বানিয়াচংয়ে সৈদ্যারঠুলা ছান্দের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে।গত ৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় স্থানীয় ২নং ইউনিয়নের সৈদ্যারঠুলা ছান্দে পুরনো বিবাদকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বানিয়াচং ২নম্বর উত্তর পশ্চিম ইউ/পি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খান ও সাবেক উপজেলা বাইস চেয়াম্যান ইকবাল বাহার খানের লোক জনের মধ্যে এ রক্তক্ষয়ী হামলা ও সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে।
এ সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০টি বসত বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে টেটা ও ফিকল বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ৫ জনকে সিলেট ও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। উক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের ২০ জনকে পুলিশ আটক করেছে।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার ২নম্বর উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের সৈদ্যারঠুলা ছান্দের সর্দার নির্ধারণ, গ্রাম্য আধিপত্য ও সৈদ্যারঠুলা ছান্দের মালিকানাধীণ আবু ইউছুফ খান ওয়াকফ এস্টেট, বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিতীয় সোয়াম ফরেষ্টখ্যাত লক্ষীবাউর (হড়তির জঙ্গল) জলাবনে পর্যটন কর্পোরেশনের রেষ্ট হাউজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনকে কন্দ্রে করেই মুলত এ দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারী এ রেষ্ট হাউজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমস্ত্রী এডঃ মাহবুব আলী এমপি। লক্ষীবাউর (হড়তির জঙ্গলের) প্রবেশ ধারে রেষ্ট হাউজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের সূত্রধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। পরবর্তীতে সর্দার নির্ধারণ ও কবরস্থানের জমি নিয়ে উভয়পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলা সদরের ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব ও ২ নম্বর উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের শাখা কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী দেশের বৃহৎ প্রাকৃতিক জলাবন লক্ষীবাওরে রেষ্ট হাউজটির নির্মাণের বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খানকে অভিযুক্ত করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। বলা হয় যে চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খান, রেষ্ট হাউজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের মাধ্যমে সরকারের কাছে নাকি এ জলাবন বিক্রি করে দিয়েছে।
মুলত, পর্যটন কর্পোরেশনের অর্থায়নে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে রিসোর্টটি বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ও স্থানীয় এলজিইডি অফিসের কারিগরি সহায়তায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
সৈদরটুলা ছান্দে এক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ইউ/পি চেয়ারম্যান হায়দারুজ্জামান খান ও অপরপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান ও এড: নজরুল ইসলাম খান। সংঘর্ষের সময় তোপখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষের শুরু।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৪ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষের পর গ্রেপ্তার এরাতে এলাকার থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।