হবিগঞ্জ ১১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাংবাদিকতায় যদি সফলতা চান, তাহলে দিন শেষে ভাবেন-সিনিয়র সাংবাদিক আলমগীর হোসেন Logo গণবিপ্লবের মাধ্যমে আমরা মুক্ত হয়েছি- নির্বাসিত সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান Logo সহকারি শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার মাধবপুর উপজেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত Logo ডাক্তারের ছেলে শ্রেণির ছাত্র জিয়াদ নিখোঁজ Logo একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ও হবিগঞ্জ-৪ এর রাজনৈতিক ঐতিহ্য Logo চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি Logo চুনারুঘাটে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হক কুটি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার Logo ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সময়ে প্রতিটি খুন-গুমের বিচার বাংলার মাটিতে হবে-মামুনুল হক Logo দেশকে অস্থির করার জন্য স্বৈরাচারের দোসরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, সৈয়দ মোঃ শাহজাহান Logo চুনারুঘাটে টিসিবির পন্য বিক্রি না করে মজুদ: ২ ডিলারের মালিক আটক

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : কোন পথে বাংলাদেশ? মো: মাহমুদ হাসান 

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৩৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে
স্বাধীনতার পর থেকেই একের পর এক স্বৈরাচার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। রুপে লাবণ্যে একজনের চেয়ে অন্যজন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। আর এই দানবীয় রূপে, নিষ্পেষিত হয়েছে প্রতিটি শ্রেণী, পেশার মানুষ। মুক্তির কূলকিনারা মেলেনি।
রাজনীতি থেকে প্রকৃত রাজনীতিবিদরা নির্বাসিত হয়েছে। দুর্নীতি দুঃশাসনের সুবিধা নিয়ে লোভাতুর শ্রেণী, সমাজকে শাসন করেছে। দেশকে ভালোবাসেন, সততায় সমৃদ্ধ এমন মানুষগুলোকে ক্ষমতা বলয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
পারিবারিকীকরণের মহাপ্রলয়ে মেধাবী নেতৃত্বের বিকাশের পথকে রুদ্ধ করা হয়েছে। দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় ভয়ঙ্কর এক দানবীয় দুর্বৃত্ত শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে, যারা অর্থ বিত্তের জুড়ে তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদ অবধি তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন সাধ ভূলুণ্ঠিত হয়েছে বারংবার।

১৬ই  ডিসেম্বর ১৯৭১, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও একদল পথ হারানো মানুষ বলছিল, ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট আমরা স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পেলাম। এর অব্যবহিত পরেই গণতন্ত্র গৃহবন্দী হলে, আরেক দল বলতে শুরু করে স্বাধীনতা নির্বাসিত হলো। একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ উম্মুক্ত করে স্বাধীনতার পুনর্জন্ম দেয়া হয়েছে। তারপর সুদীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শুরু করা আন্দোলন সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করলো। পদত্যাগে বাধ্য হল গণতন্ত্রের লেবাসধারী উর্দি পড়া শাসক। পনেরো দল, সাত দলীয় ঐক্যজোটের যৌথ ঘোষিত ইশতেহারের আলোকে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতির গতি প্রকৃতি নির্ধারিত হওয়ার ঘোষণা দেয়া হলো। রাজপথে উচ্ছ্বসিত জনতা স্বৈরাচারের পতন দিবস কে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলো। না, এই স্বাধীনতাও বেশি দিন ঠেকেনি! ৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি আবারো গণতন্ত্র গৃহবন্দী হলো। রক্ত ঝরিয়ে, লগি, বৈঠার আন্দোলন করে গণতন্ত্রকে শেকল মুক্ত করতে হলো।

২০০১ থেকে ২০০৫ সময় কালে নানা কলঙ্কে ছেয়ে গেলো দেশ। সরকারের পাশাপাশি হাওয়া ভবনে সমান্তরাল সরকার তৈরি হলো। বোমা বিস্ফোরণে সারা দেশের সব কটি জেলা এক যুগে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো। গ্রেনেড হামলায় নিহত হতে হলো, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য  বাঙালি শাহ এএমএস কিবরিয়া।

দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম বৃটেনের মতো একটি রাষ্ট্রের  কূটনীতিক কলঙ্কিত গ্রেনেডের লক্ষ্যবস্তু হলেন। একুশে আগস্ট রক্ত বন্যায় ভেসে গেল পল্টনের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। রচিত হলো জজ মিয়া কান্ডের মত ঘৃন্য ইতিহাস।

জনতার ভোটে ২০০৮ সালে ঈর্ষণীয় সাফল্য নিয়ে সরকারে গেলো আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সাল থেকে অদ্ভুত এক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গ্রাস করলো বাংলাদেশকে।

২০১৮ সালে জনতাকে ঘুমে রেখেই সরকারে যায় আওয়ামীলীগ। যে গণতন্ত্রের জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন, স্বাধীনতার সেই প্রথম স্তম্ভটিকে কালো মেঘে আচ্ছাদিত করে দেয়া হলো। উন্নয়নের জয়গান দিয়ে গণতন্ত্রকে গৃহবন্দী করা হলো।

২০২৪ এর নির্বাচনটি তো বিস্ময় আর ম্যাজিকে ভরপুর। তবু্ও ছয়টি মাস মন্দ কাটেনি। দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের চিত্র সামনে আসতে শুরু করে। মনে হলো,শাসকরা বোধ হয় এবার ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবেন। সাবেক ক্ষমতাধর পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে অনেকের বিরুদ্ধে শুরু হলো সাড়াশি অভিযান।

 এরই মাঝে শুরু হয় কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবিটি যৌক্তিক ও ন্যায় সঙ্গত হলেও শাসক দল আওয়ামী লীগ, বরাবরের মতো পেশিশক্তি দিয়ে আন্দোলনটি দমানোর চেষ্টা করে। ওবায়দুল কাদেরের হুঙ্কারে ছাত্রলীগ বেপরোয়া নিপীড়নের পথ বেঁচে নেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দেশের আমজনতা প্রত্যক্ষ করে লেজুড় ছাত্র সংগঠনটির ভয়াবহ নৃশংসতা।

একদিকে ছাত্ররা যখন ন্যায্য দাবিতে রাজপথে আন্দোলনরত, সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন ফেরত সাংবাদিক সম্মেলন, আগুনে ঘি ঢেলে দিল। ছাত্রলীগ আর শাসকদলের পেটোয়া প্রশাসনের কর্মকাণ্ড দেখে আমজনতা ফুঁসতে থাকে। একের পর এক লাশ দেখে, দেশবাসীর রক্ত টগবগ করতে লাগলো।

মাত্র তিন দিনে মৃত্যুর মিছিলটি অর্ধ শতাব্দীর নৃশংসতার  ইতিহাস কে পেছনে ফেলে দেয়। সুযোগ নিলো বিরোধীরা, শেখ হাসিনা বন্দুকের উপর ভর করেই বাঁচার চেষ্টা করলেন। সুদীর্ঘ সময়ের শাসন শোষণে অতিষ্ঠ জনতা রাজপথকেই বেছে নিলেন। মৃত্যুর মিছিল দেখে প্রবাসের দেশে দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীরাও প্রচন্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পর্দার অন্তরালের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরাও প্রতিশোধ স্পৃহায় যুক্ত হলেন।

উপায়ান্তরহীন শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন। দেশের ইতিহাসে সুদীর্ঘ সময়ের শাসক দল আওয়ামী লীগ আর সরকারের মন্ত্রী, এমপিরা জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে মরিয়া হয়ে পথের সন্ধানে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলেন!

