হবিগঞ্জ ১১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪, ৯ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়? Logo চুনারুঘাটে ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য শিক্ষকতা পেশার অরবিন্দ দত্তের সমাপ্তি Logo ব্যারিস্টার সুমন এমপিকে সংবর্ধনা দিল চুনারুঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি Logo চুনারুঘাটে ১৭ কেজি গাঁজা সহ কারবারি গ্রেপ্তার Logo ৪র্থ বারের মতো জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন চুনারুঘাট থানার এসআই লিটন রায় Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনাকারী সোহাগ গ্রেফতার Logo ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় হত্যা মামলার আসামি জালাল গ্রেপ্তার Logo ব্যারিস্টার সুমনকে হত্যার পরিকল্পনার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন Logo চুনারুঘাটে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হলেন তৌফিক মিয়া তালুকদার Logo ব্যারিস্টার সুমনের হত্যার পরিকল্পনারকারীদের গ্রেফতারে দাবীতে চুনারুঘাটে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ 

চুনারুঘাট সরকারি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী ও প্রত্যাশা, সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম

সবুজেঘেরা চা বাগান, উঁচু-নিচু টিলা ভূমি। তার পাশ দিয়ে বহে গেছে খোয়াই নদী। সবুজের ঢেউখেলা পরিবেশ ও নদীর তরঙ্গ প্রবাহ মধুরস আবহে গড়ে ওঠা চুনারুঘাট সরকারি কলেজ।

কালের বিবর্তনে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশে ইতিমধ্যে ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। স্বাধীনতাত্তোর কালে প্রতিষ্ঠিত এ মহাবিদ্যালয়টি শিক্ষানুরাগী কিছু অগ্রসর চিন্তার ব্যক্তিবর্গের কায়িকশ্রম ও আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও সরকারি কলেজে পরিণত হয়ে প্রান্তিক জনপদের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সিঁড়ি আজ হাতের নাগালে।

হাঁটি- হাঁটি, এক পা-দু’পা করে এগিয়ে চলা বিদ্যা নিকেতনটির সুবর্ণজয়ন্তী সত্যিই এলাকাবাসীর জন্য গর্বের। যাঁরা এই কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে ওতোপ্রোত ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁদের অনেকে হয়তো ইহলোকে নেই কিন্তু কর্মে তাঁরা যুগে যুগে চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ইতহাসে চিরঞ্জীব।

সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট একটি অন্যতম উপজেলা। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের আগে এই উপজেলা থানা হিসেবে ছিল। বর্তমান স্থানে থানা প্রতিষ্ঠার আগে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে আসাম প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক বর্তমান মিরাশি ইউনিয়নের অন্তর্গত মুচিকান্দি নামক স্থানে থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে আসাম প্রাদেশিক সরকারের গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে বর্তমান স্থানে থানা সদর স্থানান্তরিত হয় যা এখন চুনারুঘাট উপজেলা হিসেবে পরিগণিত।

ব্রিটিশ আমলের পূর্বে এদেশে প্রায় তিন লক্ষ পাঠশালা ছিল যেখানে সর্বসাধারণের শিশু কিশোররা পাঠগ্রহণ করার সুযোগ পেত। সেই পাঠশালা গুলো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার প্রাইমারি স্কুলে পরিণত করে এ থেকে চুনারুঘাট ও বাদ যায়নি।

১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের চুনারঘাট সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে, ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে মিরাশি উচ্চ বিদ্যালয় ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

অনেকগুলো উচ্চ বিদ্যালয় থাকলেও কলেজ বা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক যুগ প্রতীক্ষা করতে হয়। অবশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চুনারুঘাটে শিক্ষা বিস্তারের জ্ঞান সাধনার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন বেশ কজন মনীষী। কলেজ বার্ষিকী ৯৪ এ সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হাই লেখেন- ” দীর্ঘদিন থেকে এ থানায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়ে আসছিল। থানাবাসীর দীর্ঘদিনের ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত

মানব সভ্যতায় চুনারুঘাটের ইতিহাস প্রায় ১৫ হাজার বছর পূর্বের। চাকলাপুঞ্জি প্রত্নবস্তু তাই প্রমাণ করে। শিক্ষা বিস্তার ছাড়া মানব সভ্যতা কল্পনা করা যায় না। এই প্রত্নবস্তুগুলো প্রমাণ করে এই অঞ্চলে প্রাচীন কলেও শিক্ষার বিস্তরণ ছিল।

মধ্যযুগে চুনারঘাট কেন্দ্রিক শিক্ষা বা বিদ্যা চর্চার প্রমাণ পাই- ১৫২৩ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ ইসরাইলের লেখা বাংলাদেশের প্রথম লিখিত ফার্সি গ্রন্থ মাদানাল ফাওয়েদ’ গ্রন্থ থেকে। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত গ্রন্থে অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি বলেছেন, “এই গ্রন্থখানা পেল নিবাসী সৈয়দ এমদাদুল হক মহাশয়ের নিকট আছে।” চুনারুঘাটের অনেক ব্যক্তি শিক্ষাদিক্ষায় দেশ-বিদেশে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছেন। অগাধ জ্ঞান সাধনার জন্য সৈয়দ শাহ ইব্রাহিম দিল্লির দরবার থেকে ‘মালেক- উল- উলামা এবং সৈয়দ শাহ ইসরাইল ‘মূলক উল- উলামা’ উপাধি লাভ করেছিলেন।

