বাহুবল উপজেলা থেকে ট্রাকযুগে সরকারি প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার বই পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আব্দুল ওয়াহেদ এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বিভিন্ন অফিসসহ বাহুবলের সর্বাত্র আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।বিক্রিকৃত বইয়ের মধ্যে ২০২১ সালের বইও রয়েছে। গত ১০ই মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে একটি ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট-২৪-৩৮৩০) লোড করছিল বিভিন্ন সনের পুরাতন বই। বিষয়টি দেখে পথচারীরা বইগুলো লোড করতে বাধা দিলে ট্রাকের লোকজন থেমে যায়। সংবাদ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে অনুমোদনের কাগজ আছে। তবে তিনি তাৎক্ষণিক অনুমোদনের কাগজ দেখাতে পারেননি।
স্থানীয় ও গোপন সূত্রে জানা যায়,বাহুবল উপজেলা শিক্ষা অফিসার না থাকায় দীর্ঘদিন যাবত ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পাল করে আসছেন এটিও আব্দুল ওয়াহেদ। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বাহুবলে থাকার সুবাদে বিভিন্ন স্কুল ও শিক্ষা অফিসের বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়ম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। গত ১০ই মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে একটি ট্রাক বাহুবল সদর আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখতে পান পথচারী লোকজন,সন্ধ্যার পর এটিও আব্দুল ওয়াহেদ ঐ ট্রাকটিতে আদর্শ বিদ্যালয়ের গোডাউন থেকে একাধিক শ্রমিক দিয়ে সরকারী বই লোড করতে দেখেন পথচারীরা।মূহুর্তের মধ্যেই খবরটি স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে,এসময় উপস্থিত লোকজন ট্রাকটি আটক করলে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আব্দুল ওয়াহেদ এসে কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে বই বিক্রির অনুমোদন ও টেন্ডারের কাগজপত্র আছে বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা রিসোর্ট সেন্টারের কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষা অফিসার রিংকু দাস, আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কামাল মিয়া, পথচারী আশরাফ আলী ও আনোয়ার হোসেন। এমতাবস্থায় এটিও আব্দুল ওয়াহেদ অনুমোদন ও টেন্ডারের কাগজপত্র দেখানোর শর্তে স্থানীয় কিছু লোকজনের সাথে হাত মিলিয়ে ট্রাকটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান। কিন্তু আজ পর্যন্ত টেন্ডার ও অনুমোদনের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিস ও বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,(২০১৬) সালে বাহুবল উপজেলা শিক্ষা অফিসে এটিও হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল ওয়াহেদ। তিনি যোগদানের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সীমিত বই দিয়ে বাকীগুলো বই উনার হেফাজতে রেখে দেন। আর এসব বই তিনি প্রতি বছর কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময় বিক্রি করে দেন। বিভিন্ন স্কুলে আসবাবপত্র ক্রয়-বিক্রয় ও অনুদানেও ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
গত ১০ মার্চ এ ঘটনাটি কিছু পথচারী লোকজন তাদের ফেসবুকে পোস্ট ও লাইভ দেন। প্রথমে ঘটনাটি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের নজরে না আসলেও পরবর্তীতে অনেকের নজরে আসে বিষয়টি। এর পর থেকেই নড়েচড়ে বসেন সংবাদকর্মীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার ও এটিও আব্দুল ওয়াহেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান- বইগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। কে টেন্ডার পেয়েছে জানতে চাইলে পরে জানাবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে সরেজমিন উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান-এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেনি। আমি ঘটনাটি বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট ও লাইভে দেখেছি। এখন যেহেতু আপনারা বলছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- এব্যাপারে আমাকে কেউ অবগত করেননি।তাই বিষয়টি আমার জানা নেই।