৫ ই আগস্ট ২০২৪ থেকে ৮ ই আগস্ট ২০২৪। নানা নাটকীয়তার পর নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৫ ই আগস্টের অর্জনকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলো।

একাত্তরের পর বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের বিজয়কে ‘স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর ভাষায় এবারের অর্জন ‘নতুন স্বাধীনতা’। গত এক দশকেরও বেশি, বাংলার একমাত্র নোবেল জয়ী সংবর্ধিত হওয়ার পরিবর্তে নিষ্ঠুর ভাষায় জর্জরিত হয়েছেন। কখনো রক্তচোষা, কখনো বা দালাল এমন কত শত ভাষায় তিনি আক্রান্ত হয়েছে তার সীমা পরিসীমা নাই।

পাহাড় সম মামলা নিয়েও তাবৎ দুনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধানদের কাছে তিনি সংবর্ধিত হয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমার দেশের আদালত ওনার প্রতি কঠোর থেকে কঠোরতম হয়েছেন। বিধাতার কি খেলা, কারাগার যখন ড. ইউনুসকে গ্রহণ করতে প্রায় প্রস্তুত, সেই সময়ে পালাতে হলো শাসকগোষ্ঠীকে, ড.ইউনূসের জন্য খুলে গেল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দুয়ার।

অর্ধ শতাব্দীর ভয়াবহ উত্তরাধিকারের রাজনীতির দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসার স্বপ্নে বিভোর ভুক্তভোগী জনতা । সংস্কার শেষ না হওয়া অবধি, গণতন্ত্রের অপেক্ষায় ধৈর্যশীল হতে প্রস্তুত হচ্ছে দেশবাসী।

মুক্তচিন্তা, বাক স্বাধীনতা, সাম্যের  সমাজ, আইনের শাসনের স্বপ্ন নিয়ে যে দেশটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল, পঞ্চাশ বছরে শাসকগোষ্ঠী বাংলার মানুষের সেই স্বপ্নকে বারবার ভূলুণ্ঠিত  করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নোবেলজয়ী ইউনুসের  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

পর্দার অন্তরালে নানা কথা চালু থাকলেও, সাদা চোখে এটি কোন রাজনৈতিক শক্তির সরকার নয়। বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী এই আন্দোলনের সুফল পেলেও, দৃশ্যত তারা সরকারের অংশ নয়।

ড. শাহদীন মালিক এর ভাষায়, এ সরকারের আইনী কাঠামোগত সমস্যা আছে। আমি আইনের ছাত্র নই, তাই এ বিষয়ে মত প্রকাশের  কোন নৈতিক যোগ্যতা আমার নেই। যদি বিগত সরকারের বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্য, বিবৃতিকে আমলে নেই, তাহলে সাংবিধানিক ভাবে তত্তাবধায়ক সরকারের অস্তিত্ব নেই। আবার এটি সামরিক বা বিপ্লবী সরকারও নয়। তাহলে এ সরকারের নৈতিক ভিত্তি কি? তাঁদের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রই কোথায়?

এটি অনস্বীকার্য, কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট কোন দাবি দাওয়া বা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এ সরকার ক্ষমতায় আসেনি। অতীতের তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মতো শুধুমাত্র রুটিন কর্মকান্ড পরিচালনা করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার মধ্যেই তাঁদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। সদ্য বিদায়ী সরকার হাস্যকর গণতন্ত্র উপহার দিয়ে, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনগণের মন জয় করার চেষ্টা করেছিল। গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ অনুপস্থিতি, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের  ব্যাপক বিস্তার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় চরম ব্যর্থতা ও দলীয়করণে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী চরম ক্ষুব্ধ ছিল।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিষ্ঠুর দমন নীতি জনগণকে আরও বিক্ষুব্ধ করে তোলে। যার পরিণতিতে সৃষ্টি হয় গণঅভ্যুত্থান। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার, প্রশাসন যন্ত্র কে ব্যবহার করে ঠিকে থাকার শেষ চেষ্টা করলেও, গণঅভ্যুত্থানের অগ্নিশিখায় সবকিছু ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সরকারের সকল নীতি নির্ধারকরা গণঅভ্যুত্থানের মুখে নিজ জীবনকে নিরাপদ করতে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়। সাদা চোখে দৃশ্যমান এই গণঅভ্যুত্থানই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইনগত ভিত্তি।

এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়, দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নের পথকে রুদ্ধ করে একটি শুদ্ধাচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন বহুমুখী সংস্কার। অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা ,সামাজিক বিধি-বিধান, কর্ম সৃজন থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন সর্বক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক সংস্কার কর্মসূচি প্রয়োজন। প্রাধিকার ভিত্তিতে চ্যালেঞ্জিং এই সংস্কারের কর্মকাণ্ডগুলো সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি গণতন্ত্রের মুখ রক্ষায় আরেকটি সাধারণ নির্বাচন, নতুন একটি কায়েমী স্বার্থবাদী দানবীয় শক্তির উত্থান ঘটাবে, যা কোনভাবেই বৈষম্য থেকে মুক্তির পথকে উম্মুক্ত করবে না।

অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে জনগণ সময় দিতে প্রস্তুত। ক্ষমতা লিপ্সু  রাজনীতিকদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে, নোবেলজয়ী ডঃ মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জন প্রত্যাশা পূরণে কতটা সক্ষম হবেন, তার উপরই নির্ভর করবে ছাত্র জনতার ভাষায় ‘দ্বিতীয় বা নতুন স্বাধীনতা’র সাফল্য! ‘বিএনপি, আওয়ামীলীগ, হিন্দু, মুসলিম এসব কোন বিষয় নয়. মানুষ হিসাবে আমি আমার অধিকার চাই’- এই নীতিতে শক্ত মনোবল নিয়ে জনগণকে এগিয়ে যেতে প্রধান উপদেষ্টা আহবান জানিয়েছেন। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে অধিকার আদায়ের আহবানের সময় সরকার প্রধানকে ভীষণ প্রত্যয় দীপ্ত মনে হয়েছে। অধিকার  প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন সংস্কার, সংযম ও সংগ্রাম। দেখা যাক, একমাত্র বাংলাদেশি নোবেল জয়ীর নেতৃত্বে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রাম জাতিকে কোথায় নিয়ে যায়!!

লেখক: কলামিস্ট ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক

ই:মেইল: mahssan8691@gmail.com

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।
জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিকতায় যদি সফলতা চান, তাহলে দিন শেষে ভাবেন-সিনিয়র সাংবাদিক আলমগীর হোসেন

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : কোন পথে বাংলাদেশ? মো: মাহমুদ হাসান 

আপডেট সময় ১১:৩৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
স্বাধীনতার পর থেকেই একের পর এক স্বৈরাচার জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। রুপে লাবণ্যে একজনের চেয়ে অন্যজন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। আর এই দানবীয় রূপে, নিষ্পেষিত হয়েছে প্রতিটি শ্রেণী, পেশার মানুষ। মুক্তির কূলকিনারা মেলেনি।
রাজনীতি থেকে প্রকৃত রাজনীতিবিদরা নির্বাসিত হয়েছে। দুর্নীতি দুঃশাসনের সুবিধা নিয়ে লোভাতুর শ্রেণী, সমাজকে শাসন করেছে। দেশকে ভালোবাসেন, সততায় সমৃদ্ধ এমন মানুষগুলোকে ক্ষমতা বলয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
পারিবারিকীকরণের মহাপ্রলয়ে মেধাবী নেতৃত্বের বিকাশের পথকে রুদ্ধ করা হয়েছে। দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় ভয়ঙ্কর এক দানবীয় দুর্বৃত্ত শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছে, যারা অর্থ বিত্তের জুড়ে তৃণমূল থেকে জাতীয় সংসদ অবধি তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন সাধ ভূলুণ্ঠিত হয়েছে বারংবার।