এই উপজেলার কৃতি সন্তান ডঃ মুহাম্মদ রশিদ বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা ভাই চ্যান্সেলর ছিলেন। মিরাশী গ্রামের হেমাঙ্গ হেমাঙ্গ বিশ্বাস তার কাব্য প্রতিভা, রাজনৈতিক সচেতনতা ও সংগীতে পুরো ভারত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি.আর. দত্ত, পাঁচগাতিয়া নিবাসী বিজ্ঞানী ড. ক্ষতিশ চন্দ্র নাথ প্রমুখ করার লক্ষ্যে ১৮/১০/১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে ডাকবাংলা প্রাঙ্গণে থানার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমান্ডেট মানিক চৌধুরী এমপি এবং কলেজ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কমিটির সদস্যবর্গ ছিলেন কমান্ডেট মানিক চৌধুরী এমপি, সভাপতি, মোহাম্মদ মোস্তফা শহীদ এমপি সহ-সভাপতি, মোঃ আজিজুর রহমান ( ছুরুক মিয়া) সম্পাদক, মোঃ আব্দুল খালেক মাস্টার (পাকুরিয়া), মোঃ আব্দুর রউফ (হাজিপুর) কোষাধ্যক্ষ, মোঃ আবুল হোসেন নোমান চৌধুরী (নরপতি), বাবু যোগেশ চন্দ্র দেব (রাজাপুর), মোঃ ছবুর আহমদ চৌধুরী (ম্যানেজার) চণ্ডীছড়া চা বাগান, মোহাম্মদ নজর আলী (চান্দপুর চা বাগান).. মহিউদ্দীন, সিও, চুনারুঘাট, মোঃ নুরুল আমিন (শিক্ষা অফিসার), এ রসূল (মেডিকেল অফিসার), সদস্য অতঃপর এ কমিটি ১৯৭৩ খ্রিস্টব্দ তারিখের এক সভায়।

৭/৪/৭৩ তারিখ হতে চুনারঘাট পুরাতন হাসপাতালে একটি ভবনে কলেজ চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।” উল্লেখ্য, চুনারুঘাট সাহিত্য নিকেতনের কার্যালয় ও পাঠাগারের কার্যক্রম পুরনো হাসপাতাল ভবনেই পরিচালিত হত। ষাটের দশকের অন্যতম সাংস্কৃতিক কর্মী ডাক্তার মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন- “১৯৭৩ সালে চুনারুঘাটে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ক্লাস নেয়া হতো সাহিত্য নিকেতনে। ব্যবহার হতে লাগলো সাহিত্য নিকেতনের চেয়ার টেবিল আলমারি ও বই। দিনে কলেজের ক্লাস আর বিকালে সাহিত্য নিকেতন এভাবেই চলতে লাগল। কলেজ স্থানান্তরের সময় বই সমেত আলমারিও চলে গেল চুনারঘাট কলেজে। সাহিত্য নিকেতনের সকল কর্মীর অবদান ছিল কলেজ প্রতিষ্ঠায়।”

কলেজতো প্রতিষ্ঠা হলো, এখন শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি প্রয়োজন। তাই নিজস্ব জায়গার প্রয়োজন দেখা দেয়। ” শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভের জন্য দেওরগাছ নিবাসী মোঃ আব্দুল হাসিম, মোঃ আবদুল আজিদ ও মোঃ আব্দুল মান্নান তিন একর জমি কলেজের নামে

বিনামূল্যে রেজিস্ট্রি করে দিয়ে শিক্ষার প্রতি অনুরাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। (যদিও পড়ে এ জমি তাদেরকে কলেজের কাজে না লাগার জন্য ফেরৎ দেওয়া হয়েছে।

কলেজ প্রতিষ্ঠার সূচনা লগ্নে জনাব আজিজুর রহমান (ছুরুক মিয়া) সহ আরো অনেকে যে শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। হবিগঞ্জ শহরের বগলা বাজার নিবাসী শ্রী হিমাদ্রি চৌধুরীকে কলেজের প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়। নবজন্ম লাভ করেছে যে কলেজ সেই কলেজের

প্রিন্সিপালের উপর নির্ভর করে কলেজের পরিচর্যা- শুশ্রষা ও অগ্রগতির ভিত্তি। কিন্তু হবিগঞ্জ থেকে এসে এই কাজগুলো করা তার জন্য দুরূহ ছিল। “শ্রী হিমাদ্রি চৌধুরীকে কলেজের প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে জনসাধারণকে উৎসাহিত করে অর্থ সংগ্রহ, ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা, শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি, ছাত্র/ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রশাসন ও জনগণের সাথে সঠিক যোগাযোগ করে কলেজকে এগিয়ে নিতে আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জিত না হওয়ায় ১৮/৫/৭৭ তারিখে মোঃ আব্দুল হাইকে কলেজের প্রিন্সিপাল ( বর্তমানে ভাইস প্রিন্সিপাল) নিয়োগ করা হয়।

তিনি এ বিপর্যস্ত কলেজটির বিলুপ্তির সংকটকালে দৃঢ় আত্মপ্রতায় ও আত্মত্যাগ স্বীকার করে হাল ধরার ফলে কলেজটি পুনর্জন্ম লাভ করে এবং নিশ্চিত বিলুপ্তের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়।”

আমরা দেখেছি কলেজে প্রিন্সপ্যাল কোয়ার্টার না থাকায় একটি ক্লাস রুমে তিনি তাঁর স্ত্রী সহ শিশু ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে অত্যন্ত কষ্টেসৃষ্টে বসবাস করতেন। তাঁর অপরিসীম প্রচেষ্টায় চুনারুঘাট সরকারি কলেজ হয়ে উঠে এক স্বর্গীয় উদ্যানে। কলেজের প্রাত্যেকটি বারান্দার সামনে সারি করে পাতা বাহারের গাছ, প্রতিটি রাস্তার দু’পাশে ছাঁটাই করা পাতামেন্সির গাছ, অফিসের সামনে ও ভবনগুলোর সামনে গন্ধরাজ ফুলের বাগান।

ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করত সারা কলেজ প্রাঙ্গণ। ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের সামনে একটি গোলচত্বর করে বৃত্তাকারে রঙিন গাছ লাগানো ছিল ঠিক মাঝখানে বিশাল ডেগার ফ্লাওয়ার আমাদের বিশ্বাষে বিমূঢ় করত। সমস্ত টিন শেডের ভবনের সাদা দেয়ালগুলো ছিল দাগহীন যা তখনকার সময়ে ছিল বিশ্ময়কর।

আশি ও নব্বই দশকের উত্তাল ছাত্ররাজনীতিতে নানান দেয়াল লিখনে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাঙ্গনের দেয়ালে যেখানে অজস্র চিকা মারা থাকতো সেখানে এই কলেজের সাদা শুভ্র দেয়াল প্রত্যেককে মুগ্ধ করত। তাই বলে ছাত্র রাজনীতির উত্তাল ঢেউ থেকে চুনারুঘাট সরকারি কলেজ মুক্ত ছিল। না।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের এক অগ্নিগর্ভ ছিল চুনারঘাট সরকারি কলেজ। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন এ কলেজে আসেন তিনি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন প্রান্তিক পর্যায়ে এই অনন্য কলেজটি দেখে। ” ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ চুনারুঘাটে সফরে এলে কলেজ প্রাঙ্গণে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি কলেজটি সরকারি করণের ঘোষণা দেওয়ায় ২৮/১০/৮৬ ইং থেকে কলেজটি সরকারি কলেজে পরিণত হয়।”

কলেজটি সরকারি স্বীকৃতি লাভের আগ পর্যন্ত মূল্যবোধ, পরামর্শ, অর্থ, শ্রম ও অনুদান দিয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রাক্তন অনেক চেয়ারম্যান, প্রতিটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকবৃপ, চুনারুঘাটের ব্যবসায়ীবৃন্দ, সামাজিক- সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ ও আপামর জনসাধারণ।

১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের একটি অগ্নিগর্ভ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্মৃতি থেকে কিছুটা বর্ণনা করছি যা এ কলেজের আন্দোলন সংগ্রামের উজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী কলেজের সামনে তৎকালীন ঢাকা সিলেট মহাসড়কে মর্মান্তিক বাস চাপায় নিহত হন।

তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে তৎকালীন ছাত্রনেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ঢাকা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাস, রিজার্ভ বাস ও ট্রাক সহ কলেজের পাশে নয়নি গ্রামের বিশাল ধান ক্ষেতে শত শত গাড়ী পার্ক করে রাখা হয়েছিল। বেশ কিছুদিন এই গাড়িগুলো আটক ছিল এবং কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের দাবির কাছে মাথা নত করতে হয়েছিল।

আর্থিক অসামর্থ্য আইয়ুব আলীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছিল, কলেজের সামনের মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার তৈরি করা হয়েছিল এবং কলেজের প্রবেশ গেটের বাম পাশে তাঁর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল। যা এখন কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে।

১৯৭৬-৭৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শ্রীকুটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান হবিগঞ্জ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট জনাব আব্দুল আউয়াল স্মৃতিচারণ করে বলেন, “গাভীগাঁও নিবাসী বিজয় বাবু তৎকালীন সময়ে কলেজের অফিস সহকারী ছিলেন তার অনুপ্রেরণায় তিনিসহ আরো দুইজনকে তাদের অভিভাবক চুনারুঘাট কলেজে ভর্তি করান।

১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে কাঠের খুটি দেওয়া টিনের চালের কলেজ ভবন প্রচন্ড ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল। তাই কিছুদিনের জন্য চুনারঘাট কৃষি অফিসের পুরনো ভবনে ক্লাস করতে হয়েছিল।”

দীর্ঘ ৫০ বছর নানান উত্থানপতন ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এ অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে চুনারঘাট সরকারি কলেজ। কিন্তু সরকারি হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন এই কলেজ বলতে গেলে অভিভাবক শূন্যই ছিল। কলেজের সমস্ত প্রকৃতি উপড়ে ফেলা হিয়েছিল। সবুজ কলেজ ধূসর হয়ে গিয়েছিল আর এ কলেজ ছিল অধ্যক্ষদের অবসরের বধ্যভূমি।

কলেজটিতে ডিগ্রী (পাস) কোর্স দীর্ঘদিন চালু থাকলেও ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহেরের প্রচেষ্টায় চুনারুঘাট সরকারি কলেজের প্রাক্তন প্রভাষক মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমেদের (যিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন) সহায়তায় ও অধ্যক্ষ অসিত কুমার পালের নেতৃত্বে অনার্স কোর্স চালু হওয়ায় উচ্চ শিক্ষার দীর্ঘ অমানিশা কেটে গিয়েছিল।

গত ২৮/০২/২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রবন্ধকার ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন– এ বছর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি

কর্মসূচি গ্রহণে কর্তৃপক্ষের প্রতি সবিনয় আহ্বান।” এতে ১৭৫ টি লাইক-প্রতিক্রিয়া ও ২৬ টি কমেন্ট ছিল। সবাই সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের জন্য অনুরোধ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন ছাত্র ইউকে প্রবাসী মোমিন আলীর আহ্বানে মুক্তদির কৃষাণ চৌধুরীর প্রেরণায় গত ১২/০৩/২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত দশটায় অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সিদ্ধান্ত হয় আগামী ৭ এপ্রিল ২৩ কলেজের ৫০ বছর প্রতিষ্ঠার দিন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা, অ্যালামনাই গঠন ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। ঐ ঘোষণার প্রেক্ষিতে ও অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণার ফলে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরবৃন্দ সুবর্ণ জয়ন্তির দিনে- অর্থাৎ ৭ এপ্রিল ২৩ বিকেল বেলা একে একে প্রায় ২০০শিক্ষার্থী জমায়েত হন। তখন এক আনন্দময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সবারই চোখেমুখে নব আনন্দের ধারা- চমৎকার এক অনুষ্ঠানের প্রত্যাশায়। আলোচনায় সকলেই একতম হলেন আড়ম্বরপূর্ণ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবেন। ইফতার হলো সম্মিলিত ভাবে। সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত হলো। ইফতারের পর আলোচনা শুরু হলো কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলো না।

আগামীতে সভা হবে বলে সভা শেষ হলো। আর সভা হলো না এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রস্তুতিও নেয়া হলো না। চুনারুঘাট সরকারি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন যতি চিহ্নে উপনীত হলো। নেতৃবৃন্দ কি ব্যার্থ হলেন? আমরা কি ব্যার্থ হলাম? আবার কখনো যদি কারো উদ্যোগে জেগে ওঠে স্বপ্ন সেই প্রত্যাশাই রইল ।

কোন একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে এক একটি যুগান্তকারী সময় এসে পৌঁছে। সেই সময়টিকে উদযাপনের রীতি চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। এ উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস পর্যালোচনা হয়, আলোচনা হয় শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে, সেমিনার সিম্পোজিয়াম হয়, প্রদর্শনী হয়, প্রকাশিত হয় স্মরণীকা, নাটক হয়, গান হয়, কবিতা পাঠ হয়, হয় প্রাক্তনীদের পুনর্মিলনী এবং পরবর্তী প্রজন্ম আবারো গবেষণা করে মানুষের ইতিহাস সমৃদ্ধ করে।

দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছিল স্বাড়ম্বরে। হীরক জয়ন্তী সাড়ম্বরে উদযাপনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি সাদামাটা ভাবে হারজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছিল। চুনারুঘাট সদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শততম পূর্ণ হয়েছিল ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে। তৎকালীন সময়ে এই প্রবন্ধকার স্কুল কর্তৃপক্ষ ও চুনাঘাটের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছিলেন এতে আশানুরূপ কিছু হয়নি। চুনারুঘাট উপজেলারও শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী গেল ২০২২ খ্রিস্টাব্দে। আগামী ২০২৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণা চরণ পাইলট উচ্চ

বিদ্যালয় এর শতবর্ষপূর্তি স্কুল কর্তৃপক্ষ এটি উদযাপন করতে পারে ভাবগাম্ভির্যে ও সাড়ম্বরে। চুনারুঘাট সরকার সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। অন্তত কলেজের পরিবার নিয়ে এই জয়ন্তী উদযাপন করলে নতুন প্রজন্ম চুনারুঘাট সরকারি কলেজের হিরন্ময় ইতিহাস জানবে।

তৎকালীন মানুষের উদ্যোগের ইতিহাসে অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও মানুষের কল্যানে নব নব উদ্যোগে নিবেদিত হবে। ইচ্ছে করলেই কলেজ কর্তৃপক্ষ এ আয়োজন করতে পারে অভ্যন্তরীন হলেও। করা উচিত। এ কলেজ আরো বিকশিত হোক- আলো ছড়াক বিশ্বময়।

মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ১৯৯০-৯১ সেশন ও সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস, লংলা কলেজ আধুনিক ডিগ্রি কলেজ, কুলাউড়া ।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সৎ প্রশাসকদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা কোথায়?

