চুনারুঘাট উপজেলার দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ (ডিসিপি) একটি ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রে নেওয়া হয়েছে বার্ষিক পরিক্ষা। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে সমালোচনার ঝড়। বাংলা প্রথমপত্রের সেই প্রশ্নপত্রে বেশ কয়েকটি বড়সড় ভুল বের হওয়ায় এনিয়ে সমালোচনা হচ্ছে এলাকাজুড়ে। গত মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) এমন ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যে। এতে দেখা গেছে, এক নম্বর প্রশ্নে ‘থানার স্থলে লেখা হয়েছে ‘খামার’। দুই নম্বর প্রশ্নের একাধিক স্থানে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাম লিখতে গিয়ে ‘মাওলানা’র স্থলে লেখা হয়েছে। ‘হাওলানা”। আরও একটি প্রশ্নে ‘সুখী মানুষ’র স্থলে দুইবার লেখা হয়েছে ‘মুখী মানুষ’। এছাড়াও কয়েকটি ছোটখাটো ভুল বের এ বিষয়ে দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এমন প্রশ্নপত্র দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। কয়েকজন অভিভাবক বলেন, প্রশ্নপত্রে বানান ভুলের ব্যাপার অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁর উপর একটিমাত্র প্রশ্নপত্রে এতগুলো বানান ভুলের ঘটনাটি অবশ্যই শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার উদাহরণ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে বানান ভুলের বিষয়টি আমি জেনেছি, ভবিষ্যতে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রশ্নপত্র তৈরী করার জন্য শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হবে ।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) তৈয়বা খাতুন বলেন, প্রশ্ন করার জন্য একজন সহকারি শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে পান্ডুলিপি আর কাউকে পড়তে দেওয়া হয়নি। অসতর্কতার কারণে ভুলগুলো হয়েছে। প্রশ্নপত্রগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সম্পাদন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চুনারুঘাটে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে। উপজেলার ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীও জিপিএ-৫ পায়নি। পাসের হার মাত্র ৬৯ শতাংশ। যা জেলার অন্য ৯ টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে কম। এবার এসএসসি পরীক্ষায় চুনারুঘাট থেকে ৩ হাজার ৮০২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২ হাজার ৬২৯ জন।
প্রশ্নপত্রে এতো বানান ভুল! জিপিএ-৫ ১৩৫টি ও পাসের হার ৬৯ শতাংশ। দাখিলে ৯১৪ জন অংশ নিয়ে ৮১৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭ জন, পাশের হার ৮৯ শতাংশ। উপজেলার ৪৩টি স্কুল ও মাদ্রাসার মধ্যে ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন বাকী জিপিএ-৫ আসেনি। এগুলোর মধ্যে ৯টি স্কুল ও ৯টি মাদ্রাসা রয়েছে। এনিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনা হচ্ছে, অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এছাড়াও এসএসসিতে উপজেলার ৩টি বিদ্যালয়ে পাশের হার পঞ্চাশ শতাংশেরও নীচে। তিনটি প্রতিষ্ঠানে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩০৭ জন। পাশ করেছে ১৪০ জন, অকৃতকার্য হয়েছে ১৬৭ জন, সব মিলিয়ে পাশের হার ৪৫.৬০ শতাংশ। বিদ্যালয়গুলো হল শানখলা উচ্চ বিদ্যালয়, আলোর পথে উচ্চ বিদ্যালয় এবং তাহের সামছুন্নাহার উচ্চ বিদ্যালয়।