১৬ই  ডিসেম্বর ১৯৭১, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও একদল পথ হারানো মানুষ বলছিল, ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট আমরা স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পেলাম। এর অব্যবহিত পরেই গণতন্ত্র গৃহবন্দী হলে, আরেক দল বলতে শুরু করে স্বাধীনতা নির্বাসিত হলো। একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ উম্মুক্ত করে স্বাধীনতার পুনর্জন্ম দেয়া হয়েছে। তারপর সুদীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শুরু করা আন্দোলন সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করলো। পদত্যাগে বাধ্য হল গণতন্ত্রের লেবাসধারী উর্দি পড়া শাসক। পনেরো দল, সাত দলীয় ঐক্যজোটের যৌথ ঘোষিত ইশতেহারের আলোকে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতির গতি প্রকৃতি নির্ধারিত হওয়ার ঘোষণা দেয়া হলো। রাজপথে উচ্ছ্বসিত জনতা স্বৈরাচারের পতন দিবস কে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলো। না, এই স্বাধীনতাও বেশি দিন ঠেকেনি! ৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি আবারো গণতন্ত্র গৃহবন্দী হলো। রক্ত ঝরিয়ে, লগি, বৈঠার আন্দোলন করে গণতন্ত্রকে শেকল মুক্ত করতে হলো।

২০০১ থেকে ২০০৫ সময় কালে নানা কলঙ্কে ছেয়ে গেলো দেশ। সরকারের পাশাপাশি হাওয়া ভবনে সমান্তরাল সরকার তৈরি হলো। বোমা বিস্ফোরণে সারা দেশের সব কটি জেলা এক যুগে প্রকম্পিত হয়ে উঠলো। গ্রেনেড হামলায় নিহত হতে হলো, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বরেণ্য  বাঙালি শাহ এএমএস কিবরিয়া।

দেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম বৃটেনের মতো একটি রাষ্ট্রের  কূটনীতিক কলঙ্কিত গ্রেনেডের লক্ষ্যবস্তু হলেন। একুশে আগস্ট রক্ত বন্যায় ভেসে গেল পল্টনের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। রচিত হলো জজ মিয়া কান্ডের মত ঘৃন্য ইতিহাস।

জনতার ভোটে ২০০৮ সালে ঈর্ষণীয় সাফল্য নিয়ে সরকারে গেলো আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সাল থেকে অদ্ভুত এক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া গ্রাস করলো বাংলাদেশকে।

২০১৮ সালে জনতাকে ঘুমে রেখেই সরকারে যায় আওয়ামীলীগ। যে গণতন্ত্রের জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন, স্বাধীনতার সেই প্রথম স্তম্ভটিকে কালো মেঘে আচ্ছাদিত করে দেয়া হলো। উন্নয়নের জয়গান দিয়ে গণতন্ত্রকে গৃহবন্দী করা হলো।

২০২৪ এর নির্বাচনটি তো বিস্ময় আর ম্যাজিকে ভরপুর। তবু্ও ছয়টি মাস মন্দ কাটেনি। দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের চিত্র সামনে আসতে শুরু করে। মনে হলো,শাসকরা বোধ হয় এবার ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবেন। সাবেক ক্ষমতাধর পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে অনেকের বিরুদ্ধে শুরু হলো সাড়াশি অভিযান।

 এরই মাঝে শুরু হয় কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দাবিটি যৌক্তিক ও ন্যায় সঙ্গত হলেও শাসক দল আওয়ামী লীগ, বরাবরের মতো পেশিশক্তি দিয়ে আন্দোলনটি দমানোর চেষ্টা করে। ওবায়দুল কাদেরের হুঙ্কারে ছাত্রলীগ বেপরোয়া নিপীড়নের পথ বেঁচে নেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে দেশের আমজনতা প্রত্যক্ষ করে লেজুড় ছাত্র সংগঠনটির ভয়াবহ নৃশংসতা।

একদিকে ছাত্ররা যখন ন্যায্য দাবিতে রাজপথে আন্দোলনরত, সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন ফেরত সাংবাদিক সম্মেলন, আগুনে ঘি ঢেলে দিল। ছাত্রলীগ আর শাসকদলের পেটোয়া প্রশাসনের কর্মকাণ্ড দেখে আমজনতা ফুঁসতে থাকে। একের পর এক লাশ দেখে, দেশবাসীর রক্ত টগবগ করতে লাগলো।