চুনারুঘাট সরকারি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী ও প্রত্যাশা, সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম

আপডেট সময় ০৯:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

সবুজেঘেরা চা বাগান, উঁচু-নিচু টিলা ভূমি। তার পাশ দিয়ে বহে গেছে খোয়াই নদী। সবুজের ঢেউখেলা পরিবেশ ও নদীর তরঙ্গ প্রবাহ মধুরস আবহে গড়ে ওঠা চুনারুঘাট সরকারি কলেজ।

কালের বিবর্তনে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশে ইতিমধ্যে ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। স্বাধীনতাত্তোর কালে প্রতিষ্ঠিত এ মহাবিদ্যালয়টি শিক্ষানুরাগী কিছু অগ্রসর চিন্তার ব্যক্তিবর্গের কায়িকশ্রম ও আর্থিক সহযোগিতায় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও সরকারি কলেজে পরিণত হয়ে প্রান্তিক জনপদের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সিঁড়ি আজ হাতের নাগালে।

হাঁটি- হাঁটি, এক পা-দু’পা করে এগিয়ে চলা বিদ্যা নিকেতনটির সুবর্ণজয়ন্তী সত্যিই এলাকাবাসীর জন্য গর্বের। যাঁরা এই কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে ওতোপ্রোত ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁদের অনেকে হয়তো ইহলোকে নেই কিন্তু কর্মে তাঁরা যুগে যুগে চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ইতহাসে চিরঞ্জীব।

সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট একটি অন্যতম উপজেলা। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের আগে এই উপজেলা থানা হিসেবে ছিল। বর্তমান স্থানে থানা প্রতিষ্ঠার আগে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে আসাম প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক বর্তমান মিরাশি ইউনিয়নের অন্তর্গত মুচিকান্দি নামক স্থানে থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে আসাম প্রাদেশিক সরকারের গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে বর্তমান স্থানে থানা সদর স্থানান্তরিত হয় যা এখন চুনারুঘাট উপজেলা হিসেবে পরিগণিত।

ব্রিটিশ আমলের পূর্বে এদেশে প্রায় তিন লক্ষ পাঠশালা ছিল যেখানে সর্বসাধারণের শিশু কিশোররা পাঠগ্রহণ করার সুযোগ পেত। সেই পাঠশালা গুলো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার প্রাইমারি স্কুলে পরিণত করে এ থেকে চুনারুঘাট ও বাদ যায়নি।

১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের চুনারঘাট সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে রাজার বাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে, ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে মিরাশি উচ্চ বিদ্যালয় ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

অনেকগুলো উচ্চ বিদ্যালয় থাকলেও কলেজ বা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক যুগ প্রতীক্ষা করতে হয়। অবশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় চুনারুঘাটে শিক্ষা বিস্তারের জ্ঞান সাধনার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন বেশ কজন মনীষী। কলেজ বার্ষিকী ৯৪ এ সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হাই লেখেন- ” দীর্ঘদিন থেকে এ থানায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়ে আসছিল। থানাবাসীর দীর্ঘদিনের ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত

মানব সভ্যতায় চুনারুঘাটের ইতিহাস প্রায় ১৫ হাজার বছর পূর্বের। চাকলাপুঞ্জি প্রত্নবস্তু তাই প্রমাণ করে। শিক্ষা বিস্তার ছাড়া মানব সভ্যতা কল্পনা করা যায় না। এই প্রত্নবস্তুগুলো প্রমাণ করে এই অঞ্চলে প্রাচীন কলেও শিক্ষার বিস্তরণ ছিল।

মধ্যযুগে চুনারঘাট কেন্দ্রিক শিক্ষা বা বিদ্যা চর্চার প্রমাণ পাই- ১৫২৩ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ ইসরাইলের লেখা বাংলাদেশের প্রথম লিখিত ফার্সি গ্রন্থ মাদানাল ফাওয়েদ’ গ্রন্থ থেকে। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত গ্রন্থে অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি বলেছেন, “এই গ্রন্থখানা পেল নিবাসী সৈয়দ এমদাদুল হক মহাশয়ের নিকট আছে।” চুনারুঘাটের অনেক ব্যক্তি শিক্ষাদিক্ষায় দেশ-বিদেশে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছেন। অগাধ জ্ঞান সাধনার জন্য সৈয়দ শাহ ইব্রাহিম দিল্লির দরবার থেকে ‘মালেক- উল- উলামা এবং সৈয়দ শাহ ইসরাইল ‘মূলক উল- উলামা’ উপাধি লাভ করেছিলেন।

এই উপজেলার কৃতি সন্তান ডঃ মুহাম্মদ রশিদ বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা ভাই চ্যান্সেলর ছিলেন। মিরাশী গ্রামের হেমাঙ্গ হেমাঙ্গ বিশ্বাস তার কাব্য প্রতিভা, রাজনৈতিক সচেতনতা ও সংগীতে পুরো ভারত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি.আর. দত্ত, পাঁচগাতিয়া নিবাসী বিজ্ঞানী ড. ক্ষতিশ চন্দ্র নাথ প্রমুখ করার লক্ষ্যে ১৮/১০/১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে ডাকবাংলা প্রাঙ্গণে থানার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কমান্ডেট মানিক চৌধুরী এমপি এবং কলেজ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কমিটির সদস্যবর্গ ছিলেন কমান্ডেট মানিক চৌধুরী এমপি, সভাপতি, মোহাম্মদ মোস্তফা শহীদ এমপি সহ-সভাপতি, মোঃ আজিজুর রহমান ( ছুরুক মিয়া) সম্পাদক, মোঃ আব্দুল খালেক মাস্টার (পাকুরিয়া), মোঃ আব্দুর রউফ (হাজিপুর) কোষাধ্যক্ষ, মোঃ আবুল হোসেন নোমান চৌধুরী (নরপতি), বাবু যোগেশ চন্দ্র দেব (রাজাপুর), মোঃ ছবুর আহমদ চৌধুরী (ম্যানেজার) চণ্ডীছড়া চা বাগান, মোহাম্মদ নজর আলী (চান্দপুর চা বাগান).. মহিউদ্দীন, সিও, চুনারুঘাট, মোঃ নুরুল আমিন (শিক্ষা অফিসার), এ রসূল (মেডিকেল অফিসার), সদস্য অতঃপর এ কমিটি ১৯৭৩ খ্রিস্টব্দ তারিখের এক সভায়।

৭/৪/৭৩ তারিখ হতে চুনারঘাট পুরাতন হাসপাতালে একটি ভবনে কলেজ চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।” উল্লেখ্য, চুনারুঘাট সাহিত্য নিকেতনের কার্যালয় ও পাঠাগারের কার্যক্রম পুরনো হাসপাতাল ভবনেই পরিচালিত হত। ষাটের দশকের অন্যতম সাংস্কৃতিক কর্মী ডাক্তার মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন- “১৯৭৩ সালে চুনারুঘাটে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ক্লাস নেয়া হতো সাহিত্য নিকেতনে। ব্যবহার হতে লাগলো সাহিত্য নিকেতনের চেয়ার টেবিল আলমারি ও বই। দিনে কলেজের ক্লাস আর বিকালে সাহিত্য নিকেতন এভাবেই চলতে লাগল। কলেজ স্থানান্তরের সময় বই সমেত আলমারিও চলে গেল চুনারঘাট কলেজে। সাহিত্য নিকেতনের সকল কর্মীর অবদান ছিল কলেজ প্রতিষ্ঠায়।”

কলেজতো প্রতিষ্ঠা হলো, এখন শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি প্রয়োজন। তাই নিজস্ব জায়গার প্রয়োজন দেখা দেয়। ” শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভের জন্য দেওরগাছ নিবাসী মোঃ আব্দুল হাসিম, মোঃ আবদুল আজিদ ও মোঃ আব্দুল মান্নান তিন একর জমি কলেজের নামে

বিনামূল্যে রেজিস্ট্রি করে দিয়ে শিক্ষার প্রতি অনুরাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। (যদিও পড়ে এ জমি তাদেরকে কলেজের কাজে না লাগার জন্য ফেরৎ দেওয়া হয়েছে।

কলেজ প্রতিষ্ঠার সূচনা লগ্নে জনাব আজিজুর রহমান (ছুরুক মিয়া) সহ আরো অনেকে যে শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। হবিগঞ্জ শহরের বগলা বাজার নিবাসী শ্রী হিমাদ্রি চৌধুরীকে কলেজের প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়। নবজন্ম লাভ করেছে যে কলেজ সেই কলেজের

প্রিন্সিপালের উপর নির্ভর করে কলেজের পরিচর্যা- শুশ্রষা ও অগ্রগতির ভিত্তি। কিন্তু হবিগঞ্জ থেকে এসে এই কাজগুলো করা তার জন্য দুরূহ ছিল। “শ্রী হিমাদ্রি চৌধুরীকে কলেজের প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে জনসাধারণকে উৎসাহিত করে অর্থ সংগ্রহ, ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা, শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি, ছাত্র/ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রশাসন ও জনগণের সাথে সঠিক যোগাযোগ করে কলেজকে এগিয়ে নিতে আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জিত না হওয়ায় ১৮/৫/৭৭ তারিখে মোঃ আব্দুল হাইকে কলেজের প্রিন্সিপাল ( বর্তমানে ভাইস প্রিন্সিপাল) নিয়োগ করা হয়।

তিনি এ বিপর্যস্ত কলেজটির বিলুপ্তির সংকটকালে দৃঢ় আত্মপ্রতায় ও আত্মত্যাগ স্বীকার করে হাল ধরার ফলে কলেজটি পুনর্জন্ম লাভ করে এবং নিশ্চিত বিলুপ্তের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়।”

