হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রী জলি আক্তার (২১) এর দায়েরকৃত যৌতুক মামলায় স্বামী মো: ফয়েজ মিয়া (২৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম হাসারগাঁও গ্রামের আছান উল্ল্যার ছেলে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন। এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে থানার উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মহসিন কবীর সহ একদল পুলিশ তার নিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায় , ২০২১ সালের ডিসম্বরে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী এলাকার কিতাব আলীর মেয়ে জলি আক্তারকে ৩লাখ টাকা কাবিন মূলে বিয়ে করে ফয়েজ মিয়া।
তাদের দাম্পত্য জীবনে ইসমাইল নামে দুই বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। বাচ্চা জন্মগ্রহণের বছর যেতে না যেতেই ৩ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তাঁকে চাপ দিতে শুরু করে স্বামী ফয়েজ মিয়া।
চাপে পড়ে স্বামীকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিয়েও রক্ষা পাননি তিনি। এ সময় জলি আক্তারকে ভরণপোষণ না দিয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে ফয়েজ।
গত ১০ নভেম্বর পূনরায় বিদেশ যেতে ৩ লাখ টাকার জন্য জলি আক্তার কে মারপিট করে ফয়েজ আহমেদ। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে সমঝোতার চেষ্টাও চালানো হয়। তবে কোনোভাবেই সমঝোতা হয়নি।
এক পর্যায়ে ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফয়েজ আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন জলি।
মামলা চলাকালীন সময়ে ফয়েজ মিয়া হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার আদালত -৩ -এ সংসার করবে এবং যৌতুক বা অত্যাচার নির্যাতন না করার শর্তে মুচলেকা দেয়।
স্ত্রী জলি আক্তার বলেন, মুচলেকা দিয়ে আমাকে ঘরে নেয়ার দুদিন পরই সে আমার অনুমতি ছাড়া বানিয়াচং উপজেলার জনৈক সুমি আক্তার নামে এক তরুণীকে বিয়ে করে আমাকে ভরণপোষণ বন্ধ করে দেয়।
এমনকি আমাকে ফের মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। আমি সন্তান নিয়ে খুবই অসহায় অবস্থায় পিত্রালয়ে আশ্রয় নেই।
আমি কষ্ট করে দিনযাপন করছি আর সে নতুন বউ নিয়ে রঙ্গলীলা করছে। আমি প্রতারক বিয়ে কামলা স্বামীর বিচার চাই।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আসামিকে মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।