হবিগঞ্জ ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি Logo চুনারুঘাটে প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামি আব্দুল হক কুটি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার Logo ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার সময়ে প্রতিটি খুন-গুমের বিচার বাংলার মাটিতে হবে-মামুনুল হক Logo দেশকে অস্থির করার জন্য স্বৈরাচারের দোসরা নানামুখী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, সৈয়দ মোঃ শাহজাহান Logo চুনারুঘাটে টিসিবির পন্য বিক্রি না করে মজুদ: ২ ডিলারের মালিক আটক Logo মাধবপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo চুনারুঘাটে পৃথক স্থান থেকে নারী সহ ৩ মরদেহ উদ্ধার Logo ফ্যাসিবাদ আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছে! মোহাম্মদ সুমন Logo চুনারুঘাটে বেপরোয়া মোটরসাইকেলের চালকের ধাক্কায় অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট গুরুত : আহত ঢাকায় সিএমএইচে ভর্তি Logo চুনারুঘাটে ৭ বছর পর প্রশসানের সহযোগিতায় সরকারি রাস্তা দখলমুক্ত

বড় ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করলেন আপন ছোট ভাই

বড় ভাই বাবার মতো। কোনো পরিবারে বাবা মারা গেলে সেই পরিবারের বড় ভাই ছোট ভাই-বোনের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে মাঝে মধ্যে ছোট ভাইটাও এমন কিছু দায়িত্ব পালন করে যেটা গল্প কিংবা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়।

এই যেমন, হবিগঞ্জের মাধবপুরের এক ছোট ভাই তার নিজের একটি কিডনি বড় ভাইকে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার আশা জাগালেন।কথায় আছে ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। সত্যিই তাই।

রক্তের বাঁধন এতটাই শক্তিশালী যে, নিজের জীবন দিয়ে হলেও রক্তের কাউকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে মানুষ হাজার বার চেষ্টা করে।

বড় ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার এমন বাস্তব প্রমাণ দিয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছোট ছেলে আতাউল ইসলাম পলাশ।

আপন বড় ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়েছেন তিনি।শনিবার (১২ আগষ্ট) সকালে ঢাকা বারডেম হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার শেষে তারা দুই ভাই বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের এমন ভালোবাসা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে,প্রশংসা কুড়িয়েছে।হবিগঞ্জ -৪(মাধবপুর -চুনারুঘাট)থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট দেওয়ান মারুফ সিদ্দিকী ফেইসবুকে লিখেন,যে দেশে এক ভাই আরেক ভাইয়ের সম্পত্তি মেরে দেয়,সম্পত্তির জন্য একে অপরকে খুন পর্যন্ত করে ফেলে,সে দেশে পলাশ ও সবুজ আমাদের জন্য অনেক বড় দৃষ্টান্ত,মানবিক ভাতৃদ্বয়ের জন্য দোয়া ও ভালোবাসা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। মানিক মিয়া চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদে দফাদার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,দুই বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান দফাদার মানিক মিয়ার বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম সবুজ। এর মধ্যে হঠাৎ সাইফুল ইসলাম সবুজের কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে।

পরে সাইফুল ইসলাম সবুজ সৌদি আরব থেকে চলে আসেন দেশে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর ডাক্তার জানান সাইফুল ইসলাম সবুজ এর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।এরপর থেকে ডায়ালাইসিস করেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

পরিবারের পক্ষে সাইফুল ইসলাম সবুজ এর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা মোটেও সম্ভব ছিল না। তাছাড়া কিডনিই বা পাওয়া যাবে কোথায়। এ নিয়ে ছিল ব্যাপক দুশ্চিন্তা।

চিকিৎসকরা তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা বলেন। এমন দুঃসংবাদে ভেঙ্গে পরে পরিবারটি।

সেই সময় সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলাম সবুজ এর আপন ছোট ভাই আতাউল ইসলাম পলাশ ভাইকে বাঁচাতে তার পাশে দাঁড়ান। স্বেচ্ছায় নিজের কিডনি বড় ভাইকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