আমরা দেখেছি কলেজে প্রিন্সপ্যাল কোয়ার্টার না থাকায় একটি ক্লাস রুমে তিনি তাঁর স্ত্রী সহ শিশু ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে অত্যন্ত কষ্টেসৃষ্টে বসবাস করতেন। তাঁর অপরিসীম প্রচেষ্টায় চুনারুঘাট সরকারি কলেজ হয়ে উঠে এক স্বর্গীয় উদ্যানে। কলেজের প্রাত্যেকটি বারান্দার সামনে সারি করে পাতা বাহারের গাছ, প্রতিটি রাস্তার দু’পাশে ছাঁটাই করা পাতামেন্সির গাছ, অফিসের সামনে ও ভবনগুলোর সামনে গন্ধরাজ ফুলের বাগান।

ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করত সারা কলেজ প্রাঙ্গণ। ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডের সামনে একটি গোলচত্বর করে বৃত্তাকারে রঙিন গাছ লাগানো ছিল ঠিক মাঝখানে বিশাল ডেগার ফ্লাওয়ার আমাদের বিশ্বাষে বিমূঢ় করত। সমস্ত টিন শেডের ভবনের সাদা দেয়ালগুলো ছিল দাগহীন যা তখনকার সময়ে ছিল বিশ্ময়কর।

আশি ও নব্বই দশকের উত্তাল ছাত্ররাজনীতিতে নানান দেয়াল লিখনে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাঙ্গনের দেয়ালে যেখানে অজস্র চিকা মারা থাকতো সেখানে এই কলেজের সাদা শুভ্র দেয়াল প্রত্যেককে মুগ্ধ করত। তাই বলে ছাত্র রাজনীতির উত্তাল ঢেউ থেকে চুনারুঘাট সরকারি কলেজ মুক্ত ছিল। না।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের এক অগ্নিগর্ভ ছিল চুনারঘাট সরকারি কলেজ। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন এ কলেজে আসেন তিনি আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন প্রান্তিক পর্যায়ে এই অনন্য কলেজটি দেখে। ” ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ চুনারুঘাটে সফরে এলে কলেজ প্রাঙ্গণে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি কলেজটি সরকারি করণের ঘোষণা দেওয়ায় ২৮/১০/৮৬ ইং থেকে কলেজটি সরকারি কলেজে পরিণত হয়।”

কলেজটি সরকারি স্বীকৃতি লাভের আগ পর্যন্ত মূল্যবোধ, পরামর্শ, অর্থ, শ্রম ও অনুদান দিয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রাক্তন অনেক চেয়ারম্যান, প্রতিটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকবৃপ, চুনারুঘাটের ব্যবসায়ীবৃন্দ, সামাজিক- সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ ও আপামর জনসাধারণ।

১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের একটি অগ্নিগর্ভ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্মৃতি থেকে কিছুটা বর্ণনা করছি যা এ কলেজের আন্দোলন সংগ্রামের উজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী কলেজের সামনে তৎকালীন ঢাকা সিলেট মহাসড়কে মর্মান্তিক বাস চাপায় নিহত হন।

তাঁর মৃত্যুর প্রতিবাদে তৎকালীন ছাত্রনেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ঢাকা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাস, রিজার্ভ বাস ও ট্রাক সহ কলেজের পাশে নয়নি গ্রামের বিশাল ধান ক্ষেতে শত শত গাড়ী পার্ক করে রাখা হয়েছিল। বেশ কিছুদিন এই গাড়িগুলো আটক ছিল এবং কর্তৃপক্ষকে ছাত্রদের দাবির কাছে মাথা নত করতে হয়েছিল।

আর্থিক অসামর্থ্য আইয়ুব আলীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছিল, কলেজের সামনের মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার তৈরি করা হয়েছিল এবং কলেজের প্রবেশ গেটের বাম পাশে তাঁর স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল। যা এখন কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে।

১৯৭৬-৭৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শ্রীকুটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান হবিগঞ্জ জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট জনাব আব্দুল আউয়াল স্মৃতিচারণ করে বলেন, “গাভীগাঁও নিবাসী বিজয় বাবু তৎকালীন সময়ে কলেজের অফিস সহকারী ছিলেন তার অনুপ্রেরণায় তিনিসহ আরো দুইজনকে তাদের অভিভাবক চুনারুঘাট কলেজে ভর্তি করান।

১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে কাঠের খুটি দেওয়া টিনের চালের কলেজ ভবন প্রচন্ড ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল। তাই কিছুদিনের জন্য চুনারঘাট কৃষি অফিসের পুরনো ভবনে ক্লাস করতে হয়েছিল।”

দীর্ঘ ৫০ বছর নানান উত্থানপতন ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এ অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে চুনারঘাট সরকারি কলেজ। কিন্তু সরকারি হওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন এই কলেজ বলতে গেলে অভিভাবক শূন্যই ছিল। কলেজের সমস্ত প্রকৃতি উপড়ে ফেলা হিয়েছিল। সবুজ কলেজ ধূসর হয়ে গিয়েছিল আর এ কলেজ ছিল অধ্যক্ষদের অবসরের বধ্যভূমি।

কলেজটিতে ডিগ্রী (পাস) কোর্স দীর্ঘদিন চালু থাকলেও ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহেরের প্রচেষ্টায় চুনারুঘাট সরকারি কলেজের প্রাক্তন প্রভাষক মোল্লা জালাল উদ্দিন আহমেদের (যিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন) সহায়তায় ও অধ্যক্ষ অসিত কুমার পালের নেতৃত্বে অনার্স কোর্স চালু হওয়ায় উচ্চ শিক্ষার দীর্ঘ অমানিশা কেটে গিয়েছিল।

গত ২৮/০২/২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রবন্ধকার ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন– এ বছর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি

কর্মসূচি গ্রহণে কর্তৃপক্ষের প্রতি সবিনয় আহ্বান।” এতে ১৭৫ টি লাইক-প্রতিক্রিয়া ও ২৬ টি কমেন্ট ছিল। সবাই সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের জন্য অনুরোধ করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে চুনারুঘাট সরকারি কলেজের ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন ছাত্র ইউকে প্রবাসী মোমিন আলীর আহ্বানে মুক্তদির কৃষাণ চৌধুরীর প্রেরণায় গত ১২/০৩/২৩ খ্রিস্টাব্দ রাত দশটায় অ্যাডভোকেট আবদুল আউয়ালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সিদ্ধান্ত হয় আগামী ৭ এপ্রিল ২৩ কলেজের ৫০ বছর প্রতিষ্ঠার দিন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা, অ্যালামনাই গঠন ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। ঐ ঘোষণার প্রেক্ষিতে ও অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণার ফলে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরবৃন্দ সুবর্ণ জয়ন্তির দিনে- অর্থাৎ ৭ এপ্রিল ২৩ বিকেল বেলা একে একে প্রায় ২০০শিক্ষার্থী জমায়েত হন। তখন এক আনন্দময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সবারই চোখেমুখে নব আনন্দের ধারা- চমৎকার এক অনুষ্ঠানের প্রত্যাশায়। আলোচনায় সকলেই একতম হলেন আড়ম্বরপূর্ণ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবেন। ইফতার হলো সম্মিলিত ভাবে। সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত হলো। ইফতারের পর আলোচনা শুরু হলো কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হলো না।

আগামীতে সভা হবে বলে সভা শেষ হলো। আর সভা হলো না এবং সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রস্তুতিও নেয়া হলো না। চুনারুঘাট সরকারি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন যতি চিহ্নে উপনীত হলো। নেতৃবৃন্দ কি ব্যার্থ হলেন? আমরা কি ব্যার্থ হলাম? আবার কখনো যদি কারো উদ্যোগে জেগে ওঠে স্বপ্ন সেই প্রত্যাশাই রইল ।

কোন একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে এক একটি যুগান্তকারী সময় এসে পৌঁছে। সেই সময়টিকে উদযাপনের রীতি চলে আসছে আবহমান কাল ধরে। এ উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস পর্যালোচনা হয়, আলোচনা হয় শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে, সেমিনার সিম্পোজিয়াম হয়, প্রদর্শনী হয়, প্রকাশিত হয় স্মরণীকা, নাটক হয়, গান হয়, কবিতা পাঠ হয়, হয় প্রাক্তনীদের পুনর্মিলনী এবং পরবর্তী প্রজন্ম আবারো গবেষণা করে মানুষের ইতিহাস সমৃদ্ধ করে।

দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছিল স্বাড়ম্বরে। হীরক জয়ন্তী সাড়ম্বরে উদযাপনের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি সাদামাটা ভাবে হারজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছিল। চুনারুঘাট সদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শততম পূর্ণ হয়েছিল ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে। তৎকালীন সময়ে এই প্রবন্ধকার স্কুল কর্তৃপক্ষ ও চুনাঘাটের কয়েকজন নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছিলেন এতে আশানুরূপ কিছু হয়নি। চুনারুঘাট উপজেলারও শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী গেল ২০২২ খ্রিস্টাব্দে। আগামী ২০২৮ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণা চরণ পাইলট উচ্চ

বিদ্যালয় এর শতবর্ষপূর্তি স্কুল কর্তৃপক্ষ এটি উদযাপন করতে পারে ভাবগাম্ভির্যে ও সাড়ম্বরে। চুনারুঘাট সরকার সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। অন্তত কলেজের পরিবার নিয়ে এই জয়ন্তী উদযাপন করলে নতুন প্রজন্ম চুনারুঘাট সরকারি কলেজের হিরন্ময় ইতিহাস জানবে।

তৎকালীন মানুষের উদ্যোগের ইতিহাসে অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও মানুষের কল্যানে নব নব উদ্যোগে নিবেদিত হবে। ইচ্ছে করলেই কলেজ কর্তৃপক্ষ এ আয়োজন করতে পারে অভ্যন্তরীন হলেও। করা উচিত। এ কলেজ আরো বিকশিত হোক- আলো ছড়াক বিশ্বময়।

মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ১৯৯০-৯১ সেশন ও সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস, লংলা কলেজ আধুনিক ডিগ্রি কলেজ, কুলাউড়া ।