চুনারুঘাট উপজেলার আহাম্মদাবাদ ইউনিয়নের গেরারুক গ্রামে দীর্ঘ ৭ বছর দখলে থাকা জনচলাচলের একটি সরকারি রাস্তা প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১২টায় উপজেলার গেরারুক গ্রামে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুর রহমান মাহবুব অভিযান চালিয়ে রাস্তাটি দখলমুক্ত করেন। মোবাইল কোর্ট অভিযানে চুনারুঘাট থানার পুলিশ ও সেনিবাহিনীর একটি টহল টীমের উপস্থিতিতে মামলাবাজ মিনারা খাতুনের কাছ থেকে রাস্তাটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৭ সালে গেরারুক গ্রামে মিনারা খাতুনের সাথে একই গ্রামের তাজুল ইসলামের জমিতে ছাগলে ধান খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে মিনারা গেরারুক গ্রামের ৪০০ পরিবারের চলাচলে একটি সরকারি রাস্তার মাঝখানে বেড়া দিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা সরকারি রাস্তা দখলের অভিযোগে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিরাজাম মুনিরার নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পান সরকারি রাস্তাটি বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে জনচলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মিনারা। এসময় ইউএনও সিরাজাম মুনিরা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মিনারা খাতুন (৪২) ও তার ভাই কাজলকে (৩৫) ১ মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জেল থেকে বের হয়ে মিনারা পূনরায় রাস্তায় বেড়া ও গাছের চারা লাগিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। কোনো ব্যক্তি ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়ত করলে তাকে গালাগালি করতেন মিনারা।
এছাড়াও গ্রামবাসী রাস্তা নিয়ে প্রতিবাদ করায় গ্রামের অনেককে আসামি করে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন মিনারা। দুটি মামলা ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে আর একটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলাবাজ মিনারা খাতুনের ভয়ে এলাকার মানুষ কিছু বলতে পারতো না। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে মামলার ভয় দেখাতেন তিনি। মামলার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পেতেন না।
এ বিষয়ে মিনারা খাতুন বলেন, রাস্তার মধ্যে আমার সম্পত্তি রয়েছে। তাই আমি আমার অংশে গাছের চারা রোপন করছি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুর রহমান মাহবুব বলেন, ‘আমরা গ্রামবাসীর পক্ষে সরকারি রাস্তা দখলের একটি অভিযোগ পাই। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সরাকরি রাস্তা দখল করে রাখা অবস্থায় পাই। পরে গ্রামবাসীর সহযোগিতা নিয়ে রাস্তাটি দখলমুক্ত করে জনচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।