হাওর ও শিল্পের জেলা হবিগঞ্জ। আর এই মৌসুমে সেচের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে বোরো ধানের আবাদ। পানি না থাকায় ইতোমধ্যে অনেক স্থানেই কৃষি জমিতে দেখা দিয়েছে ফাটল। ধান গাছের চারাগুলোও লালচে হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় হতাশার মধ্যে পড়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এ বছর জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ২২ হাজার ৪১০ হেক্টর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই, মাধবপুর, নবীগঞ্জ , হবিগঞ্জ সদর ও বাহুবল উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা হাওরবেষ্টিত। এসব এলাকার অধিকাংশ পরিবারই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে বৃহৎ একটি অংশ বর্গাচাষি।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও সেচের অভাব দেখা দিয়েছে জেলার বিভিন্ন হাওরে। বিশেষ করে সেচের অভাবে নষ্ট হতে চলেছে বানিয়াচং উপজেলার হাওরাঞ্চলের কয়েক’শ একর জমি। এরই মধ্যে ধানের চারাগুলো লালচে হয়ে গেছে। অনেক জমিতে পানি না থাকায় মাটি নরম হচ্ছে না।
বানিয়াচং উপজেলা সদরের আদমখানী গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, ‘পানির খুবই অভাব। আমরা টিকতে পারবো না। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ।
একই গ্রামের কৃষক মো. বাবলু মিয়া বলেন,‘কৃষি অফিসার আমাদের জমি এসে দেখেছেন না। তারা যদি এসে দেখতেন হয়তো আমাদের জমি নষ্ট হতো না। এরই মধ্যে একাধিকবার আমাদের ফসল নষ্ট হয়েছে।’
কুতখানী গ্রামের ছাবু মিয়া বলেন, ‘উপজেলার বল্লির হাওরে সেচের পানির অভাবে আমাদের জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের সমস্যায় ঠিকমতো সেচ পাওয়া যায় না। নদী-নালা, খালও শুকিয়ে গেছে। তাই একেবারেই পানি পাওয়া যাচ্ছে না।’
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, ‘পানির অভাবে জমির মাটি নরম হচ্ছে না। জমিতে তাই ধানের চারাও রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না। জানি না এসব জমিতে ধান হবে কিভাবে?’
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বোরো ধানে সেচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। তাই সব জমিতে যাতে সেচের পানি নিশ্চিত করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে জেলার বিভিন্ন হাওরে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে সেচের কিছু সমস্যা হচ্ছে। ওই জমিতে আমরা সেচ নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।