মাত্র তিন দিনে মৃত্যুর মিছিলটি অর্ধ শতাব্দীর নৃশংসতার  ইতিহাস কে পেছনে ফেলে দেয়। সুযোগ নিলো বিরোধীরা, শেখ হাসিনা বন্দুকের উপর ভর করেই বাঁচার চেষ্টা করলেন। সুদীর্ঘ সময়ের শাসন শোষণে অতিষ্ঠ জনতা রাজপথকেই বেছে নিলেন। মৃত্যুর মিছিল দেখে প্রবাসের দেশে দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীরাও প্রচন্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পর্দার অন্তরালের আন্তর্জাতিক মুরব্বিরাও প্রতিশোধ স্পৃহায় যুক্ত হলেন।

উপায়ান্তরহীন শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হলেন। দেশের ইতিহাসে সুদীর্ঘ সময়ের শাসক দল আওয়ামী লীগ আর সরকারের মন্ত্রী, এমপিরা জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে মরিয়া হয়ে পথের সন্ধানে ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠলেন!

৫ ই আগস্ট ২০২৪ থেকে ৮ ই আগস্ট ২০২৪। নানা নাটকীয়তার পর নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৫ ই আগস্টের অর্জনকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলো।

একাত্তরের পর বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের বিজয়কে ‘স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর ভাষায় এবারের অর্জন ‘নতুন স্বাধীনতা’। গত এক দশকেরও বেশি, বাংলার একমাত্র নোবেল জয়ী সংবর্ধিত হওয়ার পরিবর্তে নিষ্ঠুর ভাষায় জর্জরিত হয়েছেন। কখনো রক্তচোষা, কখনো বা দালাল এমন কত শত ভাষায় তিনি আক্রান্ত হয়েছে তার সীমা পরিসীমা নাই।

পাহাড় সম মামলা নিয়েও তাবৎ দুনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধানদের কাছে তিনি সংবর্ধিত হয়েছেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমার দেশের আদালত ওনার প্রতি কঠোর থেকে কঠোরতম হয়েছেন। বিধাতার কি খেলা, কারাগার যখন ড. ইউনুসকে গ্রহণ করতে প্রায় প্রস্তুত, সেই সময়ে পালাতে হলো শাসকগোষ্ঠীকে, ড.ইউনূসের জন্য খুলে গেল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার দুয়ার।

অর্ধ শতাব্দীর ভয়াবহ উত্তরাধিকারের রাজনীতির দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসার স্বপ্নে বিভোর ভুক্তভোগী জনতা । সংস্কার শেষ না হওয়া অবধি, গণতন্ত্রের অপেক্ষায় ধৈর্যশীল হতে প্রস্তুত হচ্ছে দেশবাসী।

মুক্তচিন্তা, বাক স্বাধীনতা, সাম্যের  সমাজ, আইনের শাসনের স্বপ্ন নিয়ে যে দেশটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল, পঞ্চাশ বছরে শাসকগোষ্ঠী বাংলার মানুষের সেই স্বপ্নকে বারবার ভূলুণ্ঠিত  করেছে। এমন পরিস্থিতিতে নোবেলজয়ী ইউনুসের  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

পর্দার অন্তরালে নানা কথা চালু থাকলেও, সাদা চোখে এটি কোন রাজনৈতিক শক্তির সরকার নয়। বৃহত্তম বিরোধী দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী এই আন্দোলনের সুফল পেলেও, দৃশ্যত তারা সরকারের অংশ নয়।

ড. শাহদীন মালিক এর ভাষায়, এ সরকারের আইনী কাঠামোগত সমস্যা আছে। আমি আইনের ছাত্র নই, তাই এ বিষয়ে মত প্রকাশের  কোন নৈতিক যোগ্যতা আমার নেই। যদি বিগত সরকারের বিভিন্ন সময়ে দেয়া বক্তব্য, বিবৃতিকে আমলে নেই, তাহলে সাংবিধানিক ভাবে তত্তাবধায়ক সরকারের অস্তিত্ব নেই। আবার এটি সামরিক বা বিপ্লবী সরকারও নয়। তাহলে এ সরকারের নৈতিক ভিত্তি কি? তাঁদের দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রই কোথায়?

এটি অনস্বীকার্য, কোন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট কোন দাবি দাওয়া বা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এ সরকার ক্ষমতায় আসেনি। অতীতের তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মতো শুধুমাত্র রুটিন কর্মকান্ড পরিচালনা করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার মধ্যেই তাঁদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। সদ্য বিদায়ী সরকার হাস্যকর গণতন্ত্র উপহার দিয়ে, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলের মতো বড় বড় মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনগণের মন জয় করার চেষ্টা করেছিল। গণতন্ত্রের সুদীর্ঘ অনুপস্থিতি, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের  ব্যাপক বিস্তার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় চরম ব্যর্থতা ও দলীয়করণে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী চরম ক্ষুব্ধ ছিল।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিষ্ঠুর দমন নীতি জনগণকে আরও বিক্ষুব্ধ করে তোলে। যার পরিণতিতে সৃষ্টি হয় গণঅভ্যুত্থান। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার, প্রশাসন যন্ত্র কে ব্যবহার করে ঠিকে থাকার শেষ চেষ্টা করলেও, গণঅভ্যুত্থানের অগ্নিশিখায় সবকিছু ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সরকারের সকল নীতি নির্ধারকরা গণঅভ্যুত্থানের মুখে নিজ জীবনকে নিরাপদ করতে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়। সাদা চোখে দৃশ্যমান এই গণঅভ্যুত্থানই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইনগত ভিত্তি।

এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়, দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নের পথকে রুদ্ধ করে একটি শুদ্ধাচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন বহুমুখী সংস্কার। অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা ,সামাজিক বিধি-বিধান, কর্ম সৃজন থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন সর্বক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক সংস্কার কর্মসূচি প্রয়োজন। প্রাধিকার ভিত্তিতে চ্যালেঞ্জিং এই সংস্কারের কর্মকাণ্ডগুলো সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি গণতন্ত্রের মুখ রক্ষায় আরেকটি সাধারণ নির্বাচন, নতুন একটি কায়েমী স্বার্থবাদী দানবীয় শক্তির উত্থান ঘটাবে, যা কোনভাবেই বৈষম্য থেকে মুক্তির পথকে উম্মুক্ত করবে না।

অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে জনগণ সময় দিতে প্রস্তুত। ক্ষমতা লিপ্সু  রাজনীতিকদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে, নোবেলজয়ী ডঃ মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জন প্রত্যাশা পূরণে কতটা সক্ষম হবেন, তার উপরই নির্ভর করবে ছাত্র জনতার ভাষায় ‘দ্বিতীয় বা নতুন স্বাধীনতা’র সাফল্য! ‘বিএনপি, আওয়ামীলীগ, হিন্দু, মুসলিম এসব কোন বিষয় নয়. মানুষ হিসাবে আমি আমার অধিকার চাই’- এই নীতিতে শক্ত মনোবল নিয়ে জনগণকে এগিয়ে যেতে প্রধান উপদেষ্টা আহবান জানিয়েছেন। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে অধিকার আদায়ের আহবানের সময় সরকার প্রধানকে ভীষণ প্রত্যয় দীপ্ত মনে হয়েছে। অধিকার  প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন সংস্কার, সংযম ও সংগ্রাম। দেখা যাক, একমাত্র বাংলাদেশি নোবেল জয়ীর নেতৃত্বে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রাম জাতিকে কোথায় নিয়ে যায়!!

লেখক: কলামিস্ট ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক

ই:মেইল: mahssan8691@gmail.com