আজ শনিবার পরিবারের সবার মতামতের ভিত্তিতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই দিন সকালে ৬টার দিকে তাদের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে দুই ভাই সুস্থ আছেন।

সাইফুল ইসলাম সবুজের পিতা মানিক মিয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং অপারেশনের পর দুই ভাই সুস্থ আছেন বলে জানান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চারিপাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

চুনারুঘাটে সাংবাদিক নোমান কে প্রাণনাশের হুমকি, থানায় জিডি

বড় ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করলেন আপন ছোট ভাই

আপডেট সময় ০৬:৪০:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩

বড় ভাই বাবার মতো। কোনো পরিবারে বাবা মারা গেলে সেই পরিবারের বড় ভাই ছোট ভাই-বোনের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে মাঝে মধ্যে ছোট ভাইটাও এমন কিছু দায়িত্ব পালন করে যেটা গল্প কিংবা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়।

এই যেমন, হবিগঞ্জের মাধবপুরের এক ছোট ভাই তার নিজের একটি কিডনি বড় ভাইকে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার আশা জাগালেন।কথায় আছে ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। সত্যিই তাই।

রক্তের বাঁধন এতটাই শক্তিশালী যে, নিজের জীবন দিয়ে হলেও রক্তের কাউকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে মানুষ হাজার বার চেষ্টা করে।

বড় ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার এমন বাস্তব প্রমাণ দিয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছোট ছেলে আতাউল ইসলাম পলাশ।

আপন বড় ভাইকে বাঁচাতে নিজের কিডনি দিয়েছেন তিনি।শনিবার (১২ আগষ্ট) সকালে ঢাকা বারডেম হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচার শেষে তারা দুই ভাই বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের এমন ভালোবাসা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে,প্রশংসা কুড়িয়েছে।হবিগঞ্জ -৪(মাধবপুর -চুনারুঘাট)থেকে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট দেওয়ান মারুফ সিদ্দিকী ফেইসবুকে লিখেন,যে দেশে এক ভাই আরেক ভাইয়ের সম্পত্তি মেরে দেয়,সম্পত্তির জন্য একে অপরকে খুন পর্যন্ত করে ফেলে,সে দেশে পলাশ ও সবুজ আমাদের জন্য অনেক বড় দৃষ্টান্ত,মানবিক ভাতৃদ্বয়ের জন্য দোয়া ও ভালোবাসা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামের মানিক মিয়ার তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। মানিক মিয়া চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদে দফাদার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,দুই বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান দফাদার মানিক মিয়ার বড় ছেলে সাইফুল ইসলাম সবুজ। এর মধ্যে হঠাৎ সাইফুল ইসলাম সবুজের কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে।

পরে সাইফুল ইসলাম সবুজ সৌদি আরব থেকে চলে আসেন দেশে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর ডাক্তার জানান সাইফুল ইসলাম সবুজ এর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।এরপর থেকে ডায়ালাইসিস করেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।

পরিবারের পক্ষে সাইফুল ইসলাম সবুজ এর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা মোটেও সম্ভব ছিল না। তাছাড়া কিডনিই বা পাওয়া যাবে কোথায়। এ নিয়ে ছিল ব্যাপক দুশ্চিন্তা।

চিকিৎসকরা তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা বলেন। এমন দুঃসংবাদে ভেঙ্গে পরে পরিবারটি।

সেই সময় সৌদি প্রবাসী সাইফুল ইসলাম সবুজ এর আপন ছোট ভাই আতাউল ইসলাম পলাশ ভাইকে বাঁচাতে তার পাশে দাঁড়ান। স্বেচ্ছায় নিজের কিডনি বড় ভাইকে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

আজ শনিবার পরিবারের সবার মতামতের ভিত্তিতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই দিন সকালে ৬টার দিকে তাদের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে দুই ভাই সুস্থ আছেন।

সাইফুল ইসলাম সবুজের পিতা মানিক মিয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং অপারেশনের পর দুই ভাই সুস্থ আছেন বলে জানান।