সারা দেশের ন্যায় হবিগঞ্জ বিআরটিএ অফিসেও ডোপ টেস্ট বিধিমালা’য় আটকে আছে অসংখ্য চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স। সম্প্রতি চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে ডোপটেস্ট সংক্রান্ত এ নির্দেশনা। এতে পেশাদার গাড়িচালকদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন পরিবহন মালিকরাও। এর কারণে পর্যাপ্ত গাড়ি থাকলেও মিলছে না চালক।
পেশাদার চালকদের পাশাপাশি চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও দুরপাল্লার পণ্য পরিবহনকারী ব্যবসায়ীরা। এই জটিলতা নিয়ে জীবিকার তাগিতে রাস্তায় বের হলেই প্রতিনিয়তই মূখোমুখি হতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের। মাঝে মাঝে আবার গুনতে হচ্ছে জরিমানাও।
‘ডোপ টেস্ট বিধিমালা-২০১৯’র প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। হবিগঞ্জ জেলা বিআরটি এর তথ্য মতে, ডোপ টেস্ট জটিলতায় আটকে আছে পেশাদার প্রায় ৩’শ নতুন এবং পুরনো নবায়নের ২’শ আবেদন। যেহেতু বিষয়টি দীর্ঘ মেয়াদী এবং সকলের জন্য বাধ্যতামূলক তাই হবিগঞ্জে ডোপ টেস্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ বিধান স্থগিতের দাবি করেছেন পেশাদার চালকরা।
ডোপ টেস্ট সংক্রান্ত পাশ হওয়া খসড়া বিধিমালায় উলেখ আছে, কোনো ব্যক্তির মাদক পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক বা পজিটিভ হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে। এক্ষেত্রে আইনের ৩৬ (৪) ধারা অনুযায়ী, মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে আদালত মাদকাসক্তি চিকিৎসা দেয়া এবং আইনের ৩৬(৫) ধারা অনুযায়ী, কেউ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় জনসাধারণের শান্তি বিনষ্ট বা অসদাচরণ করলে কিংবা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালালে অনূর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হবে।
আইনের ৩৬(৬) ধারা অনুযায়ী, সরকারি গাড়ির চালক গাড়ি ব্যবহারকারী অফিসারের অনুপস্থিতিতে মাদকদ্রব্য পরিবহনের সময় আটক হলে অপরাধ অনুযায়ী আইনানুগ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ডোপ টেস্ট পজেটিভ হলে মাদক সেবনকারী ব্যক্তি সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
পাশাপাশি চাকরিরত অবস্থায় ডোপ টেস্ট পজিটিভ হলে সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, আইন হলেও প্রয়োজনীয় বাজেট না থাকায় জেলা পর্যায়ে ডোপ টেস্ট কিট কেনার সুযোগ নেই তাদের। সংকট সমাধানে অধিদফতরে যোগাযোগ করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।
হবিগঞ্জ জেলা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, পেশাদার চালকদের হয়রানি কমাতে ডোপ টেস্ট ছাড়াই আবেদন রেখে তাদের প্রাপ্তী স্বীকার রশিদ দেয়া হচ্ছে।
হবিগঞ্জে জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর হোসেনুজ্জামান আলোকিত হবিগঞ্জ ডটকম’কে জানান, চালকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাচাইকালে তাদের আবেদনের প্রাপ্তী স্বীকার রশিদ থাকলে মানবিক দিক বিচার করে অনেকটা ছাড় দেয়া হয়। তবে তা কখনোই আইনের বাহিরে নয়।