এসে নিজের জন্য আলাদা পাক করে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে একই রুমে ঘুমান।
ঘটনার রাতে কেয়া বৈষ্ণবের সাথে ঘুমালে রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বাইরে বের হওয়া মাত্রই আগে থেকে ওতপেতে থাকা সংঘবদ্ধ দূর্বৃত্তের দল অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বসত বাড়ি থেকে দূরের নির্জন স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে। ধর্ষনের দায়ে অভিযুক্তরা হলেন তেলঘড়ি গ্রামের অমৃত বৈষ্ণব,সচীন্দ্র বৈষ্ণব,নান্টু বৈষ্ণব,নেপাল বৈষ্ণব।
পরবর্তীতে তেলঘড়ি প্রাইমারী বিদ্যালয়ের বারান্দায় নিয়ে পুনরায় ধর্ষন করে ভিডিও চিত্র ধারণ করে এবং পতিতা হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করতে মারপিট করে অভিযুক্তরা।
এদিকে কেয়া বৈষ্ণব ঘুম থেকে জেগে পাশে ওই তরুনীকে দেখতে না পেয়ে তার বাবা কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকে জানালে তারা অনেক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে তরুনীর সন্ধান পেয়ে উদ্ধার করতে যান।
এ সময় কৃষ্ণধন বৈষ্ণবকেও দূর্বৃত্তরা বেঁধে ফেলে এবং নির্যাতিতা তরুনী ও তাকে মারপিট করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
কৃষ্ণধন বৈষ্ণব ও তরুনী এক পর্যায়ে কৌশলে পালিয়ে আসলেও গণধর্ষনের শিকার তরুনী বেশি অসুস্থ হওয়ায় ও ধর্ষকদের ভয়ে তরুনীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
কিছুটা সুস্থ হয়ে নির্যাতিত তরুনী এক আত্মীয়র সহযোগিতায় ২১ এপ্রিল বানিয়াচং থানায় অভিযোগ দায়ের করতে এসে বানিয়াচং থানার কর্মরত ওইদিনের ডিউটি অফিসারের অসহযোগিতার কারনে ওইদিন থানা থেকে ফেরত যেতে হয়।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)এমরান হোসেন বিষয়টি অবগত হয়ে ২২ এপ্রিল তরুনীকে খবর দিয়ে থানায় এনে অভিযোগ আমলে নেন।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণধন বৈষ্ণব জানান,মেয়েটি আমার পার্লারে কাজ করতো।
বিভিন্ন সময়ে ওই বখাটেরা মেয়েটিকে উত্যক্ত করার বিরোধীতা করায় আমাকে ও মেয়েটিকে দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়েছিলো।
আমি মেয়েটিকে উদ্ধার ও মামলার স্বাক্ষী হওয়ার কারনে আমি বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এছাড়া আমার পরিবারকে গ্রামের মধ্যে একঘরে করে রাখা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু কুমারের নির্দেশে।
এ ব্যাপারে মেয়েটির এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ধর্ষন হইল,নির্যাতিত হইল। এখন আবার উল্টা চরিত্র নিয়া দোষ দিচ্ছে। গরীব বলে কি এরা বিচার পাবেনা! আসামীরা বিভিন্নভাবে ভয় দেখাচ্ছে সাক্ষীদেরকে।
আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।অপরাধী যেই হোক না কেন এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবেনা।