হবিগঞ্জ ১১:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ঈদে অর্ধশতাধিক এতিমদের মুখে হাসি ফোটালেন ছাত্রদল নেতা আল সাইমুম আহাদ Logo চুনারুঘাটে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী পালন Logo মাধবপুরে ‎হাত ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে Logo মাধবপুরে বেড়েছে, মাদক ও ছিনতাইয়ের সন্ত্রাসে জনজীবন অতিষ্ঠ Logo টানা বৃষ্টিপাতে মাধবপুরে মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গা প্লাবিত Logo চুনারুঘাটে পানিতে ডুবে ভাইবোনের এক সাথে মৃত্যু Logo চুনারুঘাটে তহশিলদার মইনুল ইসলামে সততার ঈর্ষান্বিত হয়ে সংবাদ প্রকাশ Logo চুনারুঘাটে ফের ২২ বাংলাদেশীকে পুশইন করেছে বিএসএফ Logo মাধবপুরে ৪টি লাইসেন্স বিহীন করাতকল উচ্ছেদ অভিযান” Logo চুনারুঘাটের কালেঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের পুশ-ইন: নারী শিশুসহ ১৯ বাংলাদেশী

বাহুবলে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধে আটকে পড়া যাত্রীদের দুর্ভোগ

বাহুবল উপজেলায় দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে। আজ শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী এ অবরোধে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় প্রচন্ড গরমে যানবাহনে আটকে পড়া যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগ পোহান। উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরবর্তী বাগান বাড়ি নামক স্থানে এ অবরোধ অনুষ্ঠিত হয়।

চলমান আন্দোলনের ১২তম দিন শনিবার সকাল থেকে বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবন, মধুপুর, রশিদপুর, রামপুর, ফয়েজাবাদ, আমতলী, কামাইছড়া, বালুছড়া ও ছিতলাছড়া প্রভৃতি চা বাগানের শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলা সদর সংলগ্ন স্থানে অবস্থান নেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা একযোগে মহাসড়কে শুয়ে, বসে অবরোধ সৃষ্টি করে। এ সময় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা নিপেন চাষা, সুভাষ রবিদাস ও সামছুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে আমাদের যে দৈনিক মজুরি দেয়া হয়, তা দিয়ে আমরা দুই কেজি চাল কিনতে পারি না। আমাদের অন্যান্য বাজার-সওদাইয়ের জন্য চওড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। ঋণ নিতে নিতে আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে, এখন আর কেউ ঋণও দিচ্ছে না। তারা বলেন, ঋণ নির্ভর জীবন আমরা আর চাই না। আমাদের ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
অন্যথায় আমরা রাস্তা ছাড়বো না।

অবরোধ চলাকালে দুপুর ২টার দিকে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী শাহনেওয়াজ, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান, বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমা, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহিউদ্দিন, বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম খান, বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই প্রমুখ অবরোধ স্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন এবং মহাসড়ক থেকে তাদের বাহুবল উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে উপজেলা সভাকক্ষে আলোচনা চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ চা সংসদ ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা থেকে ১৮ টাকা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ মজুরি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালের ১৫ই অক্টোবরে হওয়া সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর ছিল। বর্তমানে মজুরি চুক্তির মেয়াদ ১৯ মাস উত্তীর্ণ হওয়ার পথে। এরপর মজুরি বৃদ্ধির নতুন চুক্তি আর হয়নি। মজুরি বাড়ানোর চুক্তি সই করতে চা শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও মালিক পক্ষ আলোচনায় আসেনি। নানা টালবাহানা করে বাড়ানো হয়নি মজুরি। এ অবস্থায় চা শ্রমিক ইউনিয়ন গত ৯ই আগস্ট থেকে ২ ঘন্টার কর্মবিরতি শুরু করে। তাদের দাবি না মানায় ১৩ই আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। তাদের ডাকে চলছে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে কর্মবিরতি।

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিপক্ষীয় সভায় মালিক পক্ষ ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এরপর সারা দেশের ৭টি ভ্যালিতে ৭টি আলাদা আলোচনা সভা হয়। কোনো সভায় এই প্রস্তাবের সম্মতি আসেনি। এরপর মালিকপক্ষের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়ে যায়।

গত ১৬ই আগস্ট শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে বৈঠকে বসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি আন্দোলন বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানালে শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

খন্দকার আলাউদ্দিন

হ্যালো, আমি খন্দকার আলাউদ্দিন, আপনাদের চার পাশের সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করুন।

ঈদে অর্ধশতাধিক এতিমদের মুখে হাসি ফোটালেন ছাত্রদল নেতা আল সাইমুম আহাদ

বাহুবলে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধে আটকে পড়া যাত্রীদের দুর্ভোগ

আপডেট সময় ১১:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

বাহুবল উপজেলায় দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে। আজ শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী এ অবরোধে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় প্রচন্ড গরমে যানবাহনে আটকে পড়া যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগ পোহান। উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরবর্তী বাগান বাড়ি নামক স্থানে এ অবরোধ অনুষ্ঠিত হয়।

চলমান আন্দোলনের ১২তম দিন শনিবার সকাল থেকে বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবন, মধুপুর, রশিদপুর, রামপুর, ফয়েজাবাদ, আমতলী, কামাইছড়া, বালুছড়া ও ছিতলাছড়া প্রভৃতি চা বাগানের শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলা সদর সংলগ্ন স্থানে অবস্থান নেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা একযোগে মহাসড়কে শুয়ে, বসে অবরোধ সৃষ্টি করে। এ সময় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা নিপেন চাষা, সুভাষ রবিদাস ও সামছুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে আমাদের যে দৈনিক মজুরি দেয়া হয়, তা দিয়ে আমরা দুই কেজি চাল কিনতে পারি না। আমাদের অন্যান্য বাজার-সওদাইয়ের জন্য চওড়া সুদে ঋণ নিতে হচ্ছে। ঋণ নিতে নিতে আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে, এখন আর কেউ ঋণও দিচ্ছে না। তারা বলেন, ঋণ নির্ভর জীবন আমরা আর চাই না। আমাদের ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
অন্যথায় আমরা রাস্তা ছাড়বো না।

অবরোধ চলাকালে দুপুর ২টার দিকে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী শাহনেওয়াজ, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান, বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া শারমিন ফাতেমা, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহিউদ্দিন, বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রকিবুল ইসলাম খান, বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ আব্দুল হাই প্রমুখ অবরোধ স্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দেন এবং মহাসড়ক থেকে তাদের বাহুবল উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে উপজেলা সভাকক্ষে আলোচনা চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ চা সংসদ ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা থেকে ১৮ টাকা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ মজুরি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০২০ সালের ১৫ই অক্টোবরে হওয়া সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর ছিল। বর্তমানে মজুরি চুক্তির মেয়াদ ১৯ মাস উত্তীর্ণ হওয়ার পথে। এরপর মজুরি বৃদ্ধির নতুন চুক্তি আর হয়নি। মজুরি বাড়ানোর চুক্তি সই করতে চা শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও মালিক পক্ষ আলোচনায় আসেনি। নানা টালবাহানা করে বাড়ানো হয়নি মজুরি। এ অবস্থায় চা শ্রমিক ইউনিয়ন গত ৯ই আগস্ট থেকে ২ ঘন্টার কর্মবিরতি শুরু করে। তাদের দাবি না মানায় ১৩ই আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। তাদের ডাকে চলছে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে কর্মবিরতি।

চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ চা সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিপক্ষীয় সভায় মালিক পক্ষ ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এরপর সারা দেশের ৭টি ভ্যালিতে ৭টি আলাদা আলোচনা সভা হয়। কোনো সভায় এই প্রস্তাবের সম্মতি আসেনি। এরপর মালিকপক্ষের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়ে যায়।

গত ১৬ই আগস্ট শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে বৈঠকে বসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি আন্দোলন বন্ধ করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানালে শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান।